English Version
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১১:০৫

কে সেই বাবা যে ৪৭২ কন্যার বিয়ে দিয়ে গর্বিত

অনলাইন ডেস্ক
কে সেই বাবা যে ৪৭২ কন্যার বিয়ে দিয়ে গর্বিত

ভারতের গুজরাটের ভাবনগর গ্রামের বাসিন্দা মহেশ শিভাঙ্গির। পেশায় হিরার ব্যবসায়ী তিনি। গত কয়েক বছরে ৪৭২ জন মেয়েকে বিয়ে দিয়ে রেকর্ড গড়েছেন তিনি।

প্রত্যেককেই রীতিমতো ঘটা করেই বিয়ে দিয়েছেন এই বাবা। সোনার গয়না ও নতুন সংসার বসানোর জন্য সব সরঞ্জামসহ ৪ লাখ টাকা করে প্রত্যেক কন্যার জন্য বিয়েতে খরচ করেন তিনি।

চলতি বছরেও ২১৬ জন কন্যাকে বিয়ে দেবেন বলে ঠিক করেছেন তিনি। গত কয়েক বছর ধরেই এ কাজ করছেন এই বাবা। তাতেই নাকি তার জীবনের সব সুখ।

পরিবারের পক্ষ থেকেও সহযোগিতা পেয়ে আসছেন তিনি। সেই উৎসাহে সমাজসেবামূলক এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগে বাবার হাত ধরে ভাবনগরে আসেন মহেশ। সেখানেই তাদের পৈতৃক ব্যবসা শুরু হয়। বাবার মৃত্যুর পর সেই কাজের দায়িত্ব বর্তায় তার ওপর।

ব্যবসার পাশাপাশি তিনি সিদ্ধান্ত নেন সমাজসেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করবেন। সেই চিন্তা থেকেই এ কাজ তার।

সিদ্ধান্ত নেন সমাজের সেই মেয়েদের বিয়ের দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নেবেন যারা ছেলেবেলায় বাবা-মাকে হারিয়েছেন। তবে তার এই কন্যাদানে নেই ধর্মের কোনো ভেদাভেদ।

৪৭ বছর বয়সী সাভানি তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর দুই ভাতিজির বিয়ে দিয়েছিলেন। সেটা ১০ বছর আগের কথা। ওই কন্যাদান করার পর তার কাছে মনে হয়েছিল, যেসব মেয়ের বাবা নেই তাদের দুরবস্থার কথা, বিশেষ করে বিয়ের সময়।

২০০৮ সাল থেকে শুরু হয়েছিল, এখনো চলছে তার বিয়ে দেয়া। তিনি বাবাহীন মেয়েদের বাবা হয়ে তাদের বিয়ে দেন এবং বিয়ে পরবর্তী জীবনেও তাদের খোঁজ-খবর রাখেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মহেশ বলেছেন, যে নারীর স্বামী মারা গেছে তার পক্ষে মেয়ে বিয়ে দেয়া এখনকার সমাজে একটা কঠিন কাজ।

২০১৬ সালেও মহেশ ২১৬ জন মেয়ের বিয়েতে বাবার ভূমিকায় সাহায্য করেছেন। অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, এ কাজে তিনি কখনোই ধর্মবর্ণকে প্রাধান্য দেননি।

হিনা ক্যাথিরিয়া নামের এক মেয়ে ৬ বছর আগে জন্মদাতা পিতাকে হারিয়েছিল, ২০১৫ সালে তাকে বিয়ে দেন মহেশ। হিনা বলেছেন, বাবাকে যে প্রয়োজনে চেয়েছি সাথে সাথে পেয়েছি।

নেহা বানু নামের এক মেয়ে মহেশের পিতৃসুলভ সাহায্যে ২০১৪ সালে আরিফ নামে এক ছেলেকে বিয়ে করেন। মহেশ সম্বন্ধে তিনি বলেছেন, তিনি আমার কাছে বাবার চেয়ে বেশি কিছু। আমি চাই পৃথিবীর সমস্ত মেয়ে এরকম একজন বাবা পাক।