ভাড়ায় মিলছে সুন্দরী সঙ্গী

টোকিও, ২৩ জুলাই- ‘প্রফেশনাল কাডলিং’ অর্থাৎ টাকার বিনিময়ে গ্রাহকের সঙ্গে ঘুমানো কথা শুনেছেন অনেকেই। তবে এবার জাপানের এক নাগরিক চালু করেছে টাকার বিনিময়ে সঙ্গ বা আড্ডা দেয়ার প্রতিষ্ঠান। একাকীত্ব গ্রাস করছে এমন অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী থেকে শুরু করে স্কুলছাত্রীরা পর্যন্ত আড্ডার জন্য সঙ্গী ভাড়া নিচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান থেকে। তাকানবু নিশিমতো(৪৮) নামের এক লোক ব্যতিক্রমী এই সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানটি চালু করেছে। বেশ কয়েকজন মধ্যবয়সী লোক এতে কাজ করছে। যে কেউ চাইলে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েব সাইটে নাম-ঠিকানা নিবন্ধন করে এই সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সী এসব লোকদের ভাড়া করতে খরচ হবে ঘন্টা প্রতি এক হাজার জাপানি ইয়েন বা ১০ ডলার। নিশিমোতো তার এই কাজ সম্পর্কে বলেন, ‘আমার কাছে এই সেবাটি একটি শখ।’ চার বছর আগে নিশিমতো প্রতিষ্ঠানটি চালু করেন। পুরো জাপানে এখন ৬০ জন লোক তার প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ করছে। নিশিমোতো বলেন, ‘এই ধারণা চালু করার প্রথম দিকে আমার বয়সী লোকদের কাছে ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করতে হয়েছে। যাতে মানুষ এই সেবায় আগ্রহ বোধ করে এবং গুরুত্বের সঙ্গে নেয়।’ এরপর ৪৮ বছর বয়সী পেশাদার ফ্যাশন কো-অর্ডিনেটর নিশিমতো নিজেও ভাড়ায় খাটছেন। প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ জন গ্রাহককে তিনি এই সেবা দিয়ে থাকেন। যাদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী। নিশিমতো আরও বলেন, ‘আমাকে যারা ভাড়া করেন তারা এক বা দুই ঘন্টা তাদের সঙ্গে থাকতে বলেন। বিশেষ করে তার কথা শোনার জন্য।’ ৮০ বছর বয়সী এক বয়স্ক নারী নিশিমতোকে প্রতি সপ্তাহে ভাড়া করেন কেবল তার সঙ্গে স্থানীয় পার্কে হাঁটার জন্য। ওই নারী তাকে নিজের ছেলের মতই ভাবেন। জেলে, কলেজছাত্রী, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশার লোক তাদের ভাড়া করে থাকে। জাপানে সামাজিক বিচ্ছিন্নতার সমস্যা রয়েছে। এই ধরনের প্রবণতাকে জাপানে বলা হয় ‘হিকিকোমোরি।’ এই সমস্যায় আক্রান্ত লোকজন, কিশোর-কিশোরী এবং তরুণ-তরুণীরা সমাজে তেমন মিশতে চায় না। তার পরিবর্তে ঘরে থাকা বা ভিডিও গেমস খেলতে তারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তবে যেসব লোকজন নিশিমতোর কাছে এই সেবা গ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে ‘সামাজিক বিচ্ছিন্নতা’ বা মানিয়ে নেয়ার সমস্যায় ভুগেন না।
সূত্র: এনডিটিভি।