দুই জন্মের মধ্যবর্তী আত্মাই ভূত
অনলাইন ডেস্ক

মৃত্যুর পরে মানুষ ফিরে আসে না। কিন্তু কারো ক্ষেত্রে বিদেহী আত্মা ভূতযোনি প্রাপ্ত হয়। ‘ভূত’ বলতে সেই অবস্থাকেই বোঝায়, যখন আত্মা এ পৃথিবীতেই ঘিরে থাকে।
হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, দুই জন্মের মধ্যবর্তী স্তরে আটকে থাকা আত্মাই ভূত। কিন্তু প্রশ্ন হল, ঠিক কখন আত্মা আটকে থাকে, কোন পরিস্থিতিতে। দেখা যাক হিন্দু ভাবনা কী বলে।
বহু আত্মা বিশ্বাসই করতে চায় না যে, মারা গেছে। সে কারণে সে পৃথিবী ছেড়ে যেতে চায় না। তার দেহ না থাকলেও দেহকে অনুভব করতে চায়। বহু আত্মা মৃত্যুর পরে তার মৃত্যুর স্থানটি ছাড়তে চায় না। বিশেষ করে যদি তার মৃত্যুটি আকস্মিক হয়, আত্মা বিশ্বাসই করতে চায় না সে মৃত। তার আপনজন কেউ সেই স্থানে এলে সে তার সঙ্গে যোগ স্থাপন করতে চায়।
সব থেকে বেশি মাত্রায় ভূতযোনি প্রাপ্ত হয় অতৃপ্ত আত্মারা। জীবিতাবস্থায় কোনও মনোবাসনা অপূর্ণ থাকলে আত্মা তাকে পূর্ণ করতে চায়। তাই তাকে থাকে যেতে হয় ভূতাবস্থায়। জীবিতাবস্থায় খুব বেশি ইহজাগতিক বিষয়ে লিপ্ত থাকেন যেসব ব্যক্তি, তাদের ভূতযোনি প্রাপ্তির সম্ভাবনা খুব বেশি।
জীবিতাবস্থায় যদি কোনো আরাধ্য কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায়, তা হলেও ভূতযোনি প্রাপ্তি ঘটে। মৃত্যু-পরবর্তী অভিজ্ঞতাগুলো সম্পর্কে যে আত্মারা ভীত থাকে, তারা ভূত হিসেবে অবস্থান করে। অনেক সময়েই অপরাধবোধ আত্মাকে আটকে রাখে।
অনেক মৃত আত্মাই মনে করে, জীবিতাবস্থায় প্রিয়জনের প্রতি কর্তব্য করা হয়নি। তারা যেমন সহজে ভূতযোনি ছাড়তে চায় না, তেমনই আত্মহত্যাকারী মানুষের আত্মা অনুতাপে ভোগে, পৃথিবী ছেড়ে যেতে চায় না।
আবার অনেক সময়ে প্রিয়জন প্রয়াতের আত্মাকে টেনে রাখে। মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে ঊর্ধ্বগতি পেতে বাধাপ্রাপ্ত হয় বিদহী আত্মা। জীবদ্দশায় যদি কোনো প্রতিশোধ না নেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে অনেক আত্মাই সেটি গ্রহণের জন্য ভূত হিসেবে অবস্থান করে।