English Version
আপডেট : ১৪ জুন, ২০১৬ ১২:৪৯

জরায়ু কাটতেই বেরোল বল

অনলাইন ডেস্ক
জরায়ু কাটতেই বেরোল বল

৭৬ বছরের বৃদ্ধ মায়ের অস্ত্রোপচার সময়ে জরায়ু কাটতেই বেরোল সাদা রঙের ক্রিকেট বল। এ বলটি পেয়ে রীতিমত অবাক চিকিৎসকরা। সাথে সাথে হতবাক হলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৃদ্ধার সন্তানও। তাঁর মার জরায়ু কেটে শেষ পর্যন্ত আস্ত একটা বল বেরোবে, তা কে জানত। তারা ব্যারাকপুর আনন্দপুরীর বাসিন্দা। খবর- আনন্দবাজার

রোববার (১২ জৃন) টিউমার ভেবে অস্ত্রোপচার করেন শল্যচিকিৎসক সঞ্জীব কর্মকার ও আশিস পাল। জরায়ু কাটতেই বেরোল সাদা রঙের ক্রিকেটের প্লাস্টিক বল। প্রথমে দু’জনেই হতভম্ব। নিশ্চিত হতে বার কয়েক অপারেশন থিয়েটারের মেঝেতেই ছুড়ে দেখেছেন।

কিন্তু জরায়ু আর যোনির মাঝে আস্ত বল কী করে সেঁধিয়ে গেল, অনেক বিশ্লেষণেও উদ্ধার করতে পারেননি তাঁরা। শেষমেশ পেটের সেলাই জুড়তে জুড়তে বৃদ্ধাকে প্রশ্ন করেন তাঁরা, ‘‘মা, এত বড় বল তো গিলে ফেলা সম্ভব নয়। লম্বাটে কিছু হলেও না হয় সম্ভব কিন্তু আড়াই ইঞ্চি ব্যাসের পুরু প্লাস্টিকের বল কী করে শরীরের মধ্যে ঢুকল?’’

শান্ত গলাতেই বৃদ্ধা জবাব দিয়েছেন, ‘‘জানি না।’’

বছর চারেক ধরেই বৃদ্ধ মায়ের মূত্রাশয়ে সমস্যা। কিছু দিন আগে সেখান থেকে রক্ত বেরোনোয় ভয় পেয়ে যান বৃদ্ধা। ব্যারাকপুর বি এন বসু মহকুমা হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সঞ্জীববাবুর কাছে মা-কে নিয়ে গিয়েছিলেন সন্তান। আল্ট্রাসনোগ্রাফি (ইউএসজি) করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসক। রিপোর্টে টিউমারের কথা বলা হয়।

সঞ্জীববাবুও বলেন, ‘‘পরীক্ষা করে দেখেছিলাম যৌনির শেষ প্রান্তে শক্ত কিছু রয়েছে। টিউমার ভেবেই ইউএসজি করার কথা বলেছিলাম। রিপোর্টেও টিউমারের উল্লেখ থাকায় অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিই। কারণ শরীরে বেশি দিন টিউমার থাকলে ক্যান্সারের আশঙ্কা। বৃদ্ধার উচ্চ রক্তচাপ থাকায় অস্ত্রোপচার নিয়েই সমস্যা হচ্ছিল।’’ এদিন ব্যারাকপুর-বারাসত রোডের এক নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচার হয়। বলটি বেরোতে দেখে সঙ্গে সঙ্গেই সন্তান ডেকে পাঠান চিকিৎসকেরা।

কী ভাবে এমন ঘটল? চিকিৎসকদের অভিমত, অন্তত বছর পনেরো-কুড়ি আগে যোনিপথেই প্রবেশ হয়েছিল বলটির। তা কী ভাবে সম্ভব হল, বলতে পারেন শুধু বৃদ্ধাই।

শল্যচিকিৎসক আশিসবাবুও বলেন, ‘‘যোনিপথে এমন ভাবে বলটি আটকে ছিল যে অস্ত্রোপচার ছাড়া বার করা অসম্ভব ছিল।’’ বৃদ্ধার মানসিক সুস্থতার উপরে নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন মনস্তত্ত্ববিদ প্রশান্ত রায়।

তিনি বলেন ‘‘অনেক সময়ে ডিমেনশিয়ার জেরে এ ধরনের আচরণ দেখা যায়। আবার বয়ঃসন্ধির ছেলেরাও অনেক সময়ে জোর করে বৃদ্ধাদের গোপনাঙ্গে বিভিন্ন খেলার সামগ্রী ঢোকানোর চেষ্টা করে। তবে ক্রিকেট বল ঢুকিয়ে ফেলার কথা আগে শুনিনি কখনও।’’

স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় বা জয়িতা রায়ের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘যোনিপথে শরীরে কোনও জিনিস প্রবেশ করানো নতুন ঘটনা নয়। যদিও আড়াই ইঞ্চির বল ঢোকাটা একটু অস্বাভাবিক।’’