খাবার ছাড়াই লাংফিশ বাঁচে ৫ বছর

খাবার ও পানি ছাড়াই দিব্যি ৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে মাছ। বিস্ময়কর এই মাছটির নাম আফ্রিকান লাংফিশ। বৈজ্ঞানিক নাম প্রোটোপটেরাস অ্যানেকটেনস।
অনেক সময়ই এই মাছ প্রাণে সজীবতা ও উচ্ছলতা স্থগিত করে দিতে পারে। তারা কোনো খাবার খায় না। পানিও লাগে না। ফলে দেহ থেকে কোনো বর্জ্য বের হয় না। তারা এক ধরনের অসাড় অবস্থায় প্রবেশ করে। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে মিলিয়ে জৈবিক প্রক্রিয়াকে ধীরগতির করে ফেলে।
প্রাণের প্রাণোচ্ছল অস্তিত্বকে এমন অসাড় করে দেওয়ার প্রক্রিয়াটির নাম 'সাসপেন্ডেন্ট অ্যামিনেশন'। কোনো প্রাণীর এ ক্ষমতার বিষয়টি বিজ্ঞানীদের কাছে বরাবরই বিস্ময়কর।
চিকিৎসাবিজ্ঞান থেকে শুরু করে মহাকাশ ভ্রমণের ক্ষেত্রেও বিষয়টি অনেক কাজে লাগতে পারে বলে মনে করেন তারা।
'সাসপেন্ডেন্ট অ্যামিনেশন' প্রক্রিয়াটি যদি মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়, তবে সার্জনরা দেহের জটিল অস্ত্রোপচারের সময় আরও অনেক সময় ব্যয় করতে পারবেন। রক্ত চলাচল বন্ধ করে দেওয়া যেত। একইভাবে দূর মহাকাশে আরও সহজে ভ্রমণ করার সক্ষমতা লাভ করতো মানুষ।
সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বায়োলজিক্যাল সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর এবং প্রধান গবেষক ইউয়েন নং এই মাছটির ওপর গবেষণা পরিচালিত করেন। সাসপেন্ডেন্ট অ্যানিমেশন অবস্থার ৬ মাস পর মিঠাপানিতে নিয়ে এ মাছের লিভারের জেনেটিক অবস্থা পরীক্ষা করা হয়।
টানা ছয় মাস পর অসাড় অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার পরদিনও পরীক্ষা করা হয়।
বিজ্ঞানী দেখেছেন, তাপমাত্রার খুব বেশি বৃদ্ধি বা হ্রাসে এ মাছের দেহের কোষের কার্যক্রমে পরিবর্তন আসে। এমন অনুর্বর ও চরমভাবপন্ন পরিবেশে আফ্রিকান লাংফিশগুলো অসাড় অবস্থায় চলে যায়।
এ পরিস্থিতিতে কিছুই না খেয়ে এবং বর্জ্যের উৎপাদন বন্ধ করে তারা দিব্যি বহুকাল টিকে থাকতে পারে। এই নির্দিষ্ট সময়ে প্রাণশক্তি জমিয়ে রাখার বিষয়টিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আবার এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার পর পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার জৈবিক প্রক্রিয়াটিও বিস্ময়কর। সূত্র : ফিউচারিটি