কয়েদির অভাবে কারাগার বন্ধ!!

এই শিরোনাম যেন আমাদের মত অপরাধপ্রবণ দেশে স্বপ্নের মত। বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। তবে পাঠকদের আস্বস্ত করছি যে এটা আমাদের দেশের ঘটনা নয়। ঘটনা সুইডেনের। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
বেশ কয়েক বছর ধরেই সুইডেনের কারাগারে কয়েদির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বাড়তি কারাগার রাখার প্রয়োজন মনে করছে না দেশটির সরকার। তাই ইতোমধ্যেই বেশ কিছু কারগার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
২০০৪ সালে সারা সুইডেনে কয়েদির সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৭২২ জন। ২০১৫ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৮৫২ জনে। দীর্ঘ মেয়াদের অপরাধী নেই বললেই চলে। তাই কারাগারও অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। কারাগারে কয়েদি কমার বিষয়ে স্টকহোম ইউনিভার্সিটির অপরাধ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ভন হোপার বলেন, প্রথমবার চুরি, মাদক গ্রহণ কিংবা সহিংসতার মত ছোটখাটো অপরাধের লঘু শাস্তির দেয়ার সরকারী নীতি কয়েদি সংখ্যা কমার একটি বড় কারন। ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সুইডেন যত অপরাধীর সংখ্যা কমেছে তার মধ্যে চুরির দায়ে ৩৬ শতাংশ, মাদকসংক্রান্ত অপরাধে ২৫ শতাংশ এবং সহিংসতা বিষয়কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত ১২ শতাংশ। আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে কারাপ্রধান ওবার্গ জানান।
ওবার্গ আরও বলেন, আমরা নিশ্চিতভাবেই মনে করি কয়েদিদের পুনর্বাসন ও তাদের অপরাধে পুনরায় লিপ্ত হওয়া প্রতিরোধে আমরা যে ব্যাবস্থা নিয়েছি এটি তারই সফলতা। যদিও ভবিষ্যতে কোন ঘটনায় যদি কয়েদীর সংখ্যা বেড়ে যায় তাই দুটি কারাগার হাতে রাখা হয়েছে। বাকিগুলো বিভিন্ন মিউজিয়াম কিংবা সরকারী-বেসরকারী দপ্তর হিসেবে ব্যাবহৃত হবে।
পাঠকের নিশ্চয়ই আফসোস হচ্ছে। এই ঘটনা আমাদের দেশে ঘটলে কতই না ভাল হতো। কেউ অপরাধ করত না, কেউ জঙ্গী হয়ে বোমা মারত না, কেউ রগ কাটত না, কুপিয়ে মারত না, কোন নারী ধর্ষণের শিকার হতো না, সরকারি অফিসে ঘুষ বিনিময় হতো না, সন্ধ্যার পর কিংবা দিনে-দুপুরে ছিনতাই হতো না, এসিড সন্ত্রাস হতো না, যৌতুকের দায়ে বধূ হত্যা হতো না, অপহরণ হতো না, শিশুদের নির্মমভাবে নির্যাতন ও হত্যার মত ঘটনা ঘটত না, চাকরি ঘুষ ছাড়াই হতো, ধর্মের নাম মানুষ খুন হতো না......। কিন্তু এসবই আমাদের দেশে নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা। তাই আফসোস ছাড়া আর উপায় কি?