English Version
আপডেট : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১৮:৫১

দেশের প্রথম লিফটযুক্ত বিলাসবহুল লঞ্চ; চলবে ঢাকা-বরিশাল রুটে

নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের প্রথম লিফটযুক্ত বিলাসবহুল লঞ্চ; চলবে ঢাকা-বরিশাল রুটে
ছবিটি Sunderban nevigation company.barisal এর ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া

 

দেশে প্রথম বারের মত লিফট যুক্ত অত্যাধুনিক বিলাস বহুল লঞ্চ যাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। লঞ্চটিতে লিফট ছাড়াও প্লে-গ্রাউন্ড, ফুড কোর্ট এরিয়া ও চিকিৎসা সুবিধার পাশপাশি ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহারকারীদের জন্য ওয়াইফাই সুবিধা থাকছে। সুন্দরবন-১০ নামের এই লঞ্চটি ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচল করবে।  সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানি সুন্দরবন-১০ নামের এই জাহাজটি আগামী দু’মাসের মধ্যে যাত্রী পরিবহনে যুক্ত করতে যাচ্ছে। নগরীর বেলতলা ফেরীঘাটে নিজস্ব ডকইয়ার্ডে এ জাহাজটির নির্মাণ কাজ শেষে ভাসানো হয়েছে কীর্তনখোলা নদীতে। শুধু অত্যাধুনিক সুবিধা আর বিলাস বহুল যাত্রী সেবা নয়, এটি হতে যাচ্ছে দেশের সর্ব বৃহৎ যাত্রীবাহি নৌ-যান। ইতোমধ্যেই দশনার্থীদের কাছে ‘ বাংলার টাইটানিক’ হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে ।

লঞ্চ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, একজন  বিশেষজ্ঞ নৌ স্থপতির নকশায় সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের প্যানেল নেভাল আর্কিটেডদের  নিবিড় তত্ত্বাবধানে গত দু’বছর ধরে লঞ্চটির নির্মান কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।  ৩৩২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫৫ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট লঞ্চটি হতে যাচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ যাত্রীবাহী নৌযান। প্রায় দেড় হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম জাহাজটিতে ১৫টি ভিআইপি কেবিন ও দু’শতাধিক প্রথম শ্রেণীর কেবিন ছাড়াও ৪০টি সোফা (বিলাস) রয়েছে। যাত্রীর পাশাপাশি দু’শ টন পণ্য পরিবহনে সক্ষম জাহাজটি।  জার্মানীর তৈরী  ২ হাজার ৭৫০ অশ্ব শক্তির ২টি মূল ইঞ্জিন ছাড়াও  পর্যাপ্ত আলো ও বাতাস নিশ্চিতকরণে ৩টি জেনারেটর যুক্ত করা হয়েছে।  আরো একটি স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর জরুরী প্রয়োজনের জন্য সংযোজন করা হয়েছে। নৌযানটির যাত্রী নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। লঞ্চটির মালিক সুন্দরবন নেভিগেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদুর রহমান রিন্টু জানান- সুন্দরবন-১০ লঞ্চ এর হুইল হাউজে (চালকের কক্ষ) সম্পূর্ণ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর যন্ত্রাংশ সংযোজন করা হয়েছে। এর রাডার সুকান ‘ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক’ ও ম্যানুয়াল দ্বৈত পদ্ধতির।

নৌযানটিতে আধুনিক রাডার ছাড়াও জিপিএস পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে লঞ্চটি চলাচলের সময় নৌ-পথের ১ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে গভীরতা ও আশপাশে অন্য যে কোনো নৌযানের উপস্থিতি চিহ্নিত করতে পারবে। এমনকি ঘন কুয়াশার মধ্যেও নৌযানটি নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে । কুয়াশা ভেদ করে আলো যেতে সক্ষম ফর্গ লাইট যুক্ত করা হয়েছে লঞ্চটিতে।

দক্ষ মাস্টার , সুকানী ও ইঞ্জিন চালক (ড্রাইভার) ছাড়াও মোট ৪০ জন বিভিন্ন শ্রেণীর ক্রু থাকছে। সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, সমুদ্রগামী বড় জাহাজের আদলে তৈরি হয়েছে সুন্দরবন-১০। তার ভাষায় এটি একটি পরিপূর্র্ণ জাহাজ।   জাহাজটি তৈরির সময়ই যাত্রী নিরাপত্তা ও আরামদায়ক ভ্রমণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।  প্রথম শ্রেণীর কেবিনগুলো বিলাসবহুল তিন তারকা আবাসিক হোটেলের আদলে বানানো হয়েছে । ব্যয়বহুল ও দৃষ্টিনন্দন আসবাবপত্রে সাজানো হয়েছে কেবিনের প্রতিটি  কক্ষ। কেবিনের সঙ্গে যাতায়াতের জন্য রয়েছে সুবিশাল বারান্দা। লিফট যুক্ত করার ব্যাপারে লঞ্চ মালিক জানান- প্রায় চারতলা বিশিষ্ট লঞ্চটিতে মূলত প্রতিবন্ধী ও রোগীদের যাতায়াতের সুবিধার কথা চিন্তা করেই লিফট যুক্ত করা হয়েছে। তাদের পুরানো লঞ্চ ব্যবসার ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমম্বয়ে নির্মাণ করা বিলাস বহুল লঞ্চটি আকার, নকশা ও নান্দনিকতার বিবেচনায় যাত্রীদের ভ্রমণে সবচেয়ে নিরাপদ ও আরামদায়ক হবে বলে তারা মনে করছেন। অভ্যন্তরীন সৌন্দর্য্য সংযোজনের বাকী কিছু কাজ ভাসমান অবস্থায় করা হবে।