শুধু মশা নয়, যৌন সংসর্গেও ছড়াচ্ছে জিকা ভাইরাস

জিকা ভাইরাস নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পৃথিবী জুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণার একদিনের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো মশার কামড়ের বাইরেও এক ব্যক্তির জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ওই ব্যক্তির দেহে এ ভাইরাস শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে ছড়িয়েছে বলে ধারণা করছে দেশটির সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি)। যা এ ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে খুবই বিরল।
সংস্থাটি বিবিসিকে জানায়, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাসের অধিবাসী ওই ব্যক্তি জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আছে এমন কোনো দেশে না গেলেও, তার সঙ্গী কিছুদিন আগে ভেনিজুয়েলা থেকে ফিরেছেন। সঙ্গীর কাছ থেকেই দৈহিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে তিনিও জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়াও প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়াতেও জিকা সংক্রমণের দু’টি ঘটনা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ। ওই দুই ব্যক্তি সম্প্রতি ক্যারিবিয়ান এলাকা থেকে ফিরেছেন।
জিকা ভাইরাস মূলত ছড়ায় এডিস মশার কামড়ে (বৈজ্ঞানিক নাম এডিস এজিপটি)। কিন্তু অল্প কিছু ক্ষেত্রে যৌনবাহিত রোগের মতোই আক্রান্ত একজনের শরীর থেকে সুস্থ সঙ্গীর শরীরে ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।
ব্রাজিলসহ ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে জিকা ভাইরাসের মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর দক্ষিণ আমেরিকাতেও ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবে অপরিণত মস্তিষ্ক এবং ছোট আকৃতির মাথা নিয়ে শিশু জন্ম নেয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা সনাক্ত হয়।
এতে গত ১ ফেব্রুয়ারি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জরুরি বৈঠকের পর বিশ্ব জুড়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)। এই ভাইরাসের মোকাবেলায় যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন বলে উল্লেখ করে সংস্থাটি।
ভাইরাসটি ভয়ঙ্কর পরিণতি নিয়ে বিস্তৃত আকারে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞরা।
গর্ভবতী মায়েদের দেহে এর সংক্রমণের ফলে হাজারো শিশু জন্মগতভাবে মাইক্রোসেফালি রোগে আক্রান্ত হয়ে অবিকশিত মস্তিষ্ক নিয়ে জন্ম নেয়।
জিকার জন্য ডাব্লিউএইচও’র জারিকৃত সতর্কতা ইবোলার মতোই একই পর্যায়ের। এর মানে জিকা ভাইরাসে সৃষ্ট সংক্রমণ প্রতিরোধে দ্রুততার সঙ্গে গবেষণা এবং সাহায্যমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।