English Version
আপডেট : ১৪ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৩:১১

হিমায়িত ডিম্বানুর সাহায্যে মা হলেন সাবেক বিশ্বসুন্দরী

অনলাইন ডেস্ক
হিমায়িত ডিম্বানুর সাহায্যে মা হলেন সাবেক বিশ্বসুন্দরী

আট বছর আগে ডিম্বাণু হিমায়িত করে রেখেছিলেন। সেই ডিম্বাণু কাজে লাগিয়েই ৪২ বছর বয়সে শিশুকন্যার জন্ম দিয়েছেন তিনি। যার সম্পর্কে বলা হচ্চে তিনি হলেন ভারতের সাবেক বিশ্বসুন্দরী ডায়না হেডেন। গত শনিবার মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে তিনি একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। সন্তান জন্মের পর ডায়না বলছেন, ‘বিয়ে করে মা হওয়ার আগে ভালবাসার মানুষের খোঁজ পেতে চেয়েছিলাম। সঙ্গে ছিল কেরিয়ারের চিন্তাও। তাই সেই সময়ে ডিম্বাণু সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।

বেশি বয়সে মা হতে গেলে শারীরিক সমস্যার সম্ভাবনা থাকে। সে কারণে অনেক কর্মরত মেয়েকেই তাড়াতাড়ি বিয়ে এবং মা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কিন্তু পেশাগত কারণে আগে বিয়ে করতে চাননি ডায়না। তবে সন্তানধারণে যাতে ভবিষ্যতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেকথা ভেবেই ২০০৭ সাল থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে ডায়না নিজের ১৬টি ডিম্বাণু হিমায়িত করে রেখেছিলেন। দু’বছর আগে আমেরিকার বাসিন্দা কলিন ডিককে বিয়ে করার পর ডায়না জানতে পারেন, তাঁর জরায়ুতে সমস্যা রয়েছে। ফলে পুরনো ডিম্বাণু ব্যবহার করেই অবশেষে মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করেন ডায়না। উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে বিশ্বসুন্দরীর খেতাব অর্জন করেন ডায়না।

ডায়নার চিকিৎসক নন্দিতা পালশেটকার এবং হৃষিকেশ পাইয়ের মতে, শারীরিক অসুবিধার কারণে অনেকেই হয়তো অল্পবয়সে ডিম্বাণু সংরক্ষণ করেন। কিন্তু শুধু নিজের ক্যারিয়ারের জন্য ডায়নাই প্রথম নিজে ডিম্বাণু হিমায়িত করেন। ভারতে প্রায় ১০ বছর আগে হিমায়িত ডিম্বাণু থেকে সন্তানধারণের বিশেষ পদ্ধতির শুরু হয়েছিল। এই পদ্ধতিতে দুই থেকে চার সপ্তাহ ধরে হরমোন প্রয়োগ করে ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হয়। তারপর তা মাইনাস ১৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষিত করা হয়।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বিভাগের অধ্যাপক তথা চিকিৎসক তপন নস্কর বলেন, এই পদ্ধতি সম্পূর্ণ নিরাপদ। ভারতে এখন অনেক তরুণী কিংবা মহিলারা নিজেদের ডিম্বাণু সংরক্ষণ করে রাখছেন। তিনি বলছেন, সাধারণত জরায়ুর অসুস্থতা কিংবা ক্যন্সারে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে কেমোথেরাপী দেয়ার আগে ডিম্বাণু সংরক্ষিত করে রাখা হয়। গুণগত মান বজায় রাখার জন্যেও কেউ কেউ কমবয়সে ডিম্বাণু হিমায়িত করে রেখে দিতে পারেন। এছাড়াও বেশী বয়সের নতুন ডিম্বাণুর তুলনায় বেশ কয়েক বছরের পুরনো  হিমায়িত ডিম্বাণু নিষিক্ত করলে গর্ভবতী হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

তবে এই পদ্ধতি কেবলমাত্র বিশেষ ক্ষেত্রেই নেয়া উচিৎ। কারন বেশী বয়সে মা হবার সমস্যা অনেক। ডিম্বানু সংরক্ষণের খরচও অনেক বেশি। এই পদ্ধতিতে যে সবসময় সাফল্য আসবে এমনটা কিন্তু নয়।