আদিপুরুষের সাথে যৌনমিলনেই ‘এলার্জি’র সৃষ্টি!

এলার্জির সমস্যা অনেকেরই আছে। কারও খাবারে, কারও ধুলোবালিতে আবার কারও ফুলের রেণুর সংস্পর্শে আসলেই শরীরে অস্বস্তির সৃষ্টি হয়। শরীর ফুলে যায়। যাদের আছে তারা বোঝেন এটা কি পরিমাণ ঝামেলাপূর্ণ রোগ। কিন্তু এই এলার্জির উৎপত্তি কোথায়? গবেষকরা তো বলছেন এলার্জির আবির্ভাবের জন্য দায়ী আমাদের আদিপুরুষরা। আদিপুরুষদের সাথে আধুনিক মানুষের যৌনসঙ্গমের ফলেই এলার্জির সৃষ্টি!
অনেক আগেই নৃতাত্বিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে পৃথিবীর বুকে হোমোস্যাপিয়েনস অর্থাৎ আধুনিক মানুষের আগমনের কয়েকশ হাজার বছর আগে থেকে ইউরোপ ও পশ্চিম এশিয়ায় নিয়ানডার্থাল ও ডেনিসোভান প্রজাতির বাস ছিল। ওই বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যে সমস্ত জীবানুর অস্তিত্ব ছিল তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অর্জন করেছিল প্রস্তরযুগের আদিমানব প্রজাতিগুলি। তাদের সাথে শারীরিক মিলনের ফলে হোমোস্যাপিয়েনসদের দেহেও ঐসব জীবানুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠে।
আমেরিকান জার্নাল অব হিউম্যান জেনেটিক্স –এ প্রকাশিত গবেষণাপত্র থেকে জানা যায়, প্রস্তরযুগের আদিম নিয়ানডার্থাল ও ডেনিসোভান প্রজাতির মানুষের সাথে আধুনিক মানুষ অর্থাৎ হোমোস্যাপিয়ানস প্রজাতির যৌনমিলন ঘটে। সৃষ্টির আদিযুগে আফ্রিকা মহাদেশ থেকে হোমোস্যাপিয়ানসরা ছড়িয়ে পড়ার পর এশিয়া, ইউরোপে বসবাসকারী নিয়ানডার্থালসহ একাধিক আদিম মানব প্রজাতির সাথে যৌনমিলন ঘটে। এর ফলে সংকর প্রজাতির মানুষের দেহে এমন এক ধরনের জিন প্রবেশ করে যা থেকে পরবর্তীকালে এলার্জির সৃষ্টি হয়।
জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর ইভোলিউশনারি এ্যানথ্রোপলজি-র গবেষকরা ১০০০ জেনোমস প্রজেক্ট থেকে সংগ্রহ করা ডিএনএ পরীক্ষা করে আধুনিক মানবদেহে এমন তিনটি জিনের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন যা ওখনও শরীরের স্বাভাবিক প্রকৃয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। বিভিন্ন স্থানে বসবাস করতে গিয়ে অজানা রোগের হাত থেকে এই তিনটি জিনই হোমোস্যাপিয়ানসদের রক্ষা করেছে। এই জ্বিনগুলিই আবার মানবদেহে এলার্জি সৃষ্টির জন্য দায়ী। ফুলের রেণু, খাবার, কোন পশুর রোম ইত্যাদির সংস্পর্শে এলে এই জিনগুলি সক্রিয় হয়ে উঠে। শরীরে অস্বস্তির সৃষ্টি করে। যাকে আমরা এলার্জি বলে থাকি।