English Version
আপডেট : ১০ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৬:৪০

‘ডিজিজ অব ভার্জিন’ যার একমাত্র ওষুধ সেক্স!

অনলাইন ডেস্ক
‘ডিজিজ অব ভার্জিন’ যার একমাত্র ওষুধ সেক্স!

মেয়েদের কুমারীত্বের বিষয়টা যতটা না শারীরিক তার চাইতে বেশী মানসিক। এর মধ্যে হারানো কিংবা পাওয়ার মত কোন বিষয় নেই। খেলাধুলা, লাফালাফি, সাইকেল চালানোসহ যে কোন কারনে হাইমেন বিদীর্ন হতে পারে। এর জন্য যে সঙ্গম করতেই হবে এরকম ধরাবাঁধা কোন নিয়ম নেই। একজন নারী ভাল না খারাপ সেটা তার  তথাকথিত‘কুমারীত্ব’ দিয়ে বিচার করাটা মূর্খামি। এজন্যই মূর্খামি কারন আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের কল্যাণে সার্জারির মাধ্যমে আজকাল হাইমেন প্রতিস্থাপন করা হয়। তাহলে বুঝতে পারছেন তো কেন আপনি মূর্খ?

মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে এখনও বাসর রাতে হাইমেন বিদীর্ণ হওয়াটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেক দেশে রক্তাক্ত বিছানার চাদর সকলের সামনে উপস্থাপন করার রীতিও আছে। নিজেকে ‘কুমারী’ প্রমাণ করতে না পারলে নববধুকে হত্যা করার মত নৃশংস ঘটনাও ঘটেছে।  ইউরোপের ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালেও দেখা যায় চৌদ্দ শতকের একজন লেখক “হাইমেন : দি গার্ডিয়ান অব ভার্জিনিটি” নামক একটা বইয়ের উপর মন্তব্য করেছিলেন হাইমেনই কি নারীর সতীত্বের একমাত্র প্রমাণ? তিনি বলেছেন কুমারীত্ব হাইমেনের চাইতেও বেশী কিছু। সততা তখনই সম্ভব যখন তা দেহে নয়, মনে অবস্থান করে। ষোল এবং সতের শতকের দিকে ‘কুমারীত্ব’ বিষয়টি ইউরোপে ব্যাপক মহামারী আকার ধারণ করে। ১৬৭১ সালে জেন নামক একজন ধাত্রী একটা বইতে লিখেন’ রক্তপাতই হল কুমারীত্বের সন্দেহাতীত প্রমাণ। কিন্তু ইউরোপ ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে সেই ধারণা থেকে। আধুনিক বিজ্ঞান তাদের মনন, মানসিকতা, মধ্যযুগীয় চিন্তাকে বদলে দেয়। আধুনিক কালের ইউরোপীয় লেখকরা তাই কুমারীত্বকে একটি মানসিক ব্যাধি হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

অনেক বছর আগে ইউরোপে কুমারী মেয়েদের স্বাস্থ্য নিয়ে এমন কিছু চিন্তাধারা প্রকাশিত হয়েছিল যা নি:সন্দেহে চমকপ্রদ। ষোল শতকের দিকেই প্রথম ‘দি ডিজিজ অব ভার্জিন’ বা ‘কুমারীদের রোগ’ বিষয়টি আলোচনায় আসে। যৌন সঙ্গম করেননি এমন রজ:স্বলা কুমারী মেয়েদের বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। যেমন অকারণ ভীতি, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, অদ্ভূত খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি। এর কারন হিসেবে বলা হয় দেহের সঞ্চিত রক্ত বাইরে বের হতে না পারা। আর প্রতিকার হিসেবে পরামর্শ দেয়া হয় যৌনসঙ্গম করার জন্য। যৌনসঙ্গমে হাইমেন বিদীর্ণ হয়ে সেই সঞ্চিত রক্ত বাইরে আসে এবং নারী রোগ থেকে মুক্তি পায়। এটাই আশ্চর্যজনক ছিল যে হাইমেন জিনিসটা একটা রোগও ধারণ করে যাকে বলা হয় “ভার্জিনিটি ডিজিজ”! সঙ্গমই হলো যার চিকিৎসা! বিষয়টা এখন পর্যন্ত হাস্যকর মনে হলেও এ বিষয়ে পরবর্তী চিন্তাধারায় বৈজ্ঞানিক ভিত্তি থাকায় এটাকে আর হাস্যকর বলা যায় না। এর পরের চিন্তাগুলোও কিন্ত ষোল শতকের অনেকটা কাছাকাছিই ছিল। উনিশ শতকের দিকে বলা হতো নারী যৌনাঙ্গে সারা দেহ থেকে রক্ত সরবরাহ করে সেটা গর্ভে সঞ্চালিত করে। সাধারণ মানুষ তখন এই ‘ডিজিজ অব ভার্জিন’ নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করতো।

আর আধুনিক বিজ্ঞান বলে, যদি আপনার “ডিজিজ অব ভার্জিন” হয়ে থাকে তবে আপনার ত্বক নি:সন্দেহে আকর্ষণীয়তা হারাবে, এমনকি কালসিটে পড়ে যেতে পারে। যৌনসঙ্গমে ত্বকের সেই হারানো জেল্লা ফিরে আসে। এছাড়া কোনভাবেই এর পুরোপুরি নির্মূল সম্ভব নয়। যৌনসঙ্গম না করলে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয়। মেয়েলী দৈহিক ব্যাপারগুলি অনিয়মিত এবং অদ্ভূত আচরণ করে। এজন্যই হয়তো এই রোগকে ‘গ্রীণ সিকনেস’ বলা হয়। অন্য দিক দিয়ে বলা যেতে পারে, যেসব নারী সাধারণত যৌনসঙ্গম করেননি তারা সবাই কমবয়সী অর্থ্যাৎ ‘গ্রীন’। আর নিন্দুকদের ভাষায়, যাদের কোন যৌন অভিজ্ঞতা নেই, অর্থ্যাৎ হাইমেন বিদীর্ণ হয়নি তাদের ‘গ্রীন’ বলে বোঝানো হয়। এজন্য চিকিৎসকরা মেয়েদের রজস্বলা হবার পরপরই যৌন অভিজ্ঞতা অর্জনের কথা বলতেন। কিন্তু এখানেও বিপদ আছে। কারন কম বয়সে গর্ভবতী হয়ে পড়াটা বিপদজনক এবং বুদ্ধিমানের কাজ নয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে ১৮ বছরের আগে সন্তান ধারণ করা অনুচিৎ।

উপসংহারে বলা যায়, হাইমেন থাকা বা না থাকা নিয়ে কোন সমস্যা নেই, ওগুলো বোকাদের চিন্তা।  কিন্তু যখন ‘কুমারীত্ব’ একটি শারীরিক রোগ হয়ে দেখা দেয় তখন সঙ্গমই একমাত্র সমাধান। সেটা হতে পারে বৈবাহিক কিংবা বিবাহবহির্ভূত । কারন সঙ্গমের ক্ষেত্রে ‘বিবাহ’ নামক দলিলের কোনধরনের প্রভাব পড়ে না। সামাজিক অনুশাসনের ভয়ে প্রাচ্যের বেশীরভাগ মেয়েরাই বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কে আগ্রহী নয়। আর পাশ্চাত্যের ভয় উন্মাতাল যৌনতায় দিশা হারিয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়া । সঠিক সঙ্গী নির্বাচন করতে না পারলে আছে এইডস্ সহ বিভিন্ন যৌনরোগের ভয়।  রোগ আপনার, রোগমুক্তি চাইবেন কি চাইবেন না সেটা আপনার বিষয় । ঝুঁকিপূর্ণ বিষগুলো সম্পর্কে পূর্বেই সতর্ক করা হয়েছে।  ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিন। কারন, “ডিজিজ অব ভার্জিন” –এর চিকিৎসা একটাই –যৌনসঙ্গম।