English Version
আপডেট : ৫ জুলাই, ২০১৮ ১১:৫১

প্রতি মিনিট হতে পারে সর্বনিম্ন ৪৫ পয়সা

অনলাইন ডেস্ক
প্রতি মিনিট হতে পারে সর্বনিম্ন ৪৫ পয়সা

দেশে মোবাইল ফোন নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) বা নম্বর এক রেখে অপারেটর বদলের সেবা চালু হওয়ার আগে অভিন্ন কল রেট নির্ধারণ করা হবে। ভয়েস কলের ক্ষেত্রে অন নেট (একই নেটওয়ার্ক) ও অফ নেট (এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্ক) পার্থক্য তুলে দিয়ে সব অপারেটরের জন্য নির্ধারণ করা হবে অভিন্ন কল রেট। এ ক্ষেত্রে প্রতি মিনিট সর্বনিম্ন ৪৫ পয়সা হতে পারে।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা গতকাল বুধবার কালের কণ্ঠকে জানান, এ বিষয়ে প্রস্তাব এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

তবে মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছে জানা যায়, তাদের সবার মিনিটপ্রতি গড় কল চার্জ বিশ্লেষণ করে বিটিআরসি একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে। তাতে প্রতি মিনিট সর্বনিম্ন ৪৫ পয়সা ও সর্বোচ্চ এক টাকা ২৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে অপারেটর ও গ্রাহক কোনো পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

বর্তমানে বিটিআরসি নির্ধারিত সর্বনিম্ন চার্জ অন নেট প্রতি মিনিট ২৫ পয়সা, অফ নেট ৬০ পয়সা। সর্বোচ্চ প্রতি মিনিট দুই টাকা। অর্থাৎ অপারেটররা ২৫ পয়সা থেকে দুই টাকার মধ্যে কল চার্জ নির্ধারণ করে থাকে। আর গ্রাহকরা অপারেটরভেদে অননেটে প্রতি মিনিট ৩০ পয়সা থেকে ৩৯ পয়সায় এবং অফনেটে ৯১ পয়সা থেকে এক টাকা ৪০ পয়সায় কল করার সুযোগ পাচ্ছে। এই পার্থক্য সামনে থাকবে না।

এ বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। তবে এমএনপি সেবা চালুর আগেই এটি চূড়ান্ত করা হবে।’

সম্প্রতি মোবাইল ফোন অপারেটর রবির মহাব্যবস্থাপক (পলিসি, রেগুলেটরি স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড রিসার্চ) মোহাম্মদ দিদারুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং গ্রাহক ভোগান্তি নিরসনে আমরা এমএনপি সেবা চালুর আগেই অফ নেট ও অন নেট ভয়েস কলের ক্ষেত্রে একক সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণ করতে সরকারকে অনুরোধ করছি।’ তিনি মনে করেন, বর্তমানে অন নেট ও অফ নেট ব্যবস্থার ফলে প্রতিযোগিতায় বিরূপ প্রভাব ফেলছে, পিছিয়ে পড়ছে অন্য অপারেটররা।

অন্যদিকে গ্রামীণফোনের বক্তব্য, ‘অন নেট ও অফ নেট কল চার্জের মধ্যে যে ব্যবধান রয়েছে তা কমিয়ে আনা যেতে পারে। কিন্তু ব্যবধান একেবারে তুলে নিলে হিতে বিপরীত হতে পারে। মোবাইল অপারেটরদের বিভিন্ন ধরনের গ্রাহক আছে। তাদের জন্য বিভিন্ন প্যাকেজ সুবিধা রয়েছে। অন নেট ও অফ নেটের আলাদা রেট না থাকলে সেগুলো থাকবে না। এ ক্ষেত্রে গ্রামীণফোনের প্রস্তাব, অন নেট কল সর্বনিম্ন ৩০ পয়সা ও অফ নেট কল চার্জ সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা করা হোক।

গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি এবং গ্রাহক সুবিধার কথা বিবেচনা করে এ প্রস্তাব রেখেছি।’

এমএনপির প্রস্তুতি যে পর্যায়ে : গত নভেম্বরে এমএনপি সেবা দেওয়ার লাইসেন্স পায় বাংলাদেশ ও স্লোভেনিয়ার যৌথ কনসোর্টিয়াম ইনফোজিলিয়ান বিডি টেলিটেক। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসেন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। দুই মাস আগেই আমাদের প্ল্যাটফর্ম রেডি হয়ে গেছে। ৭/৮ জুলাইয়ের দিকে আমরা ইউজার একসেপ্টেন্স টেস্টে যাচ্ছি। ১৫ থেকে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে সব ধরনের টেস্ট সম্পন্ন হয়ে যাবে। আশা করছি ৩১ জুলাইয়েই এ সেবা শুরু করতে পারব।’

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে অপারেটররা এমএনপি সেবার জন্য ডাটা বেইস (এমএনপি ডিবিং) স্থাপন করতে অসম্মতি জানানোর পর এ বিষয়ে মোবাইল ফোন অপারেটরদেরই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে তাদের মধ্যে অসন্তুষ্টি কাজ করছে। আজ বৃহস্পতিবার অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটব সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে তাদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করতে যাচ্ছে। একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আইজিডাব্লিউ অপারেটররা এমএনপি ডাটা বেইস স্থাপন না করলে দেশে আসা আন্তর্জাতিক কল চিহ্নিত করা সম্ভব হবে না এবং এ খাতে সরকারের রাজস্ব প্রাপ্তির পথও বন্ধ হয়ে যাবে।’

এ বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী বলেন, আইজিডাব্লিউগুলোর অক্ষমতার কারণেই তাদের এ দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।