এবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ব্যবসা গুটাচ্ছে উবার...

এবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে রাইড শেয়ার কোম্পানী উবার। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে উবার তাদের ব্যবসা সিঙ্গাপুরের একটি অ্যাপ-ভিত্তিক ট্যাক্সি কোম্পানি গ্রাবের কাছে বিক্রি করার ঘোষণা দিয়েছে। সিঙ্গাপুর ভিত্তিক কোম্পানি গ্রাব দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৮টি দেশেই উবারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। মূল্য হিসাবে গ্রাব উবারকে কত টাকা দিয়েছে, তা গোপন রাখা হয়েছে। তবে শর্ত অনুযায়ী, গ্রাবের ২৭ শতাংশের মালিকানা উবারের হাতে যাবে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় উবারের প্রধান নির্বাহী দারা খোশরাওশাহি গ্রাবের পরিচালনা বোর্ডে যোগ দেবেন।
২০১৬ সালে উবার চীনে তাদের ব্যবসা বেঁচে দিয়েছিল স্থানীয় কোম্পানি ডিডি চুশিংয়ের কাছে। রাশিয়া থেকেও উবার পিছু হটেছে। ব্যবসা বেঁচে দেওয়ার আগে উবার চীনে ২০০ কোটি ডলার এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ৭০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছিল। তবে নভেম্বরে উবারের প্রধান নির্বাহী মন্তব্য করেছিলেন, এশিয়ায় তাদের কোম্পানির পক্ষে মুনাফা করা সহজ হচ্ছেনা।
বিবিসির কৃষ্ণা ভাসওয়ানি বলছেন, উবার এখন দেখাতে চাইছে এটা তাদের পিছু হটা নয়, বরঞ্চ প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে কৌশলগত পার্টনারশিপ। তবে কারো চোখই এড়াবে না যে গত দেড় বছরে বিশ্বের ১০টি দেশ থেকে উবার ব্যবসা গুটিয়ে নিলো, যার ৯টিই এশিয়ায়। গ্রাব দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় উবারকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছিলো।
ভাসওয়ানি বলেন, এশিয়ায় এখন উবারের প্রধান ৩টি অবশিষ্ট বাজার- জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারত। এই ৩টি দেশে উবারের পরিণতি কী হয়- সেদিকেই মানুষের নজর থাকবে। কারণ এই ৩টি বাজারেই উবারকে স্থানীয় ক্যাব কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যেমন গ্রাব তেমনি ভারতের স্থানীয় কোম্পানি ওলা উবারের সামনে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশে উবারের অপারেশন দেড় বছরেরও কম, কিন্তু এরই মধ্যে স্থানীয় কয়েকটি অ্যাপ-ভিত্তিক ট্যাক্সি সার্ভিস বাজরে চলে এসেছে। বিশেষ করে পাঠাও নামে একটি প্রতিষ্ঠান বড় ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার চেষ্টা করছে। সোমবার এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর বা ব্যাংককের বাসিন্দারা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন করছেন- উবার যাওয়ার পর ট্যাক্সি ভাড়া কি বাড়বে? উবার এবং গ্রাবের পক্ষ থেকে ভরসা দেয়া হচ্ছে যাত্রীদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা কমে যাবে এবং তার পরিণতিতে ভাড়া বৃদ্ধি খুব সাধারণ অঙ্ক।
সিঙ্গাপুরে একজন পরিবহন বিশ্লেষক করিন পিং বলছেন, মানুষের সামনে বিকল্প কমবে এবং ভাড়া ধীরে ধীরে বাড়বে। যাত্রী নিরাপত্তা ইস্যুতে উবারের ইমেজ সম্প্রতি বেশ সঙ্কটে পড়ে যায় এবং গত বছর উবার ৪৫০ কোটি ডলারের ব্যবসা হারিয়েছে। মার্কিন এই প্রতিষ্ঠানের কর্তারা এখন একে ঢেলে সাজাতে চাইছেন।