ট্রাম্প এবার ফেসবুক, গুগল ও অ্যাপলের তোপের মুখে

এই মুহূর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘ড্রিমার’ প্রকল্প বাতিলের বিপক্ষে সোচ্চার অবস্থানে মাঠে রয়েছে অভিবাসীরা। অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ই ‘ডাকা’ বা ‘ড্রিমার’ প্রকল্প বাতিলের অঙ্গীকার করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটিতে অনিবন্ধিত তরুণ অভিবাসীদের সুরক্ষাসংক্রান্ত এই প্রকল্প মঙ্গলবার বাতিল ঘোষণা করে বিতর্কের ঝড় তুলেছেন তিনি। ড্রিমার প্রকল্প বাতিলের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে এককাট্টা হয়ে প্রচারণা শুরু করেছে ফেসবুক, গুগল, অ্যাপল ও আমাজনের মতো জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। এদিকে সবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ট্রাম্প প্রশাসনের এই প্রকল্প বাতিল করার সিদ্ধান্তকে নিষ্ঠুর ও ভুল হিসেবে অভিহিত করেছেন। ড্রিমার প্রকল্প বাতিলের ফলে ২ বছর ছাড়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কাজ বা পড়ালেখার সুযোগ হারাবেন অন্তত ৮ লাখ অভিবাসী তরুণ। সিদ্ধান্তটির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ২ টেক-জায়ান্ট অ্যাপল ও মাইক্রোসফট। নিজেদের অভিবাসী কর্মীদের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ড্রিমার প্রকল্প বহাল রাখতে কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অ্যাপল ও মাইক্রোসফট। মাইক্রোসফটের সভাপতি ব্রাড স্মিথের কাছে কর সংস্কারের চেয়েও ড্রিমার প্রকল্পের গুরুত্ব বেশি। এখানেই শেষ নয়। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক শ বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বৃহস্পতিবার একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে। এই চিঠিতে ড্রিমার প্রকল্প বহাল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা। এছাড়া সেই চিঠিতে কংগ্রেসকে ‘দ্বিদলীয় ড্রিম অ্যাক্ট’ আইন পাসের আহ্বানও জানানো হয়। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ ও প্রধান অপারেটিং অফিসার শেরিল স্যান্ডবার্গ, অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক, আমাজনের চেয়ারম্যান জেফ বেজোস, গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাইয়ের সই রয়েছে সেই চিঠিতে। যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী প্রকল্প সংস্কারে গঠিত সংগঠন এফডব্লিউডি.ইউএসের প্রতিষ্ঠাতা জাকারবার্গ। এ সংগঠনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় চিঠিটি। ফেসবুকে জাকারবার্গ তার পোস্টে বলেছেন, আমি ড্রিমারদের পাশে আছি- যেসব তরুণ মা-বাবার হাত ধরে আমাদের দেশে এসেছেন, তাদের অনেকেই এখানে বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে অবস্থান করছেন। আমাদের এমন একটি শাসনপদ্ধতি দরকার যারা ড্রিমারদের সুরক্ষা করবে। এসব তরুণই আমাদের দেশ ও অর্থনীতির ভবিষ্যৎ। তাদের অনেকেই আমাদের বন্ধু, পারিবারিক সদস্য, এমনকি সমাজের তরুণ নেতৃত্বও। ফেসবুকে ৯ কোটি ৬০ লাখ অনুসারী রয়েছেন জাকারবার্গের। বুধবার সামাজিক এই যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ-এ আসেন তিনি। ড্রিমার প্রকল্প বাতিলের বিপক্ষে অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদ জানান তিনি। ৪৫ মিনিটব্যাপী এই প্রচারণায় জাকারবার্গের সঙ্গে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ৩ জন অবৈধ (কাগজপত্র ছাড়া) অভিবাসী। ২০১২ সালে ড্রিমার প্রকল্প চালু করেছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এই প্রকল্পের আওতায় সুরক্ষা পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে আসা প্রায় ৮ লাখ অবৈধ অভিবাসী।