ফেসবুকে লাইক বা রিঅ্যাকশন দেয়ার আগে ৫ বার ভাবুন

ফেসবুকে ঢুকেই ধুমিয়ে লাইক কিংবা সদ্য উন্মুক্ত রিঅ্যাকশন দেয়া শুরু করার অভ্যাস থাকলে তা আজই ত্যাগ করুন। একটা লাইক দিয়ে ফেঁসে যেতে পারেন আপনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আপনি একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বা অন্য কোনো বিষয়ে লাইক দেওয়ার অর্থ শুধু আপনার একটি পছন্দের প্রতিফলনই নয়, একটি লাইকের মাধ্যমে আরও বহু বিষয় পরিবর্তিত হয়। বহু প্রতিষ্ঠান তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থ হাসিল করে একটি লাইকের মাধ্যমে। এ লেখায় রয়েছে তেমন কয়েকটি বিষয়। খবর ফক্স নিউজের
১. স্ক্যাম: এছাড়া ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্টে থাকতে পারে ক্ষতিকর সফটওয়্যার। এগুলোতে লাইক দিলে তা আপনার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করতে পারে। তবে সবচেয়ে ক্ষতিকর বিষয় হতে পারে তা যখন স্ক্যামে ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা কোনা একটি আপাতদৃষ্টিতে বালো লিংক ফেসবুকে পোস্ট করে তাতে লাইক ও শেয়ারের জন্য অপেক্ষা করে। এটি সে স্ক্যামের প্রাথমিক ধাপ। যখন সে পোস্টটি কিছু মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং নিউজ ফিডের ওপরের দিকে চলে আসে তখন তা পুনরায় এডিট করে প্রতিষ্ঠানটি। দ্বিতীয় ধাপে তাতে ভাইরাস বা ক্ষতিকর প্রোগ্রাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তাই পোস্টটিতে পরবর্তীতে যারা লাইক দেয় তারা ক্ষতির সম্মুখিন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
২. লাইক-ফার্মিং: ফেসবুকে লাইক বিষয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের অন্যতম হলো লাইক-ফার্মিং। আপনি আপনার বন্ধুর পোস্টে লাইক দিলেও এর মাধ্যমে তা তৃতীয় পক্ষের বাণিজ্যে পরিণত হতে পারে। এ বিষয়টি বোঝার জন্য বুঝে নিতে হবে ফেসবুক কিভাবে কাজ করে। ফেসবুকে আপনার মতো যত বেশি ব্যবহারকারী লাইক দেবে ততই তা অন্যদের নিউজ ফিডে ওপরের দিকে থাকবে। আর এসব লাইক ও শেয়ারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো বুঝতে পারে আপনার প্রিয় বিষয় সম্পর্কে। এতে পরবর্তীতে তাদের বিজ্ঞাপন প্রচারের আগে আপনার পছন্দনীয় বিষয়গুলো বাছাই করে নেওয়া হয়। এছাড়া রয়েছে ফিশিং স্ক্যাম। নানাভাবে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করে অনলাইনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এ লাইক ও শেয়ার থেকে তথ্যগুলো সহজেই তারা সংগ্রহ করতে পারে। ৩. যে ধরনের পোস্টগুলো ক্ষতির কারণ হয়: কিছু পোস্ট রয়েছে যেগুলো বহু মানুষের লাইকের জন্য আকুতি থাকে। বিপদগ্রস্ত প্রাণীকে বাঁচাতে লাইক দিন কিংবা অনুরূপ কোনো বিষয় যা বহু মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ ধরনের পোস্টগুলোতে যেমন বহু মানুষের লাইক থাকে তেমন তাদের অনেকেই এ কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাই যে কোনো পোস্টে লাইক দেওয়ার আগে এর পেছনে কোনো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, জেনে নিন।
৪. আরও কিছু বিপজ্জনক পোস্ট: শুধু আবেগগত পোস্টই নয়, আরও কিছু পোস্ট রয়েছে, যা আপনার লাইক থেকে ব্যবসা করতে পারে। এসব পোস্টের মধ্যে রয়েছে নতুন মডেলের স্মার্টফোন, দারুণ কোনো ছবি কিংবা আধুনিক গ্যাজেট, অংকের ধাধা, যা লাইক আশা করছে। এসব পোস্টে লাইক দিলে তা আপনাকে একই ধরনের ফাঁদে ফেলতে পারে। ৫. লাইক-ফার্মিং থেকে বাঁচার উপায়: লাইক-ফার্মিং থেকে বাঁচার সহজ উপায় হলো আপনার লাইক ও শেয়ার বিষয়ে সতর্ক হোন। অপরিচিত লিংক থেকে লাইক দেওয়ার আগে একটু ভেবে দেখুন। আপনার কোনো বন্ধু অপরিচিত লিংকে লাইক দিলে তাকেও সতর্ক করুন। কোনো একটি পোস্ট ঠিক কোন স্থান থেকে এসেছে তা অনুসন্ধান করুন। তার মানে অবশ্য এই নয় যে, আপনি যে কোনো লাইক বা শেয়ার বাদ দেবেন। এক্ষেত্রে বন্ধু-বান্ধব বা পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান কিংবা ভালো কোনো বিষয়ের পোস্ট লাইক-শেয়ার করা যেতে পারে। তবে কোনো অনিরাপদ উৎস থেকে এটি এসেছে কি না, জেনে নিন।