বিশ্বের দ্রুততম ডাটা ট্রান্সমিশন প্রসেসর

ডিজিটাল যুগে ডাটা ট্রান্সমিশন সিস্টেম অন্যতম গবেষণার বিষয়। হাজার হাজার টেরাবাইট ডাটা কত দ্রুততম সময়ের মধ্যে ট্রান্সফার করা যায় সেটা নিয়ে বিজ্ঞানের নিরন্তর প্রচেষ্ঠা। সেই প্রচেষ্ঠার অংশ হিসেবেই বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মত এমন একটি প্রসেসর আবিস্কার করেছেন যা ডাটা ট্রান্সমিশনের জন্য আলো ব্যাবহারে সক্ষম। আলোকমাধ্যম দিয়ে ডাটা ট্রান্সফার করায় এই প্রসেসরটি হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ডাটা ট্রান্সমিশন প্রযুক্তি। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফর্নিয়ার বার্কলি গবেষক দল সফলভাবে একটি মাইক্রোপ্রসেসরে ইলেক্ট্রন ও ফোটন কনার মিথস্ক্রিয়া ঘটাতে সক্ষম হন। এর ফলে আধুনিক বিজ্ঞানের সামনে আরেকটি নতুন উদ্ভাবনের দুয়ার অবমুক্ত হয়। এটি এমন একটি প্রযুক্তি যা স্বল্প বিদ্যুত ব্যাবহার করে দ্রুততম সময়ে ডাটা ট্রান্সফার করতে পারবে।
এই গবেষণায় বিশেষজ্ঞ দল একটি ৩ বাই ৬ মিলিমিটার মাইক্রোচিপে ৭০ মিলিয়ন ট্রানজিস্টার এবং ৮৫০ টি ফোটনিক কণার মিথস্ক্রিয়া ঘটান। মাইক্রেচিপটির ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে যাতে আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তি কিংবা সুপার কম্পিউটারগুলোতে ব্যাবহারের জন্য খুব সহজেই বান্যিজি্যকভাবে উৎপাদন করা সম্ভব। শুধু তাই নয়, এই নতুন মাইক্রোচিপটি ফাইবার অপটিক কমিউনিকেশন সিস্টেমেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। গবেষক দলে ছিলেন ভ্লাদিমির স্টোজানোভিচ, প্রফেসর আসানোভিচ, ভারতীয় বংশদ্ভূত গবেষক রাজীব রাম, ইউনিভার্সিটি অব কলোরেডোর প্রফেসর মিলোস পোপোভিচ।
গবেষক ভ্লাদিমির স্টোজানোভিচ বলেছেন “এই আবিস্কার একটি আধুনিক কম্পিউটিং এর জন্য একটি মাইলফলক। এটি পৃথিবীর প্রথম প্রসেসর যা আলোক ব্যাবহার করে পৃথিবী এমনকি পৃথিবীর বাইরেও যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। তাই ফোটনিক আই/ও চিপ অন্য সকল প্রসেসরের থেকে আলাদা।“
একত্রে কাজ করার বিষয়ে প্রফেসর আসানোভিচ উচ্ছাসিত মন্তব্য করেন “এই প্রথমবারের মত আমরা একসাথে এমন একটি কাজ করেছি যা প্রযুক্তির জন্য কল্যাণকর এবং আমাদের আনন্দটা ছিল কোন নতুন একটি প্রোগ্রাম রান করার মত।“
নতুন এই লাইট-ট্রান্সমিশন প্রযুক্তি রাডার, মহাকাশ যোগাযোগ, স্বয়ংক্রিয় যানবাহন চালনা, আল্ট্রাসাউন্ড ইমেজিং, রোবটিক্স টেকনোলজি, কম্পিউটারসহ সকল যোগাযোগ ক্ষেত্রে ব্যাবহার করা যাবে। উল্লেখ্য যে এই গবেষণাপত্রটি জার্নাল ন্যাচার-এর প্রিন্ট ভার্সনের প্রকাশিত হয়।