English Version
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি, ২০১৬ ২১:০৫

নতুন প্রজন্ম ঝুঁকছে ইন্টারনেটে

অনলাইন ডেস্ক
নতুন প্রজন্ম ঝুঁকছে ইন্টারনেটে
ফাইল ছবি

 

আগে টিভিতে বসে বসে নানান মজাদার প্রোগ্রাম দেখার জন্য শিশু-কিশোরদের আগ্রহ ছিলো, এখন সেই জায়গাটা দখল করেছে অনলাইন। যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণা বলছে এখনকার শিশু-কিশোররা টিভি দেখার চেয়ে অনলাইনে সময় কাটাতে বেশি পছন্দ করে। এর মধ্যে অবশ্য ইউটিউবও আছে। এটাকে তারা একধরনের বিশাল পরিবর্তন হিসেবেই উল্লেখ করছেন। বর্তমান সময়ে শিশুদের জন্য ট্যাবলেট কম্পিউটারের সংখ্যাও বেড়েছে বহুগুণ। আগে যেখানে শিশু-কিশোররা দিনের বেশিরভাগ সময় টিভিতে কাটাতো এখন তারা দিনে ২/১ ঘণ্টা টিভিতে কাটায় আর তিন ঘণ্টা অনলাইনে।

তবে দেশের বাইরে এই চিত্র হলেও আমাদের দেশের চিত্রটা একটু ভিন্নই বলে মনে করেন আমরা স্মার্ট সলিউশনের হেড অব বিজনেস সোলায়মান সুখন। তিনি বলেন, তারা তাদের দেশে গবেষণা করে এই চিত্র পেয়েছে আমাদের দেশে পরিস্থিতি ভিন্ন। তবে এটুকু বলা যায় এদেশের শিশু কিশোররা এখন বড় স্ক্রিন যেমন টিভি ছেড়ে ছোট স্ক্রিন যেমন মোবাইল বা ট্যাবের দিকে ঝুঁকছে। কিন্তু বাংলাদেশে মোবাইল ব্যবহার করে গড়ে আট কোটি মানুষ। তার মধ্যে মাত্র সোয়া ১ কোটির হাতে রয়েছে স্মার্টফোন। তাই ঢালাওভাবে বলা যায় না যে তারা সবাই অনলাইনে সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ আগেই লোড করা কিছু গান বা সিনেমা দেখে থাকে মোবাইলে। এটুকু বলা যায়।

একই মন্তব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদুল হক। তিনি বলেন, আমাদের দেশের শিশু-কিশোরদের প্রবণতাও ওই দিকেই। কিন্তু এই গবেষণাটি সম্পন্ন হয়েছে সেদেশের পটভূমিতে। আগে যেখানে টিভি দেখার হার বেশি ছিলো এখন সেই জায়গাটা দখল করেছে ইন্টারনেট। এদেশের প্রেক্ষাপটে ইন্টারনেট ব্যবহার করেছে কিন্তু তাদের তুলনায় কম। তবে টিভির বিকল্প এত সহজে আসবে না। কারণ যারা ইন্টারনেট রব্যবহার করছে তারাও কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই ইউটিউব চালাচ্ছে। সেখানে আগেকার টিভির অনুষ্ঠানগুলোই ঘুরেফিরে দেখছে।

এভাবে টিভির বিকল্প হিসেবে অনলাইনে ঝুঁকি পড়াকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন আইটি বিশেষজ্ঞ সোলায়মান সুখন। বিষয়টি ব্যাখা করে সুখন বলেন, বেশি বৃষ্টি হলে প্রথমে সবাই ভয় পায় কিন্তু একসময় তো সেই পানিটাকে নানানভাবে কাজেও লাগাতে পারে। তাই তথ্যের প্রবাহকে সবসময় ইতিবাচকভাবেই দেখতে হবে। তাতে জ্ঞানের জগত বিকশিত হবে কিন্তু সেটাকে ঠিকঠাক ব্যবহার করা শেখাতে হবে আমাদেরই। আমরা যদি আমাদের শিশু-কিশোরদের শেখাই, 'তোমার মোবাইলের মেমোরি কার্ডে যা আছে তা তোমার ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ করে', তাহলে নিশ্চয় তাদের মধ্যে কিছুটা বোধ তৈরি করতে পারবো। তাছাড়া যারা ইন্টারনেট ছাড়া শুধু মেমেরি কার্ড ব্যবহার করে, তাদের মোবাইলে কী কী থাকছে তা একটু মনিটর করতে হবে। একটা গাইডলাইন থাকলে ভালো। এভাবে হয়তো ইন্টারনেটের অপব্যবহার কিছুটা রোধ করা যাবে।

অবশ্য শিশু-কিশোরদের এমন ইন্টারনেট আসক্তিতে ইতিবাচক নাকি নেতিবাচক প্রভাব আসবে তা কোনো গবেষণা ছাড়া বলা মুশকিল বলেন মনে করেন ফাহমিদুল হক।

ফাহমিদুল হকের মতে, যেকোনো বিষয়েই আসক্তিই খুব ক্ষতিকারক। বয়স, পরিবার ও শিক্ষার ভিত্তিতেই নির্ধারিত হয় কোনটি ভালো আর কোনটি খারাপ। তব জীবন যাপন যদি এর সঙ্গেই অভ্যস্ত হয় যে সে দৈনিক একটি নির্দিষ্ট সময় ইন্টারনেটে কাটাবে তাহলে সেটা ভালো কিছুই বয়ে আনতে পারে। হয়তো এর মধ্যে থেকেই তারা পাবে অনেক শিক্ষনীয় বিষয়।

দেশে টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা এখন ৪১টি, আর সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ৫ কোটি ৩৯ লাখ।