English Version
আপডেট : ১১ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৬:০২

সেলফি তুলতে গিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে

অনলাইন ডেস্ক
সেলফি তুলতে গিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে

হাল আমলে স্মার্টফোনের ফ্রন্ট ক্যামেরার বদৌলতে ‘সেলফি’ নামক একটি ব্যাপারের আবির্ভাব ঘটেছে। এর অর্থ নিজের ছবি নিজে তোলা। এবং মোবাইল ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার দরুন সেটা সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দেয়া হয়ে যায়। আজকের দিনে সেলফির নেশা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, যুবক-যুবতীরা একটা ভালো বা ব্যতিক্রমী সেলফি তোলার জন্য জীবন পর্যন্ত বাজি রেখে ফেলছেন। বাসার ছাদে, ট্রেনের দরজায় এমনকি ড্রাইভিং করতে করতে সেলফি তোলার মত বিপদজনক স্টান্ট নিচ্ছে তরুন ও টিনএজরা। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে অভিভাবক, সমাজবিজ্ঞানী এবং ডাক্তারদের।

ভারতের মুম্বাই এবং জম্মু-কাশ্মীরে গত এক সপ্তাহে দুটো মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দুজনেই টিনএজ । এবং দুটো ক্ষেত্রেই আরো একটা ব্যাপার কমন যে দুজনই মারা গিয়েছেন সেলফি তুলতে গিয়ে। শুধু ভারতে নয় সারা বিশ্ব থেকে এমন বিপদজনক সেলফি তোলার খবর পাওয়া যায়। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় চলন্ত ট্রেনে ঝুলতে ঝুলতে সেলফি তোলার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যায় একটি কিশোর। আশংকাজনক খবর হলো গত বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় পনেরটি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে যারা মারা গিয়েছেন সেলফি তুলতে গিয়ে! এদের মধ্যে আটজনই গিয়েছেন হাঙরের পেটে!

কলম্বিয়া এশিয়া হসপিটালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর আশিস মিত্তাল বলেন, তরুণ প্রজন্মকে বুঝতে হবে, বেঁচে থাকলে তবেই আসবে ভালো লাগার প্রশ্ন। কিন্তু প্রাণটাই যদি চলে যায় তবে সেলফি ভাল হলেই কি আর মন্দ হলেই কি?

তিনি তরুন সমাজকে চাহিদার একটা সীমানা নির্ধারণ করার কথা বলেন। সেলফি তুলে যদি অন্যকে ইমপ্রেসড্ করতে চান তবে তার জন্য প্রাণ দিয়ে দেওয়া কোন কাজের কথা নয়। অন্যকে ইমপ্রেসড করুন নিজের আচার-ব্যাবহার, চাল-চলন আর যোগ্যতা দিয়ে। আপনার সেলফি দেখে যদি কেউ ইমপ্রেসড্ হয় তবে সেটা অবশ্যই ক্ষণস্থায়ী। সেক্ষেত্রেও আপনি আশানুরুপ ফলাফল পাবেন কিনা সেই সন্দেহ থেকেই যায়। তাহলে ভেবে দেখুন, আপনি নি:সন্দেহে একটা মরীচিকার পেছনে জীবন বাজি রেখে ছুটছেন। যার ফলাফল আপনার জীবনাবসান!

মনোবিদরা এই সমস্যা কাটাতে বাবা-মাকে বাচ্চাদের সঙ্গে আরও বেশি সময় দেয়ার কথা বলেন। সন্তানরা বেশি সময় একাকী থাকতে না পারে। সন্তানকে এইসব উশৃঙ্খলতা ত্যাগ করে জীবনের মর্ম বোঝাতে হবে। মানুষের জীবনটা বেশী বড় নয়। ক্ষণিক আনন্দের জন্য অর্থহীনভাবে সেই জীবনটা শেষ করে দেয়ার কোন মানেই হয়না।