নিউজিল্যান্ডের কাছে টাইগারদের চরম আত্মসমর্পণ

নিউজিল্যান্ডে বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজের শেষ ও তৃতীয় ম্যাচে নির্ধারিত ৫০ ওভারের আগে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ৮৮ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কিউইরা।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার খেলে ৩৩০ রান করে নিউজিল্যান্ড। তাই হোয়াইটওয়াশ এড়াতে বাংলাদেশকে করতে হতো ৩৩১ রান।
এই পাহাড়সম রান তারা করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় টাইগাররা। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এ ফর্মে থাকা তামিম ইকবাল এদিন শূন্য রানে ফিরে যান সাজঘরে। তামিম ফিরে যাওয়ার পর আবারো ব্যর্থতার প্রমাণ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হেটে যান সৌম্য সরকার। তিনি যখন আউট হন বাংলাদেশ সংগ্রহ ২ উইকেটে ১ রান। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেই চাপ আউট হয়ে আরো বাড়িয়ে দেন লিটন কুমার দাস। সবাই যখন ব্যর্থতার পরিচয় ফিরে যাচ্ছিল সাজঘরে তখন উইকেটে এসে দারাতে চেয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম। কিন্তু সেই প্রতিরোধ বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেননি এই দুই ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে যখন ৬১ রানে যখন ৫ উইকেট তখন ধরা হয়েছিল হয়তো ১০০ কিংবা ১২০ রানে গুটিয়ে যাবে টাইগাররা।
এরপর ক্রিজে আছেন সাইফুদ্দিন। তাকে সাথে নিয়ে সাব্বির রহমান অনেকটা আশা জাগিয়ে তুলেন। তাদের ব্যাটে রানের ব্যাবধান কমতে থাকলে অনেক মনে আশা জেগেছিলো হয়তো শেষ ম্যাচে জিততে পারবে বাংলাদেশ। কিন্তু ট্রেন্ট বোল্টের বলে ৪৪ রান করে গাপটিলকে ক্যাচ দিয়ে সাইফুদ্দিন সাজঘরে ফিরে গেলে আবারো চাপে পরে বাংলাদেশ।
এদিকে কিউই বোলাদের একাই প্রতিরোধ গড়ে তুলছে হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান।সেঞ্চুরি তুলেন। তবে সাইফুদ্দিনের পর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ফিরে যান ৩ বলে ২ রান করে। এরপর মেহেদি ও সাব্বির কিছু সময় ক্রিজে রানের চাকা সামনের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। পরে মেহিদি ফিরে গেলে। ক্রিজে আসেন রুবেল সেও রান আউট হয়ে ফিরে যান। সর্ব শেষ সাব্বির ১০২ রান করে আউট হন।
এদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ২১ রানে মানরোকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলার মধ্য দিয়ে নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন মাশরাফি বিন মর্তজা। কেন উইলিয়ামসনের পরিবর্তে দলে সুযোগ পেয়ে মাত্র ৮ রানে আউট হন মানরো।
এরপর দেখে শুনে টাইগার বোলারদের মোকাবেলা করতে থাকে ফর্মের তুঙ্গে থাকা গাপটিল কিন্তু সাইফুদ্দিনের বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে তামিম ইকবাল হাতে তালুবন্দি হয় গাপটিল। ক্যাচটি ধরার সময় তামিম নিজের শরীরের ব্যালেন্স রাখতে পারেননি।
বলটি হাওয়ায় ভাসিয়ে সীমানা দঁড়ির ওপারে চলে যান। সেখান থেকে ফিরে ফের তালুবন্দি করেন তামিম। তার এমন অসাধারণ ক্যাচে পরিণত হয়ে অবশেষে মাঠ ছাড়েন গাপটিল।প্রথম দুই ওয়ানডেতে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করা গাপটিল আজ করেন ৪০ বলে ২৯ রান । এরপর দলীয় ১৫১ রানে মিরাজের বলে সাজঘরে ফিরে যায় হেনরি নিকোলস। আউট হওয়ার আগে করে ৭৪ বলে ৬৪ রান। রানের চাকা সচল রেখে দলীয় ২০৬ রানে রুবেল হোসেনের বলে ক্যাচ আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যায় ৮২ বলে ৬৯ করা রস টেলর। এরপর কিউই শিবরে আঘাত হানে মোস্তাফিজুর রহমান। টম ল্যাথাম ও জেমস নিশামকে প্যাভিলিয়নের পথে হাটান কিন্তু ততক্ষণে কিউইদের স্কোর বোর্ডে সংগ্রহ ৩৩০ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২৪২/১০ ( ৪৭.২ ওভার) নিউজিল্যান্ড: ৩৩০/৬ (৫০ ওভার) টার্গেট : ৩৩১
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম , মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মাশরাফি বিন মুর্তজা , মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন।
নিউজিল্যান্ড একাদশ: মার্টিন গাপটিল, কলিন মুনরো, হেনরি নিকোলস, রস টেলর, টম ল্যাথাম , জেমস নিশাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, মিচেল স্যান্টনার, টিম সাউদি, লকি ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্ট।