English Version
আপডেট : ৩০ আগস্ট, ২০১৭ ১২:৫৫

মিরপুরে রোমাঞ্চকর সমাপ্তির অপেক্ষা!

অনলাইন ডেস্ক
মিরপুরে রোমাঞ্চকর সমাপ্তির অপেক্ষা!

মিরপুরের সকালের সেশনের প্রথম ৪০ মিনিটের খেলা দেখে দর্শকরা হয়তো হতাশই হয়েছিলেন। কিন্তু পরের এক ঘণ্টায় একক আধিপত্য বিস্তার করেন বাংলাদেশের বোলাররা। সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে জয়ের সুবাস পেতে শুরু করেছে টাইগাররা। ২৬৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়াকে বেশ কোণঠাসা করে ফেলেছে বাংলাদেশ।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাঞ্চের বিরতির আগপর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৯৯ রান। জিততে হলে করতে হবে আরও ৭০ রান। ৮ রানের ব্যবধানে তিন-তিনটি উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন সাকিব-তাইজুল।

জিততে বাংলাদেশের দরকার আর তিন উইকেট। তবে বলা রাখা ভালো, মঙ্গলবার বোলিংয়ের সময় ইনজুরিতে পড়া জস হ্যাজলউড বাংলাদেশ সিরিজ থেকে ছিটকে পড়েছেন। দলের প্রয়োজনে ব্যাটিংয়ে নামতে পারেন হ্যাজলউড। তবে আনফিট অস্ট্রেলিয়ান পেসার ব্যাটিংয়ে নামলেও সাকিবদের ঘূর্ণির মুখে কতক্ষণ টিকতে পারেন সেটিই দেখার বিষয়।

বুধবার টেস্টের চতুর্থ দিনের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথ। তবে দুর্দান্ত এক ডেভিভারিতে ডেভিড ওয়ার্নারকে আউট করে বাংলাদেশ শিবিরকে চাঙা করেন এই টাইগার স্পিনার। এরপর প্রতিরোধ গড়ে তোলার আগেই স্মিথকে আউট করে বাংলাদেশের মলিন হওয়া স্বপ্ন পুনরূজ্জীবিত করেন সাকিবই।

সাকিবের জোড়া আঘাতে বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরার পর প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে অস্ট্রেলিয়া। তবে ৫ রানের ব্যবধানে হ্যান্ডসকম্ব এবং ম্যাথু ওয়েডকে আউট করে বাংলাদেশকে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন তাইজুল ও সাকিব। ফের অজি শিবিরে তাইজুলের হানা। সবমিলিয়ে মিরপুরে রোমাঞ্চকর সমাপ্তির অপেক্ষায় ক্রিকেটবিশ্ব।

বুধবার টেস্টের চতুর্থ দিন ২ উইকেটে ১০৯ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে অস্ট্রেলিয়া। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অজিদের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৯৯ রান। প্যাট কামিন্স ২ এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ১৪ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। আউট হওয়ার আগে ১১২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন ওয়ার্নার। পিটার হ্যান্ডসকম্ব ১৫ এবং স্মিথ আউট হন ৩৭ রান করে।

বুধবার ওয়ার্নার ৭৫ এবং স্মিথ ২৫ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন। শুরু থেকেই দুজনই খেলতে থাকেন আস্থার সঙ্গে। তাইজুল ইসলামের করা ৩৯তম ওভারের প্রথম বলে কভারে ঠেলে দিয়ে দুই রান নিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ওয়ার্নার। এশিয়ার মাটিতে এটি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনারের দ্বিতীয় এবং উপমহাদেশের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরি। সবমিলিয়ে ক্যারিয়ারের ১৯তম সেঞ্চুরি।

সেঞ্চুরি পর আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন ওয়ার্নার। তবে সাকিবের করা ৪২তম ওভারের পঞ্চম বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি ওয়ার্নারের। তবে আউট হওয়ার আগে ঠিকই বাংলাদেশের কাছ থেকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেন এই অজি ওপেনার।

ওয়ার্নারের আউটের পর ক্রিজে আসেন হ্যান্ডসকম্ব। তাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন স্মিথ। তবে সাকিবের করা ৪৬তম ওভারের পঞ্চম বলে মুশফিকের দুর্দান্ত ক্যাচের শিকার হয়ে স্মিথ ফিরে গেলে বাংলাদেশের জয়ের ম্রিয়মান স্বপ্ন আলোর মুখ দেখতে শুরু করে।

দলীয় ১৮৭ রানের মাথায় হ্যান্ডসকম্ব আউট হয়ে ফিরে গেলে বাংলাদেশ আরো উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। দলীয় ১৮৭ রানের মাথায় তাইজুলের বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন হ্যান্ডসকম্ব। মুশফিকের গ্লাভসে লেগে বল স্লিপে সৌম্য সরকারের কাছে যায়। প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় চেষ্টায় ঠিকই ক্যাচ লুফে নেন সৌম্য।

দলীয় ১৯২ রানের মাথায় ম্যাথু ওয়েডকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে গর্জন তোলেন সাকিব। এর রেশ কাটতে না কাটতেই অ্যাস্টন অ্যাগারের ফিরতি ক্যাচ নিয়ে বাংলাদেশকে চালকের আসনে নিয়ে যান তাইজুল।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ২৬০ রানের জবাবে ইংল্যান্ড গুটিয়ে যায় ২১৭ রানে। মঙ্গলবার ১ উইকেটে ৪৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ ২২১ রানে গুটিয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৮ রানের ইনিংস খেলেন তামিম ইকবাল। এছাড়া মুশফিক ৪১, মেহেদী হাসান মিরাজ ২৬ এবং সাব্বির রহমান করেন ২২ রান। অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার নাথান লায়ন। ৮২ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি। এছাড়া অ্যাস্টন অ্যাগার দুটি ও প্যাট কামিন্স নেন একটি উইকেট।