টেস্ট নিয়ে চ্যালেঞ্জ দেখছেন স্মিথ

উপমহাদেশের মাটিতে টেস্ট নিয়ে তেমন সুখস্মৃতি নেই অস্ট্রেলিয়ার। এজন্য অতীত পরিসংখ্যান ঘাঁটার দরকার নেই, সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সই যথেষ্ট। গত তিন বছরে উপমহাদেশে কোনো টেস্ট সিরিজ জেতেনি অসিরা। ২০১৪ সালে পাকিস্তানের কাছে ২-০-তে ধবলধোলাইয়ের পর ২০১৬ সালে শ্রীলংকায় একই লজ্জার মুখে পড়তে হয় অসিদের। সেবার ৩-০-তে টেস্ট সিরিজ জিতে নেয় স্বাগতিক শ্রীলংকা। যদিও বছর ভারত সফরে খানিকটা উন্নতির ছাপ রেখেছিলেন স্টিভেন স্মিথরা। চার ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে জয়, শেষটায় ড্র করেছিলেন সফরকারীরা। শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে সিরিজটা জিতে নেয় ভারত।
অতীতের এ তিক্ত অভিজ্ঞতাগুলো যেন আগাম বার্তা দিচ্ছে বাংলাদেশ সফরে কঠিন চ্যালেঞ্জের। তাই বাংলাদেশকে বেশ সমীহভরেই দেখছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। বললেন, ‘নিজেদের কন্ডিশনে বাংলাদেশ খুব ভালো দল। আমাদের জন্য তারা কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সিরিজটা খুবই চ্যালেঞ্জিং হতে যাচ্ছে।’ দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে গতকাল রাতে ঢাকায় পা রাখেন স্টিভেন স্মিথ ও তার সহযোদ্ধারা। দেশ ছাড়ার আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক। জানান, বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে তার দল। আর এজন্য ভারত সফরের শিক্ষা কাজে লাগাতে চান তিনি।
গত ফেব্রুয়ারিতে রবিচন্দ্র অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজাদের ঘূর্ণিতে সুবিধা করতে পারেননি অসি ব্যাটসম্যানরা। ছয় মাস আগেকার সেই শিক্ষা এবার কাজে লাগাতে চান স্মিথ, ‘এ ধরনের কন্ডিশনে খেলতে পারাটা আমাদের জন্য দারুণ হবে। ভারতে কী শিখেছি, সেটা বোঝা যাবে। সবাই অনেক কিছু শিখেছে। আশা করি, সেগুলো কাজে লাগাতে পারব এবং সফল একটা সফর হবে।’
স্পিনিং উইকেটে খেলতে হবে— এটা হিসাবের মধ্যে নিয়েই বাংলাদেশে এসেছেন স্মিথ। সেক্ষেত্রে দুই স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজানোর কথাও জানিয়ে রাখলেন তিনি। অসি দলনায়ক বলেন, ‘আবহাওয়া যদি ভালো থাকে, তাহলে আমরা এমন উইকেট পেতে যাচ্ছি, যা স্পিন করবে। সেক্ষেত্রে বলতে দ্বিধা নেই, আমরা দুই স্পিনার নিয়ে নামব। ওখানে গিয়ে আমরা চেষ্টা করব কন্ডিশনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে। টেস্টে যেমন উইকেটে খেলব, প্রস্তুতি ম্যাচেও তেমন উইকেট পেলে দারুণ হবে।’
২০০৬ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেবার ২-০-তে টেস্ট সিরিজ জিতলেও ফতুল্লায় প্রথম টেস্টে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল রিকি পন্টিংয়ের দল। বাংলাদেশের ৪২৭ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল সফরকারীরা। ১৪৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে বাঁচান অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। আর দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৮ রানের ক্যাপ্টেন্স নক খেলেন পন্টিং। তা না হলে ৩০৭ রানের টার্গেট ছোঁয়া এককথায় অসম্ভব ছিল অস্ট্রেলিয়ার। ১১ বছর পর ওই সফরের কেউ নেই স্মিথের দলে।
তবে উসমান খাজা, অ্যাশটন অ্যাগারদের নিয়ে ভালো করার আশাবাদ অসি অধিনায়কের, ‘এ মৌসুমে উসমান (খাজা) আমাদের জন্য বড় খেলোয়াড় হতে যাচ্ছে। গত দুই বছরে অস্ট্রেলিয়ায় সে দুর্দান্ত খেলেছে। এবার খেলাটা তার জন্য ভালো হবে। অসাধারণ কিছু করতে সে উন্মুখ। আমার মনে হয়, ও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারবে।’
একই সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচে নিজেকে মেলে ধরা অ্যাশটন অ্যাগারের ওপর ভরসা রাখছেন অধিনায়ক স্মিথ। টেস্টে নাথান লায়নের সঙ্গে স্পিন জুটি গড়তে দেখা যেতে পারে ২৩ বছর বয়সী এ বাঁহাতিকে। এ প্রসঙ্গে স্মিথ বলেন, ‘অ্যাগার আমাদের দলের দ্বিতীয় স্পিনার। গত কয়েক বছরে সে অনেক উন্নতি করেছে। এ সপ্তাহে সে ভালো বল করেছে।
সম্ভবত সে সুযোগ পাচ্ছে, সেভাবেই আমরা ভাবছি। সে যদি ধারাবাহিক থাকে এবং লেন্থ ভালো রাখে, আমি মনে করি এ সফরে সে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।’ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া, ক্রিকইনফো