English Version
আপডেট : ৩১ মে, ২০১৬ ০৩:২৪

দেশে ফিরলেন মুস্তাফিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে ফিরলেন মুস্তাফিজ

এটা এখন আর কারোরই অজানা নয় যে মুখের কথায়ই কেবল জড়তা মুস্তাফিজুর রহমানের। কথা বলেন কম, কিন্তু তিনি বোলিংয়ের ভাষায় কথা বলতে পছন্দ করেন বেশি। সেটি বলতে পারেনও তিনি। এ জন্যই তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসার মাত্র এক বছরের মধ্যেই ‘হটকেক’ বাংলাদেশি এই বাঁ-হাতি বোলিং বিস্ময়। পারফরম্যান্স দিয়ে আলো ছড়িয়েছেন আইপিএলে, তাঁর দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের শিরোপা জয়েও দারুণ ভূমিকা রাখা এই তরুণ হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়। প্রথমবার আইপিএল খেলতে গিয়েই হইচই ফেলে দেওয়া মুস্তাফিজের এত কীর্তি, অবশ্য তাঁর মুখের কথায় আঁচ করা কঠিন। গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় কলকাতা থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরার পর নিজের সাফল্য নিয়ে অত উচ্ছ্বাসও নেই তাঁর, ‘আমি এখনো ছোট। আস্তে আস্তে আরো অনেক কিছু শিখব।’ যদিও ‘ছোট মানুষ’ মুস্তাফিজ ‘বড়’ অর্জনের মালা গেঁথেই পরশু রাত থেকে নিচ্ছিলেন দেশে ফেরার প্রস্তুতি। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দ-উৎসব করে গতকাল সকালেই বেঙ্গালুরু থেকে চলে এসেছিলেন কলকাতায়। সারা দিন সেখানেই ছিল দেশে ফেরার প্রতীক্ষা। রাতেই বিলম্বিত ফ্লাইটে দেশে ফেরার পর দেখলেন তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় সহ আরও অনেকে। মিষ্টিমুখ করালেন মুস্তাফিজকে। তবে যে সে মিষ্টি নয়, ক্রীড়া উপমন্ত্রী নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর নিজ এলাকা নেত্রকোনার ট্রেডমার্ক বালিশ মিষ্টি। বিমানবন্দরে উপমন্ত্রী মানেই তাঁর সঙ্গী আরো অনেকে। সেই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমও উপচে পড়ায় মুস্তাফিজকে ঘিরে উপস্থিতিটা জনাকীর্ণই হয়ে গেল। এত রাতে তাঁর জন্য ভিড় লেগে যেতে দেখে আলোড়িত মুস্তাফিজ নিজেও। সবাইকে সে জন্য ধন্যবাদও জানালেন তিনি, পাশাপাশি তাঁর ইংরেজি বলার অক্ষমতা নিয়ে হালকা রসিকতাও করলেন, ‘আমি তো ইংরেজি পারি না,  তাই হায়দরাবাদে আমার সতীর্থদের কিছু বাংলাই শেখানোর চেষ্টা করেছি।’ তিনি খুশি এই ভেবে যে, ‘আইপিএলে আমি শুরুটা যেমন ভালো করেছি, তেমনি শেষটাও। আমার কাছে এটাই সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয়।’ এমনিতে সাতক্ষীরার দুররাম তেঁতুলিয়ার জন্য মনটা সব সময়ই পোড়ে মুস্তাফিজের, তবে সেখানে ছুটে যাওয়ার আগে অন্য আরো অনেক কিছুও ভাবতে হচ্ছে তাঁকে। হ্যামিস্ট্রিংয়ের চোটে গুজরাট লায়ন্সের বিপক্ষে কোয়ালিফাইং ম্যাচে খেলতে পারেননি তিনি। ফাইনালে খেললেও কিছুটা চোট নিয়েই তিনি খেলেছেন, তাও অস্বীকার করলেন না। লম্বা আইপিএল মৌসুম শেষ করে নিজেকে ফিট রাখার কথাই ভাবতে হচ্ছে সবার আগে। তাই দেশে ফিরেই ছোটেননি সাতক্ষীরায়। গত রাতে বিমানবন্দর থেকে গিয়েছেন ঢাকায় তাঁর এক মামার বাসায়, আজ সকালে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দেখা করবেন বিসিবির ফিজিওর সঙ্গে, ‘আগে ফিজিওর সঙ্গে দেখা করব। দেখি তিনি কী করেন। এর পরই সিদ্ধান্ত নেব সাতক্ষীরায় কখন যাব।’ ১৬ ম্যাচে পঞ্চম সেরা ১৭ উইকেট নিয়ে মুস্তাফিজ শেষ করেছেন আইপিএলের নবম আসর। তাঁর গড় ২৪.৭৬ আর ইকোনমি রেট ৬.৯০। অন্তত ২০ ওভার করা বোলারদের মধ্যে এবারের আইপিএলে সবচেয়ে কম ইকোনমি রেট তাঁরই। তাই তো আইপিএল অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের ভোটাভুটিতে ৮৩.২ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথম বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে জিতেছেন সেরা উদীয়মানের পুরস্কার।