English Version
আপডেট : ২৮ মার্চ, ২০১৬ ১০:৩১

নাসিরের ৮০বান্ধুবী আমি এসব বলিনি: পাপন

অনলাইন ডেস্ক
নাসিরের ৮০বান্ধুবী আমি এসব বলিনি: পাপন

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে উদ্ধৃত করে গতকাল রবিবার বাংলাদেশের গণমাধ্যমে অনেকগুলো খবর প্রচারিত হয়েছে। মাশরাফি অবসর নিচ্ছেন, নাসিরের শৃঙ্খলা নেই-ইত্যাদি ইত্যাদি।

গতকালই ঢাকায় ফেরা বিসিবি সভাপতি ইত্তেফাকের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে পরিষ্কার করে বললেন, এমন কোনো বিষয়ে তিনি কথাই বলেননি। এই মুহুর্তে টাইগার অধিনায়কের অবসরের প্রশ্নই ওঠে না। পাশাপাশি তাসকিন কান্ডে আইসিসির সমালোচনা করে এ নিয়ে ভবিষ্যতে আইসিসির ভেতর আরও লড়াই চালানোর ঘোষণা দিলেন। বিসিবি সভাপতির একান্ত সাক্ষাত্কার নিয়েছেন দেবব্রত মুখোপাধ্যায়।   সকাল থেকে আপনাকে উদ্ধৃত করে মাশরাফি-নাসির সম্পর্কিত কিছু খবর প্রচার হচ্ছে। আপনি কোনো এক ঘরোয়া আড্ডার ফাঁকে নাকি এসব বলেছেন?   প্রশ্নই আসে না। আমি এই ধরণের আড্ডার সময়ে কাউকে এরকম সাক্ষাতকার দেইনি। এখন কোথাও গেলে ক্রিকেট নিয়েই কথা হয়। সেখানে অন্য কারো মুখের কথা আমার কথা হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হতে পারে। বলা হচ্ছে, মাশরাফির পর অধিনায়ক কে, সেটা আপনারা ঠিক করে ফেলেছেন   দেখুন, মাশরাফির সাথে আমার সারাক্ষণ কথা হয়। শুধু বোর্ড সভাপতি ও অধিনায়ক হিসেবে নয়, আমি বিশ্বাস করি, আমাদের সম্পর্কটা আরও গভীর। অনেক কথা বলি আমরা। কালকে খেলার পরও মাশরাফি আমার সাথে কথা বলেছে। অধিনায়ত্ব ছেড়ে দিবে এমন কথা সে কখনই বলেনি; এ প্রসঙ্গে আলাপ তো দূরের থাক। আমার দৃঢ় বিশ্বাস মাশরাফি যদি নিজের থেকে কোন সিদ্ধান্ত নেয় সে সবার আগে অবশ্যই আমার সাথে কথা বলবে।   তাহলে মাশরাফির পরের অধিনায়ক নিয়ে ভাবছেনই না, তাইতো?   কেনো ভাববো! আমি তো চাই, মাশরাফি যতদূর সম্ভব চালিয়ে যাক। ও নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেবে। ওর মতো অধিনায়ক পাওয়া অনেক বড় ব্যাপার। ফলে এ নিয়ে এখন ভাবার কোনো কারণই নেই।   নাসির শৃঙ্খলাজনিত কারণে একাদশে জায়গা পাচ্ছে না, এমন কথাও উঠেছে   নাসিরের শৃঙ্খলা নিয়ে কোন আলাপ হয়নি। আমার সাথে পরশু দিন রাতে মাশরাফির কথা হয়েছে। দল নির্বাচন নিয়ে ও কথা বলছিলো। সে বলেছে নাসির অথবা সাকলাইন সজিব খেলবে। সে তখনও চূড়ান্ত করিনি। সিদ্ধান্তটা কিন্তু সম্পূর্ণ ম্যানেজমেন্টের। একাদশ গঠন, দল তৈরী, এসব কাজ অধিনায়ক ও কোচই করে।   তাহলে নাসিরের কোনো ডিসিপ্লিনারি সমস্যা নেই?   আমি এ নিয়ে কথা বলিনি, এটুকু বলতে পারি। আমি ওদের সাথে আলাপ করে যেটা জেনেছি নাসির ব্যাটিং ফর্মে নেই। আমাদের এখন টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটসম্যান বেশি দরকার। এখন ও যদি ব্যাটিং না করতে পারে তাহলে নিয়ে লাভ কি?  যে করতে পারে তাকেই নিবে। এটা সম্পূর্ণ অধিনায়কের ব্যাপার।   সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স কেমন দেখলেন?   বাছাই পর্বে সুন্দর খেলেছে। সুপার টেনে দুটি ম্যাচ ওরা খারাপ করেছে। পাকিস্তানের সাথে ম্যাচের দিন বোলিং খুব খারাপ হয়েছে। আর শেষ ম্যাচে ব্যাটিং খুব খারাপ হয়েছে। বোলিং ভালোই হয়েছে। ভারতের সাথে পরাজয়টা দুঃখজনক ছিলো।   শেষ ম্যাচটার ব্যাটিংয়ে কী একটু বিরক্ত হয়েছেন?   ঠিক তা বলবো না। ক্রিকেটে এমন হতে পারে। বাংলাদেশ তো এই মানের দল নয়। এটা একটা দূর্ঘটনা। ভারতের ম্যাচের পর ছেলেদের মনটা আবার ভেঙে গিয়েছিলো। উৎসাহ দরকার ছিলো। এখন কি করব বলেন? আপনি যদি কাউকে উৎসাহ দিতে চান তাহলে নিজের মধ্যেও উৎসাহ থাকা দরকার আছে। সেই উৎসাহটা আমাদের কারো ভেতরই ছিলো না।   তাসকিন ইস্যুতেই কী মূলত উৎসাহটা হারালেন? আপনাকে তো আমরা কখনো হতাশ হতে দেখি না এমনিতে...   না, হতাশাটা তো বেশী ছিলো ওই ১ রানে হারের জন্য। তবে তাসকিনের ইস্যুতে আমি খুব বিস্মিত হয়েছি, ধাক্কা খেয়েছি।   সেটা কী আমরা সেরা বোলারকে হারিয়েছি বলে?   সেই ধাক্কা তো ছিলোই। বিশ্বকাপে আমাদের প্রধান অস্ত্র ছিলো বোলিং। কারো সাথে কিন্তু আমরা আহামরি রান করতে পারি নাই। কোয়ালিফাই রাউন্ডে একটা ম্যাচ ছাড়া তেমন রান করতে পারিনি। ১৫০/১৬০ রান করেই আমরা জিতেছি। এটাই আমাদের অভ্যাস। সে দিক থেকে চিন্তা করলে আমাদের প্রধান অস্ত্র বোলিংয়ে সেখানে আমাদের ফর্মে থাকা খেলোয়াড় ছিলো তাসকিন।   তাসকিনকে নিষিদ্ধ করার ঠিক কোন প্রক্রিয়াটা নিয়ে আপনাদের আপত্তি?   ম্যাচের কোন বলে ওর সমস্যা ছিলো না। কিন্তু পরীক্ষায় সেটা (ম্যাচে না করা বল) করতে বলা হলো যা আমার কাছে খারাপ লেগেছে। এটা বিষ্ময়কর। ম্যাচে একজন যে বল করলোই না, সেই কাল্পনিক ডেলিভারির জন্য সে সন্দেহে পড়লো এবং শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ হলো! আমি তাদের বলেছি, এর আগে তো এমন কোন খেলোয়াড়ের শাস্তি হয়নি। আইসিসি পারলে আরেকজনের ক্ষেত্রে এরকম করে দেখাক যে কিনা ম্যাচে অবৈধ কোনো ডেলিভারি না করেই শাস্তি পাবে।   আপনি আইসিসির বোর্ড মেম্বর। একইসাথে আইসিসির গুরুত্বপূর্ন একটি কমিটির প্রধান। এখন নতুন তৈরী হওয়া রিভিউ কমিটিতেও আছেন। আমরা কী আশা করতে পারি যে, আইসিসিতে আপনি এ নিয়ে স্বোচ্চার হবেন?   অবশ্যই। একবার যখন আমি কথা বলেছি, এটা থামবে না। আইসিসিতে এ নিয়ে কথা হবে। আমার কথা একটাই—আমাদের সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দাও। আমি চাই যে, আইসিসির প্রতিটা পদক্ষেপ স্বচ্ছ হবে, সবাই বুঝতে পারবে। সে জন্যই কাজ করে যাবো।