৫০তম ম্যাচে আজ সিরিজ নির্ধারণ

জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সর্বশেষ ম্যাচ আজ। দুই কারনে আজকের ম্যাচটি মহিমান্বিত। এক, ২-১ ব্যাবধানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশকে সিরিজ জিততে হলে আজকের ম্যাচটি জিততেই হবে। অপর কারণটি হলো আজ বাংলাদেশ ৫০তম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নামছে।
২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে নিয়মিত টেস্ট ও ওয়ানডে অধিনায়ক হাবিবুল বাশার খেলেননি, অধিনায়কত্ব করেছিলেন শাহরিয়ার নাফীস। তার সঙ্গে ওপেন করেছিলেন নাজমুস সাদাত। সেই প্রথম এবং শেষ জাতীয় দলে খেলেছিলেন এই মারকুটে বাঁহাতি ওপেনার।
টেস্ট খেলা দেশগুলোর মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের জয়ের হার সর্বনিম্নের এক ধাপ ওপরে, ৩১.১৫%, আরো ভেঙে বললে ৪৯ ম্যাচের মাত্র ১৫টিতে জয়। বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টিতে হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, স্কটল্যান্ড এমনকি হংকংয়ের মতো দলও। বিশেষ করে দেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টির বিশ্ব আসরে হংকংয়ের কাছে হারের লজ্জা তো মেনে নেওয়াই কষ্টকর, কারণ ওয়ানডে মর্যাদা পাওয়ার আগে সেই অপেশাদার সময়েও তো হংকংয়ের কাছে হারেনি বাংলাদেশ। প্রথাগত এ চিন্তা-ভাবনায় ঘুরেফিরে প্রাপ্তির খাতাটা শূন্য, তখন মাশরাফি ও চন্দিকা হাতুরাসিংহে চেয়েছেন এবারের টি-টোয়েন্টির বিশ্ব আসরের আগে একটু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে। বিপিএলে সফল খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে সুযোগ দিতে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুটো টি-টোয়েন্টি জিতে সিরিজ না হারাটা নিশ্চিত করার পর তৃতীয় ম্যাচটা হেরেছে বাংলাদেশ, ৩১ রানে। তাতে পাঁচটা পরিবর্তনের জের ধরেই অনেক লঙ্কাকাণ্ড। কাল দুপুরে টিম হোটেলে হয়েছে পর্যালোচনা বৈঠক, যেখানে কোচ এবং অধিনায়কের কাছে অদল-বদলের ব্যাখাও চাওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে জনপ্রিয় রাজনীতির ধারারই জয়, তাতে সিরিজ জয়ের ম্যাচে দুটো পরিবর্তন আসছেই। যদিও মাঠের খেলায় পরিকল্পনাগুলো কাজে না লাগাতে পারলে কোনো পরিবর্তনই কাজে দেবে না! ২০০৬ সালে এ মাঠেই খেলা বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে তো দলের কারোরই আগে টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা ছিল না, উল্টোদিকে জিম্বাবুয়ে দলও ব্রেন্ডন টেলরসহ কয়েকজনকে নিয়ে বর্তমান দলের চেয়ে ছিল শক্তিশালী। তবু বাংলাদেশ জিতেছিল মাঠের খেলায় ভালো করেই। ৫০তম টি-টোয়েন্টির সঙ্গে সিরিজ জিততেও খেলতে হবে শ্রেয়তর ক্রিকেট।
আসন্ন সন্তানের জন্মের সময় পাশে থাকার জন্য খুব সম্ভবত এশিয়া কাপে খেলবেন না তামিম, সে জন্যই ইমরুলকে তৈরি রাখতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে নেয়া হয়েছিল। তবে হারের পর সম্ভবত এক ম্যাচ খেলেই জায়গা হারাচ্ছেন ইমরুল। একই কারনে তামিমকেই আজ তাকেই দেখা যাবে সৌম্য সরকারের সঙ্গে ইনিংসের গোড়াপত্তনে। মোসাদ্দেক হোসেন বোধ হয় আরেকটি সুযোগ পাচ্ছেন। মাত্র এক ম্যাচ দেখেই তাঁকে দল থেকে বাদ দিতে অনিচ্ছুকই শোনাল অধিনায়ককে। তবে জায়গা হারাতে পারেন মুক্তার আলী। তাঁকে দলে নেওয়া নিয়েই বড় অনুযোগ ছিল বোর্ড প্রেসিডেন্টের। মুক্তারের বদলে আরাফাত সানিকেই দলে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তিনে সাব্বির রহমান প্রথম তিনটা ম্যাচেই ভালো করেছেন, তবে এ জায়গাটা হাতছাড়া হওয়ায় অস্বস্তিতে আছেন সাকিব আল হাসান। কোচের যুক্তি মেনে নিয়ে দলের প্রয়োজনে যেকোনো জায়গায় ব্যাট করাতে আপত্তি নেই সাকিবের। তবে অধিনায়ককে শুধু বলেছেন, আরো বেশি করে অবদান রাখতে চান দলের জন্য। টি-টোয়েন্টিতে তিনে নেমেই সফল সাকিব, পাঁচটা হাফসেঞ্চুরি আর গড়টাও স্বাস্থ্যবান। তাই জয়ের সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য সাকিবকে ব্যাটিং অর্ডারের উপরে আনা হতে পারে। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের রান উৎসবেও সাকিব পেয়েছিলেন ৩ উইকেট। মোহাম্মদ শহীদের জায়গায় দেখা যেতে পারে তাসকিন আহমেদকে।
সিরিজ জয়ের ম্যাচ বলে বাড়তি কোনো চাপ আছে বলে মানেন না মাশরাফি। প্রতিটি ম্যাচেই মাঠে নামেন জয়ের জন্য, আজও ব্যতিক্রম হবে না। আজ পঞ্চাশতম টি-টোয়েন্টি খেলতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচের হাফসেঞ্চুরি জয় দিয়েই উদযাপিত হোক।