English Version
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৯ ১১:৩২

কোম্পানির প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা

অনলাইন ডেস্ক
কোম্পানির প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা

পুঁজিবাজারে আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন। বেশিরভাগ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় শেয়ারের দাম বৃদ্ধির কোনো সামঞ্জস্য থাকে না। অর্থাৎ কোম্পানিগুলো যে ইপিএস প্রকাশ করে, তার তুলনায় শেয়ারের দাম অনেক বেড়ে যায়। আবার যেসব কোম্পানির ইপিএস ভালো, সেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম সেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ পুঁজিবাজার ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা। এখানে দেখেশুনে বিনিয়োগ করতে হবে। সেটি হতে হবে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ। মঙ্গলবার এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।

হাসিব হাসানের গ্রন্থনা ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আইসিএবির কাউন্সিল সদস্য সাব্বির আহমেদ, এফসিএ এবং পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু সাঈদ আহমেদ, এফসিএ।

সাব্বির আহমেদ বলেন, নির্বাচনের আগে কয়েক মাস পুঁজিবাজার নিম্নগতিতে ছিল। সূচক, গড় লেনদেন, বাজার মূলধন অনেক কম ছিল এবং বিনিয়োগকারীরাও একটি অনিশ্চয়তার ভেতরে ছিলেন। নির্বাচনের পর অর্থাৎ চলতি বছরের শুরু থেকেই সূচক, দৈনিক গড় লেনদেন এবং বাজার মূলধন ঊর্ধ্বমুখী গতিতে ফেরে। এরই ধারাবাহিকতায় পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে হলে পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়াতে হবে; অর্থাৎ ভালো মানের কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আসলে দেশের অর্থনীতির তুলনায় পুঁজিবাজার অনেক ছোট। আবার পুঁজিবাজারে মৌলভিত্তির কোম্পানির তুলনায় স্বল্প মূলধনি কোম্পানির পরিমাণ বেশি। মৌলভিত্তির কোম্পানি অনেক কম। পুঁজিবাজারে আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন। বেশিরভাগ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের সঙ্গে শেয়ারের দাম বৃদ্ধির কোনো সামঞ্জস্য থাকে না। অর্থাৎ কোম্পানিগুলো যে ইপিএস প্রকাশ করে, তার তুলনায় শেয়ারের দাম অনেক বেড়ে যায়। আবার যেসব কোম্পানির ইপিএস ভালো, সেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম সেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ পুঁজিবাজার হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা। তাই বিনিয়োগকারীকে দেখেশুনে বিনিয়োগ করতে হবে। তবে সেটি হতে হবে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ।

আবু সাঈদ আহমেদ বলেন, দেশের অর্থনীতির সব সূচক ইতিবাচক এবং অর্থনীতি আরও উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ। অর্থাৎ খেলাপি ঋণের টাকা কোন খাতে বা কোথায় কত বিনিয়োগ হয়েছে জানি না। এখন কথা হচ্ছে, যদি এই খেলাপি ঋণের টাকা ফিরিয়ে আনা যায়, তবে দেশের অর্থনীতির জন্য আরও ভালো হবে। তবে এখানে দুটি বিষয় অত্যন্ত জরুরি। তা হচ্ছে সুশাসন ও নৈতিকতা। কারণ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে। এরই মধ্যে নতুন অর্থমন্ত্রী বলেছেন, খেলাপি ঋণের পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ে আনা এবং কীভাবে এই অর্থ আদায় করা যায় সেটির ওপর জোর দেবেন। এখন কতটুকু আদায় করতে পারবে সেটাই দেখার বিষয়।

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করতে হবে। অর্থাৎ যারা স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগ করবেন, তাদের স্বল্পমেয়াদি চিন্তাভাবনা থাকতে হবে। আবার যারা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করবেন, তাদের দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা করতে হবে। কিন্তু দেশের পুঁজিবাজারের আচরণ বোঝা খুবই কষ্টকর এজন্য যে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সঠিক আচরণ করেন না।