English Version
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৪:১৫

শেয়ারের দরবৃদ্ধিতে যে খাত সবচেয়ে এগিয়ে

অনলাইন ডেস্ক
শেয়ারের দরবৃদ্ধিতে যে খাত সবচেয়ে এগিয়ে

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। এ ছাড়া সব খাতের বাজার মূলধন বেড়েছে। তবে শেয়ারের দরবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো। চলতি বছরের মাত্র ২০ কার্যদিবসে সাধারণ বীমা কোম্পানির শেয়ার থেকে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ২৫ শতাংশ মূলধনী মুনাফা এসেছে। এ সময়ে এ খাতের কোনো কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের মূলধনী মুনাফা এসেছে শতভাগের বেশি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন পর্যালোচনায় এমন তথ্য মিলেছে।

২০১৮ সালে ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে বিপর্যয়ের কারণে সাধারণ বীমা খাতে বিনিয়োগকারীদের প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ লোকসান হয়েছিল। তবে চলতি বছরের শুরু থেকে বীমা খাতের শেয়ারে চাঙ্গাভাব লক্ষ করা গেছে। এতে মাত্র ২০ কার্যদিবসে এ খাত থেকে বিনিয়োগকারীরা ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ মূলধনী মুনাফা অর্জন করেছেন। যদিও বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর মৌলভিত্তিতে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে হিসাব বছর শেষ হওয়ায় লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে খাতটি। তবে ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণের বীমা কোম্পানির আয় কমেছে।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছর সাধারণ বীমা খাতের কোনো কোনো কোম্পানি থেকে বিনিয়োগকারীরা শতভাগের বেশি মূলধনী মুনাফা পেয়েছেন। চলতি বছরের শুরুতে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দর ছিল ১৭ টাকা ৬০ পয়সা, যা গতকাল ৩৭ টাকা ৬০ পয়সায় উন্নীত হয়। এতে এ কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে প্রায় ১১৪ শতাংশ। গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরে রয়েছে এ কোম্পানির শেয়ারদর। বিপরীতে ২০১৮ সালের হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ শতাংশ কমেছে।

সাধারণ বীমা খাতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের। মাত্র ২০ কার্যদিবসে এ শেয়ারের দর বেড়েছে ১৫৭ শতাংশ। চলতি মাসে লেনদেনের বেশির ভাগ সময়ই এ শেয়ারে বিক্রেতার অভাবে হল্টেড ছিল। গত দুই বছরের মধ্যে এ কোম্পানির শেয়ারের দর কখনোই ৩২ টাকার বেশি ওঠেনি। ২০১৮ সালের হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে এ কোম্পানির ইপিএস বেড়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। শেয়ারে বড় ধরনের মূল্য বৃদ্ধিতে কারসাজির আশঙ্কা করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে সাধারণ বীমা খাত থেকে আকাশচুম্বী মূলধনী মুনাফা হলেও জীবন বীমা কোম্পানি থেকে উল্লেখযোগ্য মুনাফা আসেনি। চলতি বছরের ২০ কার্যদিবসে এ খাত থেকে বিনিয়োগকারীদের রিটার্ন এসেছে আড়াই শতাংশ। ২০১৮ সালে এ খাত থেকে বিনিয়োগকারীরা প্রায় ২৪ শতাংশ মূলধনী মুনাফা পেয়েছিলেন। সাধারণ বীমা খাতের পর চলতি বছরের ২০ কার্যদিবসে বিনিয়োগকারীরা মূলধনী বেশি পেয়েছেন ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে। চলতি মাসের ২০ কার্যদিবসে এ খাত থেকে মূলধনী মুনাফা এসেছে ১৪ শমিক ৯ শতাংশ। এ ছাড়া সেবা ও নির্মাণ, ব্যাংক, জ¦ালানি, সিরামিক ও বিবিধ খাত থেকে ৮ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত মূলধনী মুনাফা এসেছে।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, আগের বছরের তুলনায় ২০১৮ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে আয় কমলেও এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দর ২০ কার্যদিবসে ৬৫ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। এ সময়ে সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৪৮ শতাংশ। ২০১৭ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের তুলনায় ২০১৮ সালের একই সময়ে নিট মুনাফা অর্ধেক কমে গেলেও সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর চলতি মাসে বেড়েছে ৫৩ শতাংশ। কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৪০ শতাংশ।

মৌলভিত্তিতে কোনো পরিবর্তন কিংবা মূল্য সংবেদনশীল কোনো তথ্য না থাকার পরও অব্যাহতভাবে বাড়ছে সাধারণ বীমা কোম্পানির শেয়ারের দর। দরবৃদ্ধিতে ডিএসইর নোটিসের জবাবে সব কোম্পানিই জানিয়েছে যে, কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।

২০১৮ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের আয় বেড়েছে দেড় শতাংশ। তবে গত ২০ কার্যদিবসে কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে ৫৭ শতাংশ। একই সময়ে ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সে আয় বেড়েছে সাড়ে ৪ শতাংশ। আর চলতি মাসে এ শেয়ারে মূলধনী মুনাফা এসেছে ৭১ শতাংশ। ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সে মূলধনী মুনাফা এসেছে ৩৮ শতাংশ। পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দর বেড়েছে ৩৯ শতাংশ।

অব্যাহতভাবে শেয়ারদর বাড়ায় চলতি মাসে সাধারণ বীমা কোম্পানির বাজার মূলধন বেড়েছে এক হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। লেনদেনেও শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছে খাতটি। গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ এসেছে এ খাত থেকে।