English Version
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৫:৩৮

ঝুকিকে জুয়া বলা যাবে না: শাকিল রিজভী

মোহাম্মদ অানিসুজ্জামন
ঝুকিকে জুয়া বলা যাবে না: শাকিল রিজভী

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী বলছেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে ঝুঁকি আছে। শুধু এখানেই নয় সব বিনিয়োগই ঝুকি রয়েছে। এটাই স্বাভাবিক। তবে এ ঝুঁকিকে জুয়া বলা যাবে না।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মতিঝিলে ডিএসইর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক শাকিল রিজভী।

বিনিয়োগ ঝুঁকি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারসহ যেকোন স্থানে বিনিয়োগে ঝুকি বিদ্যমান। ঝুকি না থাকলে সেটা বিনিয়োগ নয়। তবে আমরা পুঁজিবাজারে কাজ করছি যেন ঝুকির মাত্রা কমিয়ে আনা যায়। উদাহরনস্বরুপ বলেন, গাছ লাগাবেন সেখানে বন্যায় তলিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। আবার বাড়ী নির্মান করবেন সেখানেও তা ভূমিকম্পে ধসে পরতে পারে। তাই বলে, বিনিয়োগ বন্ধ করবেন?

বাজারে আস্থার সংকট নেই উল্লেখ করে শাকিল রিজভী বলেন, ‘বাজারে এখন দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারিই বেশি। ডে-ট্রেড বিনিয়োগকারি খুব একটা নেই।’

বিনিয়োগ প্রসঙ্গে শাকিল রিজভী বলেন, অতীতের তুলনায় বর্তমানে ডিএসইতে বিনিয়োগ বেড়েছে। পাশাপাশি মূলধনও বেড়েছে। এবং সামনে আরও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

এক প্রশ্নের উত্তরে ডিএসইর পরিচালক কায়কোবাদ বলেন, ‘সফটওয়ারের যে সমস্যা হচ্ছে তা সমাধানের সক্ষমতা আমাদের নেই। সফটওয়ার নির্মাতা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা সমস্যা সমাধানে কাজ করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর সফটওয়ার সমস্যা নিয়েও কথা হয়। এ বিষয়ে ডিএসই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবার সফটওয়ারের কারিগরি ত্রুটির কারণে ২৯টি ব্রোকার হাউসে লেনদেনে সমস্যা হয়। সফটওয়ারের এ সমস্যার ‘রুট কজ’ খুঁজে বের করতে কাজ চলছে।

এদিকে গতকাল দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রায় ৩০টি ব্রোকারেজ হাউসে লেনদেনে বিঘ্ন হয়েছিল। এদের মধ্যে একেবারে লেনদেন হয়নি এমন ব্রোকারেজ হাউসও রয়েছে। কিন্তু ওই দিনেই এ বিঘ্ন প্রসঙ্গে ডিএসই’র কর্তৃপক্ষ জানান, মোবাইল অ্যাপস পরীক্ষামূলক হিসেবে ১ নং সাইলোতে সংযোজন করা হয়েছে। এটি করতে গিয়েই সাইলোর সঙ্গে সম্পর্কিত ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে লেনদেনে সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে গত বুধবার ডিএসই’র বেশ কিছু হাউজে লেনদেনে বিঘ্ন হয়। এদিনে ডিএসইর লেনদেন নেমে এসেছে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে। দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৩৫৮ কোটি টাকা। যা গত ১ মাসের মধ্যে ডিএসইর সর্বনিম্ন লেনদেন বলে জানান তারা।

ডিএসই’র সূত্রে জানা যায়, ব্রোকারেজ হাউসগুলোর ব্যাক অফিস ডাটা সেন্টার থেকে প্রতিদিন লেনদেন শুরুর আগে স্টক এক্সচেঞ্জের একটি তথ্য সিস্টেমে পাঠানো হয়। এ তথ্য সিস্টেমটি হচ্ছে ‘সাইলো।’ ২৪০টি ব্রোকারেজ হাউসের জন্য মোট ৮টি সাইলো রয়েছে। প্রতিটি সাইলোতে ৩০টি করে ব্রোকারেজ হাউসের গ্রাহকের কোড, শেয়ার ও শেয়ারক্রয়ের সীমার তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। বুধবার ১নং সাইলোর সঙ্গে যে সব ব্রোকারেজ হাউসগুলো যুক্ত ছিল সে সব ব্রোকারেজ হাউসেই লেনদেনে বিঘ্ন ঘটে। এ কারণে ডিএসইর প্রায় ত্রিশ হাউজে লেনদেনে বিঘ্ন ঘটছে।

লেনদেনে বিঘ্ন ঘটার বিষযে ডিএসইর এক উধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, মোবাইলে লেনদেন চালু করার লক্ষ্যে ডিএসই মোবাইল অ্যাপস চালু করছে। এ লক্ষ্যে মোবাইল অ্যাপসটি টেস্ট রান (পরীক্ষামূলকভাবে) হিসেবে ১নং সাইলোতে সংযোজন করা হয়েছে। কিন্তু এটি করতে গিয়েই ১নং সাইলোর সঙ্গে সম্পর্কিত ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে লেনদেনে সমস্যা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা কিছু কিছু ব্রোকারেজ হাউসের সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হয়েছি। কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের সমস্যার সমাধান করলেও পরবর্তী সময়ে ফের সমস্যার মুখে পড়েছে তারা। আবার কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসে সমস্যার কারণে আদৌ কোনো লেনদেন হয়নি। উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট ভেন্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে চেষ্টা চালানো হচ্ছে তবে বেলা দেড়টা পর্যন্ত সমস্যা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।

কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা এর আগে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে মক ট্রেডিং করেছি, তাতে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। কিন্তু পরীক্ষামূলকভাবে লেনদেন সময়ে এটি করতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। তিনি বলেন, ধাপে ধাপে ৮টি সাইলোতে মোবাইল অ্যাপসটি সংযোজন করে পরীক্ষা করে দেখা হবে। কিন্তু তার আগে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করতে হবে জানা তিনি।