English Version
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ১০:১৫
সূত্র:

চকবাজারে আগুন, প্রাণ গেল ৭৬ জনের

চকবাজারে আগুন, প্রাণ গেল ৭৬ জনের

রাজধানীর চকবাজারের পাঁচটি ভবনে লাগা ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। প্রায় ৫ ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত ৩টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তবে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আরও সময় লাগবে বলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর থেকেই চলছে লাশের সন্ধান। একের পর এক লাশ বের করা হচ্ছে। নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। এখন পর্যন্ত অন্তত৭৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া মরদেহের মধ্যে ৪৮ পুরুষ ৫ জন নারী ও ২ জন শিশু রয়েছে।

চুড়িহাট্টায় ফায়ার সার্ভিসের অস্থায়ী তথ্য কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার অভিযানে ৬৯টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও সার্চিং অভিযান চলছে। প্রতিটি বিল্ডিংয়ের প্রতিটি কক্ষ তল্লাশি শেষে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে পুরো তথ্য দেয়া সম্ভব হবে।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্নেল জুলফিকার বলছেন, এক একটি ব্যাগে একাধিক লাশ থাকতে পারে। তিন বলছেন ভেতরে আরো অনেক লাশ থাকতে পারে।

বুধবার রাত তখন দশটা, অন্যান্য দিনের মতই রাজধানীর চকবাজারের চুরিহাট্টা মসজিদের গলিতে লেগে আছে যানজট। হঠাৎ করেই বিকট শব্দে কেঁপে উঠে আশপাশের এলাকা। মসজিদের পাশের ওয়াহেদ ভবন থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের বেশ কয়েকটি বাসা বাড়িসহ কয়েকটি খাবার হোটেলে।

একই সাথে যানজটে আটকে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। চারতলা আবাসিক ওই ভবনটির নিচতলায় কেমিক্যাল গুদাম থাকায় আগুনের ভয়াবহতা দ্রুত বাড়তে থাকে। একের পর এক বিকট শব্দে কেঁপে উঠে পুরো এলাকা।

আগুনের খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৩৭টি ইউনিট। আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার পাশাপাশি, শুরু করে আটকা পড়াদের উদ্ধার কাজ। সরিয়ে নেয়া হয় আশপাশের ভবনের বাসিন্দাদের। কিন্তু এলাকার সড়ক সরু হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের বেশ বেগ পেতে হয় উদ্ধার তৎপরতায়।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের শতাধিক কর্মীসহ অনেকেই এখানে কাজ করছেন। নগরবাসী, দেশবাসী সবার দোয়া চাচ্ছি, যাতে করে সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করতে পারি।

এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের লক্ষ্য হলো আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা। যারা আহত হয়েছেন তাদের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর আমরা ঘটনার তদন্ত করব। কেন, কিভাবে আগুন লেগেছে সে সম্পর্কে জানাতে পারব।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আমি বাসায় ছিলাম, আগুন আগুন বলে চিৎকার শুনে আমার ছোট মেয়েকে কোলে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যাই। এখানের অলিতে গলিতে বিভিন্ন ধরনের মালামাল ছিল। প্রায় সবই পুড়ে গেছে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৩ জুন নিমতলীর ৪৩/১ নবাবকাটরায় পাঁচতলা বাড়িতে স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ঘটনায় হারাতে হয় ১২৩ জনকে। আহত হয় কয়েক শ মানুষ।

আপনজন হারিয়ে নিঃস্ব হতে হয় অনেক পরিবারকে। মূলত কেমিক্যাল গোডাউনের আগুনেই ওই দিনের অগ্নিকাণ্ডটি ঘটে। গোডাউনের অতি দাহ্য রাসায়নিক পদার্থের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।