English Version
আপডেট : ৩০ জুলাই, ২০১৮ ১৬:২১

রেললাইনে অবরোধ, রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ

অনলাইন ডেস্ক
রেললাইনে অবরোধ, রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ

স দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যুর প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শেওড়া রেলগেটে রেললাইনের উপরে অবস্থান নিয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে দুপুর দেড়টা থেকে ঢাকার সঙ্গে সব ধরনের রেল চলাচল বন্ধ রেখেছে রেল কর্তৃপক্ষ।   সোমবার (৩০ জুলাই) দুপুরে ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোজাম্মেল হোসেন এ খবর নিশ্চিত করেন।

এর আগে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা এবং বেপরোয়া গাড়ি চালকদের ফাঁসির দাবিসহ ৯ দফা দাবি জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটার দেয় আন্দোলনকারীরা।

শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি:

১. বেপোরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই শাস্তি সংবিধানে সংযোজন করতে হবে। ২. নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর গতকালের বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ৩. শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে। ৪. প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাতে স্পিড ব্রেকার দিতে হবে। ৫. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। ৬. শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে, থামিয়ে তাদের বাসে তুলতে হবে। ৭. শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ৮. ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবে না। ৯. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।

শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের শিক্ষক, র‌্যাব-পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অবরোধ কর্মসূচিতে অনড় রয়েছেন।

র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) আনোয়ার লতিফ খান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “গতকালের দুর্ঘটনার পর থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে জড়িত তিনটি বাসের তিনজন ড্রাইভার ও দুইজন সহকারীকে আটক করা হয়েছে। আমি তোমাদের আশ্বস্ত করতে চাই দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তোমরা আন্দোলন প্রশমিত করো।”

সোমবার (৩০ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের সামনের রাস্তায় মানববন্ধনে দাঁড়াতে গেলে পুলিশের বাধায় শুরুতে তাদের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়।

এরপর কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনে রাস্তা অরবোধ করতে গেলে সেখান থেকেও ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। এ সময় উত্তরাগামী বাস থামিয়ে বেশকিছু শিক্ষার্থীকে পুলিশ সদস্যরা জোর করে বাসে তুলে দেয় বলে অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা।   এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের সামনে ফের জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় তাদের চারপাশ থেকে ঘিরে রাখেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসে বিক্ষোভে অংশ নিতে থাকে। দুপুর ১২টা নাগাদ বিএএফ শাহীন কলেজ, ভাষানটেক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট, তেজগাঁও কলেজ, বাংলা কলেজ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বিমানবন্দর সড়কের উভয় পাশ বন্ধ করে দেয়।

গতকাল রোববার (২৯ জুলাই) কুর্মিটোলায় বাস চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয় আরো বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।