English Version
আপডেট : ২ মার্চ, ২০১৬ ১২:০০

বনশ্রীতে দুই শিশু হত্যার দায়ে আটক বাবা-মা

নিজস্ব প্রতিবেদক
বনশ্রীতে দুই শিশু হত্যার দায়ে আটক বাবা-মা
বনশ্রীর দুই শিশু হত্যার ঘটনায় তাদের বাবা-মাকে আটক করেছে র‌্যাব।  পাশাপাশি খালা মিলিকে আটক করা হয়। বুধবার সকাল ১১টায় জামালপুরের একটি বাসা থেকে অধিনায়ক মোস্তাক আহমেদের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল তাদের আটক করে। আটককৃতদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছে র‌্যাব-৩।
গত সোমবার বনশ্রীর বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় দুই শিশুকে ঢামেক নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। সেসময় খাবারের বিষক্রিয়ায় দুইশিশু মারা গেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা এটাকে হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছেন।
 
ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার দুপুরে চিকিৎসকরা বলেন, দুই ভাইবোন নুসরাত জাহান অরুনী (১২) ও আলভী আমানের(৬)  তাদের গলায় আঙুলের ছাপ, শরীরের কয়েক স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও জখম আছে। আঘাতজনিত কারণ ও অক্সিজেনের অভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
 
তবে শিশু দুটির বাবা আমান উল্লাহ ও মা মাহফুজা মালেক জেসমিন দাবি করেন, বনশ্রীর এক চাইনিজ রেস্টুরেন্টের খাবার খেয়ে সোমবার দুপুরে নুসরাত ও আলভী বাসায় ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর আর জেগে ওঠেনি। বিষক্রিয়ায় তারা মারা গেছে। মা-বাবা এ দাবি করলেও সোমবার রাতে হাসপাতালে তাদের আচরণ ছিল রহস্যজনক।
 
আর মঙ্গলবার সকালে তারা হাসপাতালে সন্তানদের লাশের কাছে না গিয়ে গ্রামের বাড়ি জামালপুরে চলে যান। তারা লাশের ময়নাতদন্ত করতেও রাজি ছিলেন না। পুলিশের চাপের মুখে সম্মতি দেন। এ নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। পরিবারের দাবির ভিত্তিতে ওই চাইনিজ রেস্টুরেন্টের তিন কর্মচারীকে সোমবার রাতে আটক করে রামপুরা থানা পুলিশ। দণ্ডবিধির ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে মঙ্গলবার পুলিশ তাদের আদালতে পাঠিয়েছে। তারা হলেন- রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার মাসুদুর রহমান, বাবুর্চি আসাদুজ্জামান ও আতাউর রহমান। গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত জোড়া মৃত্যুর ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি। তবে ময়নাতদন্তে হত্যার আলামত পাওয়ার পর দুই শিশুর গৃহশিক্ষিকাসহ পাঁচজনকে র‌্যাব ৩-এর সিপিসি-১ (খিলগাঁও) কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাত ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল। পারিবারিক সূত্র জানায়, বনশ্রীর বি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ৯ নম্বর বাড়ির ৫/এ ফ্ল্যাটে স্ত্রী, দুই সন্তান ও মা হাসনাকে নিয়ে ভাড়া থাকেন আমান উল্লাহ। তিনি বাড্ডায় গার্মেন্ট এক্সেসরিজের ব্যবসা করেন। তার মেয়ে নুসরাত ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সিদ্ধেশ্বরী শাখায় ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী ও ছেলে আলভী বনশ্রীর হলি ক্রিসেন্ট স্কুলের নার্সারির ছাত্র। সোমবার সন্ধ্যায় বাসা থেকে তাদের অচেতন অবস্থায় প্রথমে আল-রাজী হাসপাতালে ও পরে রাত ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।