English Version
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ২০:২৪

যেভাবে তৈরি হয় ভেজালমুক্ত খাঁটি খেজুরের গুড়

অনলাইন ডেস্ক
যেভাবে তৈরি হয় ভেজালমুক্ত খাঁটি খেজুরের গুড়

বদলে যাচ্ছে পৃথিবী, বদলে যাচ্ছে দেশ। সব বদলে গেলেও অনেক কিছুই হয়তো এখনও বদলাতে পারেনি। তেমনি এক বাংলার ঐতিহ্য খেজুরের গুড়।

চিরাচরিত সনাতন পদ্ধতিতে মাটির ভাঁড়ে রাতভর রস সংগ্রহ করা হয়। ভোরের সূর্য ওঠার আগে গাছিরা রসভর্তি মাটির ভাঁড় গাছ থেকে নামিয়ে পরে মাটির হাঁড়িতে কিংবা টিনের বড় তাওয়ায় জ্বাল দিয়ে গুড়-পাটালি ও লালি তৈরি করেন। নতুন খেজুর রসের গুড়- পাটালি তৈরির পর তা চলে যাচ্ছে বাজারে। রস সংগ্রহ, গুড় তৈরি ও বাজারে বিক্রি করতে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন গাছিরা।

আজ আমরা নকলের ভিড়ে আসল খেজুরের গুড় কিভাবে তৈরি হয় তা দেখতে নাটোর জেলায়।

সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গাছিরা ছুটেন খেজুরের রস সংগ্রহে। সারি সারি গাছে ঝুলিয়ে রাখা মাটির হাঁড়িতে সারা রাত ফোটা ফোটা করে জমা রস নামাতে থাকেন গাছিরা। এরপর জড়ো করেন রসের হাঁড়িগুলো।

রস সংগ্রহ শেষ হলে হাঁড়িগুলো নিয়ে ছোটেন চুলার কাছে। ছাকনিতে ঢেলে চুলার উপর বড় বড় টিনের পাত্রে জমিয়ে গুড় তৈরির পালা শুরু হয়। খড়কুটোয় ঘণ্টা খানেকের জ্বালে রস ঘন হয়।

জ্বাল দিতে দিতে একসময় উপরের দিকে উঠে আসে ফ্যানা বা ময়লা জাতীয় কিছু। এগুলোকে ছেকে ফেলে দিতে হয়। যখন ঘন হয়ে যায় তখন এটাকে ঘন ঘন নাড়তে হয়। নাড়তে নাড়তে এটা চুলা থেকে নামানোর সময় চলে আসে।

চুলা থেকে নামিয়ে কিছু অংশ নিয়ে তৈরি করা হয় বীজতলা । বীজতলা তৈরির হলে তা সবগুলো রসের সাথে মিশানো হয়। এটা দেওয়া হয় গুড়কে শক্ত করার জন্য। কিছুক্ষন নাড়াচাড়া করার পর আরেকটি মাটির পাত্রে ঢালা হয়। এবং আবার একটি বাশ বা কাঠের কঞ্চি দিয়ে নাড়া হয়।

নাড়তে নাড়তে একসময় আগে থেকে বিছানো ছোট ছোট পাত্রে ঢালার উপযুক্ত হয়। গরম ঘন রস নামিয়ে ছোট ছোট ছাঁচে ঢেলে গুড়ের চাকা তৈরি করা হয়। ঠাণ্ডা হলেই শক্ত গুড়ে রূপ নেয়। এভাবে তৈরি হয় খাটি ভেজালমুক্ত খেঁজুরের গুড়।