বজ্রপাত থেকে বাঁচতে যা করবেন

গ্রীষ্মকালের বাইরে বের হলেই প্রচণ্ড গরম। গ্রীষ্মকালে মাঝেমধ্যে বয়ে যায় প্রাণ ঠাণ্ডা করা দমকা হাওয়া। এর পরেই চলছে বৈশাখ মাস। থেকে থেকে রোদ আবার কখনও মুষলধারে বৃষ্টি ও বজ্রপাত। তবে এই বজ্রপাত হয়ে উঠতে পারে প্রাণঘাতী। বিশেষ ঘরে গ্রামের বাড়িতে বজ্রপাতে অনেক মানুষ মারা যায়। বৈশাখী ঝড়ের পরের দিন সকালে খবরের কাগজ খুললে প্রায় প্রতিদিনই বজ্রপাতে নিহতদের খবর পাওয়া যায়। তবে আপনি জানে কি এই বজ্রপাতের হাত থেকে বাচার কিন্তু উপায় আছে। শুধু অজ্ঞতার কারণে বজ্রপাতে মারা যায় অনেকে।
সাধারণত মার্চ থেকে মে এবং অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বজ্রঝড় হয়ে থাকে। বজ্রপাতের সময় পাকাবাড়ির নিচে আশ্রয় নিতে এবং উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এ সময় জানালা থেকে দূরে থাকার পাশাপাশি ধাতব বস্তু এড়িয়ে চলা, টিভি-ফ্রিজ না ধরা, গাড়ির ভেতর অবস্থান না করা এবং খালি পায়ে না থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
বজ্রপাত কেন হয়?
বায়ুমণ্ডলে বাতাসের তাপমাত্রা ভূ-ভাগের উপরিভাগের তুলনায় কম থাকে। এ অবস্থায় বেশ গরম আবহাওয়া দ্রুত উপরে উঠে গেলে আর্দ্র বায়ুর সংস্পর্শ পায়। তখন গরম আবহাওয়া দ্রুত ঠাণ্ডা হওয়ায় প্রক্রিয়ার মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়ে বজ্রমেঘের সৃষ্টি হয়। তখনই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। আর এ বজ্রপাতের কারণে প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
আসুন জেনে নিই বজ্রপাত থেকে বাচতে যা করবেন-
গাছের নিচে নয় দালানের নিচে আশ্রয় নিন
ঘন ঘন বজ্রপাতের সময় খোলা বা উঁচু জায়গায় না থেকে দালানের নিচে আশ্রয় নিন। বজ্রপাতের সময় উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বিদ্যুৎস্পর্শের সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ সময় গাছ বা খুঁটির কাছাকাছি থাকা নিরাপদ নয়। ফাঁকা জায়গায় যাত্রী ছাউনি বা বড় গাছে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে। তাই এসব স্থান এড়িয়ে চলুন।
ঘরের জানালা
বজ্রপাতের সময় ঘরের জানালার কাছে উঁকিঝুঁকি মারা থেকে বিরত থাকুন। বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকুন। ল্যান্ডফোন ব্যবহার থেকেও বিরত থাকুন।
ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতির প্লাগ খুলে রাখুন
বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব ধরনের যন্ত্রপাতি এড়িয়ে চলুন। বজ্রপাতের আভাস পেলে যন্ত্রপাতির প্লাগ খুলে রাখুন। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও স্পর্শ করা ঠিক হবে না।
বজ্রপাতে গাড়ির ভেতরে থাকবেন না
বজ্রপাতের সময় গাড়িতে থাকলে দ্রুত বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করুন। যদি প্রচণ্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টি হয়, তা হলে গাড়ি কোনো বারান্দা বা পাকা ছাউনির নিচে রেখে অপেক্ষা করুন।
বিদ্যুতের তার
বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমতে পারে। অনেক সময় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে সেই পানিতে পড়ে হতে পারে দুর্ঘটনা।
ভেজা জুতা ও খালি পা
বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক। যদি একান্ত বের হতেই হয়, রবারের গামবুট এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো কাজ করবে।
বজ্রপাতের সময় রাস্তায় চলাচলেও খেয়াল রাখতে হবে। কেউ আহত হয়ে থাকলে দেরি না করে তাকে হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা করতে হবে। তবে বিদ্যুৎস্পর্শ কাউকে ঘটনার সময় খালি হাতে স্পর্শ করলে নিজেও ঝুঁকিতে পড়তে হবে।