এক মিনিটে যাচাই করুন আসল মধু!

মধু শুধুমাত্র একটি উপকারী খাদ্য নয়, পন্য ও ঔষধ বটে। জন্মের পর বাচ্চাদেরকে নানা দাদীরা মখে মধু দেয় নাই এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন বা নেই বললেই চলে। আদিমকাল বা প্রাচীনকাল থেকে মানুষ প্রাকৃতিক খাদ্য হিসেবে, মিষ্টি হিসেবে, এবং চিকিৎসার উপাদান হিসাবে মধুর ব্যবহার করে আসছে। আমাদের শরীরের সুস্থতায় মধুর উপকারিতা অতুলনীয়।
শরীরের গঠনে মধুর কোনও বিকল্প নেই। কিন্তু সেই মধু যদি ভেজাল হয়, তাহলে! একাধিক গবষণায় দেখা গেছে ভেজাল মধুতে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা দীর্ঘদিন ধরে শরীরে প্রবেশ করলে দেহের ওজন বেড়ে যায়, সেই সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।
বাজারের বিভিন্ন মানের মধু পাওয়া যায়। তবে মধু কিনতে গেলে কমবেশি সবাই বিপাকে পড়ে যান। কারণ নকল মধুতে বাজার সয়লাব। সব মধুর চেহারা একই রকম হওয়ায় বোঝা দায় কোনটি আসল, কোনটি নকল। খাটি মধু চেনার উপায় জানতে হলে আপনার কিছু কৌশল জানা প্রয়োজন, খুব সহজেই চিনতে পোরেন আসল মধু। তবে আসল মধু চেনার আগে চিনতে হবে নকল মধু।
পদ্ধতি ১ মধু কেনার পর তা থেকে এক চামচ নিয়ে এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে দিন। যদি দেখেন মধুটা একেবারে পানিতে মিশে গেছে তাহলে বুঝবেল আপনি ভেজাল মধু কিনেছেন। কারণ বিশুদ্ধ মধু পানিতে মিশে যায় না।
পদ্ধতি ২ অল্প করে মধু নিয়ে পানির ওপর কয়েক ড্রপ ফেলে দিন। তারপর সেই পানিতেই কয়েক ড্রপ ভিনিগার মেশান। এরপর যদি দেখেন ফোমের মতো কিছু তৈরি হয়েছে, তাহলে বুঝবেন আপনার ভাগ্য খারাপ। কারণ আপনার কেনা মধুতে রয়েছে ভেজাল উপাদান।
প্রসঙ্গত, মধুতে ক্ষতিকর কিছু কেমিক্যাল, বিশেষত জিপসাম নামে একটি উপাদান মেশানো থাকলেই সাধারণত এমনটা হয়ে থাকে।
পদ্ধতি ৩ এক চামচ মধু নিয়ে একবার নাড়িয়ে দেখুন তো কী হয়। যদি দেখেন মধুটা চামচ থেকে পড়ে যাচ্ছে, তাহলে বুঝবেন ভেজাল মধু কিনেছেন আপনি। কারণ বিশুদ্ধ মধু কখনোই এমন ভাবে চামচ থেকে পড়ে যাবে না। আসলে নকল মধুতে পানির পরিমাণ বেশি থাকে, যে কারণে চামচটা একটু নাড়াতেই সেটা পড়ে যায়। অপর দিকে বিশুদ্ধ মধু অনেক বেশি থকথকে হয়। ফলে সহজে পড়তে চায় না।
পদ্ধতি ৪ এক চামচ মধু নিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দিন। কী দেখছেন? মধুটা কি পুড়ে যাচ্ছে? তাহলে বুঝবেন তা আসল মধু। কারণ যেমনটা আগেও বলেছি বিশুদ্ধ মধুতে পানির পরিমাণ কম থাকে, ফলে সহজে পুড়ে যায়। যে কারণে নকল মধুর ক্ষেত্রে একেবারে উলটো ঘটনা ঘটে।
পদ্ধতি ৫ অল্প পরিমাণ মধুর সঙ্গে এক ড্রপ আয়োডিন মেশান। যদি দেখেন মিশ্রনটা নীল রঙের হয়ে যাচ্ছে, তাহলে বুঝবেন মধুটা নকল। আসলে ভেজাল মধুতে স্টার্চ খুব বেশি পরিমাণে থাকে, যে কারণে এমনটা হয়।
পদ্ধতি ৬ মধু আসল না নকল তা বোঝার আরেকটি সহজ উপায় রয়েছে। কী সেই উপায়? একটা পাঁউরুটির টুকরো নিয়ে এক চামচ মধুর মধ্যে মেশান। যদি দেখেন পাঁউরুটিটা শক্ত হয়ে গেছে তাহলে বুঝবেন মধুটা আসল, তাতে কোনও ক্ষতিকর উপাদান নেই। কারণ নকল মধুতে জলের পরিমাণ বেশি থাকে, যে কারণে পাঁউরুটি ডুবিয়ে রাখলে তা শক্ত না হয়ে গিয়ে উলটে নরম হয়ে যাবে।
পদ্ধতি ৭ মধু যদি নকল না হয় তবে দীর্ঘদিন থাকলেও মধুর নিচে জমাট বাঁধবে না। এছাড়া পিঁপড়া ধরবে না।
পদ্ধতি ৮ কেন অর্গানিক মধু শরীরের পক্ষে এতটা ভাল? আসলে এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন এ, বি, সি, ডি এবং ই। সেই সঙ্গে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যামাইনো অ্যাসিড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ। তাহলে বুঝতেই তো পারছেন প্রতিদিন যদি এক চামচ করে মধু খান, তাহলে শরীর কত ভাল হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, যাদের হজমের সমস্যা আছে তারা প্রতিদিন মধু খেলে রোগ একেবারে সেরে যায়। আর যদি আপনার কেনা মধু নকল হয়, তাহলে কোনও কাজেই আসে না। স্বাদও আসল মধুর থেকে খুব খারাপ হয়। তাই এবার থেকে মধু কিনলেই ব্র্যান্ডেড কিনবেন, যেখান সেখান থেকে কিনলে কিন্তু বিপদ!