সাবধান একাকীত্ব বাড়ায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি!

অনেকের কাছেই একাকিত্ব মানে নির্বান, কিন্তু বাস্তবে তা অভিশাপ মাত্র! কারণ সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে একা থাকার প্রবণতা নানাভাবে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাকে বাড়িয়ে তোলে। আর একবার এই মারণ রোগ শরীরে এসে বাসা বাঁধা মানেই আরও সব জটিল রোগের ঘাড়ে চেপে বসা। তাই সাবধান! কিন্তু ডায়াবেটিসের সঙ্গে একলা থাকার কী সম্পর্ক? এক্সপ্রেস ডট কমে প্রকাশিত এই স্টাডি অনুসারে কোনও মানুষ যখন একা থাকেন, তত তার দেহ এবং শরীরের ভেতরে নেতিবাচক পরিবর্তন হতে শুরু করে, যে কারণে ডায়াবেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই যতটা সম্ভব বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। এমনটা করলে দেখবেন মন-মেজাজ যেমন চাঙ্গা থাকবে, তেমনি কোনও ধরনের মারণ রোগও ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না। এখন প্রশ্ন হল যাদের পরিবারের থেকে দূরে থাকেন এবং নানা কারণে অনেক সময়ই একা থাকতে বাধ্য হন, তারা কী করবেন? তাদের জন্য রইল কয়েকটি পরামর্শ। ১. ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান শরীরে এই ভিটামিনটির ঘাটতি দেখা দিলে ইনসুলিন রেজিসটেন্সের আশঙ্কা থাকে। আর এমনটা হলে রক্ত সুগারের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে ডায়াবেটিস রোগ হয়। তাই আজ থেকেই ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ খাবার, যেমন- মাছ, দুধ, কমলা লেবুর রস, সোয়া দুধ এবং ডিম খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। আর যদি প্রয়োজন মনে করেন তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে এই বিষয়ে পরামর্শ করে নিতে ভুলবেন না! ২. কাঁচা ফল খান জুস নয়, খেতে হবে কাঁচা ফল। নিয়মিত যদি এমনটা করতে পারেন, তাহলে শরীরে ফাইবারের মাত্রা বাড়তে শুরু করবে। আর এমনটা হলে শুধু ডায়াবেটিস নয়, কমবে যে কোনও রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। কারণ ফাইবার শরীরকে ভিতর থেকে এত মাত্রায় শক্তিশালী করে তোলে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে আসার সুযোগ পায় না। ৩. প্রতিদিন বার্লি খেতে হবে এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, যা দীর্য সময় পেট ভরিয়ে রাখে। সেই সঙ্গে শর্করার মাত্রা যাতে ঠিক থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না। ৪. মেথি প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম দুধে ১ চামচ মেথি পাউডার মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। অল্প দিনেই দেখবেন ডায়াবেটিস একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। কারণ মেথিতে উপস্থিত বিশেষ কিছু উপাদান দ্রুত শর্করার মাত্রা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ৫. হাঁটতে হবে প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে ১৫ মিনিট করে হাঁটলেই দেখবেন সুগার লেভেল কখনও মাত্রা ছাড়ানোর সুযোগ পাবে না। কারণ হাঁটার সময় আমাদের শরীরের কর্মক্ষমতা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাও বাড়তে শুরু করে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না। তাই যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন হাঁটতে কখনও ভুলবেন না যেন! ৬. সবুজ শাক সবজি খান যেসব সবজিতে স্টার্চের পরিমাণ কম রয়েছে, তেমন সবজি বেশি করে খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমতে শুরু করে। তাই তো ডায়াবেটিস রোগকে দূরে রাখতে প্রতিদিন পালং শাক, কর্নফ্লাওয়ার, লেটুস প্রভৃতি শাক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। ৭. অ্যালোভেরা পরিমাণ মতো হলুদ গুঁড়োর সঙ্গে অ্যালো ভেরা জুস, অল্প করে তেজপাতা এবং জল মিশিয়ে একটা পানীয় বানিয়ে ফেলুন। প্রতিদিন রাতে খাবার খাওয়ার আগে এই পানীয়টি খেলেই দেখবেন সুগার লেভেল কখনও মাত্রা ছাড়াবে না। ৮. পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান জরুরি রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে বেশি করে পানি পান করতে হবে। কারণ শরীরে পানির পরিমাণ যত কমবে, তত কিন্তু পরিস্থিত হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। তাই সবারই এই বিষয়টি মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন।