কোরবানির মাংস রান্নার কিছু চমৎকার টিপস

আগামী ২ সেপ্টেম্বর সারাদেশে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের এই উৎসব ঘিরে কয়েক দিনের ছুটি মেলে ব্যস্ত মানুষের জীবনে। প্রিয়জনদের সঙ্গে এ সময় আনন্দে মেতে উঠেন সবাই। ছুটির মুহূর্তকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলতে চাই কিছু টিপস। কোরবানির পশুর মাংস খাওয়া থেকে শুরু করে চলাফেরাতেও রাখতে হবে সর্বোচ্চ সতর্কতা। কিছু জরুরি বিষয় জেনে রাখুন—
কোরবানির ঈদে মাংসের সরবরাহ থাকে প্রচুর৷ তৈরি করা যায় বিভিন্ন স্বাদের ও বিভিন্ন ঢঙের মাংসের আইটেম৷ মাংস প্রাণিজ প্রোটিনের খুব ভালো উৎস৷ কাজেই সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে কোরবানির ঈদের পর্যাপ্ত মাংস দিয়ে কাটিয়ে দেওয়া যাবে নির্দ্বিধায় দুই মাস৷
১. হালকা লবণ ও হলুদ দিয়ে মাংসগুলোকে তাপ দিলে তা অনেক দিন সাধারণ তাপমাত্রায় রাখা যায়৷ ২. আবার ভিনেগার দিয়েও মাংস সংরক্ষণ করা যায়৷ কোনো টিন বা বোতলে ভিনেগারে মাংস সম্পূর্ণভাবে ডুবিয়ে রাখলে মাংস ভালো থাকে অনেক দিন৷ ৩. আর ভিনেগার যদি না পাওয়া যায়, তাহলে লেবুর রস ব্যবহার করা যেতে পারে৷ মাংসের টুকরোগুলোকে লেবুর রস দিয়ে মাখিয়ে ক্যানড করলে মাংস ভালো থাকে অনেক দিন৷ ৪. ভিনেগার বা লেবুর রস ব্যবহার করলে মাংস সংরক্ষণের পাত্রটি ডিপ ফ্রিজে না রেখে রেফ্রিজারেটরে সাধারণ তাপমাত্রায় রাখতে হবে৷ ৫. মাংস সংরক্ষণের সবচেয়ে আদি পদ্ধতি হল মাংস রোদে শুকিয়ে নেওয়া৷ হালকা লবণ দিয়ে মেখে নিয়ে রোদে ভালোভাবে শুকালে এই মাংস ভালো থাকে অনেক দিন৷ তবে শুকানোর পর অবশ্যই মাংসগুলো টিনে ভালো করে এঁটে রাখতে হবে, নয়তো পোকামাকড়ের আক্রমণে তার আবার পুষ্টি অপচয় হবে৷
চর্বি ছাড়া মাংস খান সাধারণত মাংস কাটা হয় কিউব আকারে৷ এভাবে কাটলে মাংসের মধ্যে চর্বির স্তরগুলো থেকেই যায়৷ এ জন্য মাংসের টুকরাগুলো স্তরে স্তরে কেটে চর্বির অংশটুকু বাদ দিন৷ সিনা, রান যেকোনো অংশ থেকেই এভাবে চর্বি বাদ দিয়ে শুধু লাল মাংসটুকু রাখা যেতে পারে৷ যাদের কোলেস্টেরলে সমস্যা রয়েছে, তারা মাংস প্রথমে সিদ্ধ করে পানিটুকু ফেলে দিন৷ এরপর ইচ্ছামাফিক রান্না করুন৷ এতেও চলে যাবে অনেকখানি চর্বি৷ গ্রিল করা মাংসে চর্বি প্রায় থাকেই না বলা যায়৷ রোস্ট বা অন্য কোনোভাবে রান্না না করে তাই গ্রিল খাওয়া অনেক স্বাস্থ্যকর৷ সাদা সিরকা, লেবুর রস ও লবণ মাখিয়ে কাঁচা মাংস ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত৷ এভাবে রাখলে মাংসের প্রায় ৮০ শতাংশই চর্বিই চলে যায়৷ এরপর তা সংরক্ষণ করা যেতে পারে অথবা রান্না করতে পারেন আপনার পছন্দমতো৷
কোন অংশের মাংস দিয়ে কী রান্না করবেন? সব মাংস দিয়ে সব ধরনের আইটেম তৈরি করা যায় না৷ তাই রান্নার আগে তাকে ওই মাংস সম্পর্কে সচেতন হয়ে রান্না শুরু করতে হবে৷ এবার জেনে নিন কোন অংশের মাংস দিয়ে কি কি তৈরি করা যাবে৷ রানের মাংস : কোরমা, টিকিয়া, বিফ বার্গার, কোপতা, বিরিয়ানি ইত্যাদি তৈরি করা যাবে৷ পেটের দুই পাশের মাংস :শিক কাবাব, হাঁড়ি কাবাব, কিমা, কোপ্তা, শামি কাবাব তৈরি করা যায়৷ হাঁটু থেকে পায়ের অংশ পর্যন্ত : স্যুপ ও কারির জন্য ভালো৷ সিনার মাংস : তেহারি, কারি, রোস্ট ও কোমরের মাংস দিয়ে রোস্ট, কোরমা, বিরিয়ানি তৈরি করা যাবে৷ মাংস তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হতে পেঁপে দিতে পারেন অথবা ব্যবহার করতে পারেন সামান্য চিনি৷ মাংসের স্বাদ এটি কষানোর ওপর নির্ভর করে৷ কষানোর পর পানি দিয়ে ফুটিয়ে ঢেকে আঁচ মধ্যম করে দিন৷ আস্তে আস্তে মাংস সিদ্ধ হয়ে আসবে৷ রান্নার সময় ঢেকে রান্না করবেন এতে খাবারের মান ভালো থাকে৷ এ ছাড়া মাংসও তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়ে যায়৷ তথ্যসূত্র : ইন্টারনেট।