ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর উপায়গুলো জেনে নিন

নিউজ ডেস্ক: ফটো কখনও সেরা সুন্দরী মডেলদের কারণে সুন্দর হয়ে ওঠে না। দক্ষ ফটোগ্রাফার ও বিশেষজ্ঞদের শিক্ষা ও নির্দেশনায় পুরো ফটো শ্যুট জুড়ে বিভিন্ন পোজের কারণেই এক একটা ফটো এক একটা গল্প তৈরি করে ফেলে। যখন কোন মডেল এভাবে পোজ দানে দক্ষ হয়ে ওঠে তখনই তার সুযোগ সৃষ্টি হয় কোন ফ্যাশন ম্যাগাজিনের কভার পেইজে বা হাই ফ্যাশন শো’র ফটো শ্যুটে।
১. অঙ্গভঙ্গি (Posture): সাধারণত ভাল অঙ্গভঙ্গির চর্চা হলো পিঠ সোজা রেখে কাঁধ উচু করা। কাঁধ নিচু করে থাকলে পেটের দিকের অংশটাকে বড় দেখায় আর একটা ঝিমিয়ে পড়া মেজাজ প্রকাশ করে। পেট-কে সংকুচিত রাখার চেষ্টা করলে এটা তুলনামূলক স্থূল শরীরকেও একটা সুন্দর অবয়ব দেয়। শরীরের নিচের অংশ একটু ঠেলে দিয়ে বুকের অংশ কিছুটা উঁচু করে রাখা এবং একটি পায়ের সামনে আর একটি ক্রস করে রাখা শরীরকে একটা আকর্ষণীয় অবয়ব দান করে।
২. ভিন্ন রকম হাসি (Smile differently): আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের জন্য একটা হাসির কোন বিকল্প নেই। একই রকম হাসির এক ঘেয়েমি ছেড়ে পোজের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হাসি ভিন্ন পোজে একটা আলাদা মাত্রা যোগ করে। বিষয় বস্তু দুঃখ বা শোক প্রকাশের না হলে সুখকর অভিব্যক্তির যেকোনো পোজে মৃদু হাসি, সোহাগী হাসি, বন্ধু ভাবাপন্ন হাসি বা অট্ট হাসিও পোজটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
৩. হাত পায়ের অবস্থান: হাত পায়ের অবস্থান পোজের একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাত-এর সব সময় পার্শ্বে থেকে দেখাতে হবে- তালু বরাবর নয়। আর কখনও দুই হাত বা দুই পা একসাথে একই ভাবে রাখা -যাবে না। যদি এক হাত লম্বা করে স্বাভাবিক অবস্থানে থাকে তবে অন্য হাত বেঁকিয়ে পোজ দিতে হবে। একই ভাবে এক পা যদি পুরো সোজা করে দাঁড়াতে হয় তবে অন্য পা-টি বেঁকিয়ে অবস্থান নিয়ে দঁড়াতে হবে।
৪. শ্বাস নেওয়া: ভাল এবং প্রাণবন্ত ছবির জন্য আরামদায়ক পোজের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। তাই পোজ দেওয়ার সময় স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস চালু রাখতে হবে।
৫. মাথার অবস্থান: অযাচিত ভাবে মাথা পেছন দিকে বা সামনের দিকে হেলানো যাবে না। পেছনের দিকে মাথা বেশি হেলিয়ে দিলে তা ফটোর স্বাভাবিকতা নষ্ট করে ফেলে। তবে সামান্য হলে ভালই- এতে চিবুক স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
৬. গলা লম্বা দেখাতে হবে: মাথা টান করে গলা যতটা সম্ভব পুরোটা দেখানো বাঞ্চনীয়। আর এতে পুরো ফটোর মধ্যে মাথা ও শরীরের সাথে একটা দারুণ সামঞ্জস্য দেখা যায়।
৭. ফটো শ্যুটের সময় নড়াচড়া: ফটো শ্যুটের সময় একইভাবে দাঁড়িয়ে বা বসে না থেকে প্রত্যেক শ্যুটের সময় নড়াচড়া করলে একটা নতুন পোজের সৃষ্টি হয়। যেমন হাত মাথার উপর, ঘাড়ের উপর, মাথা উঁচু বা নিচু করা, হিপ বা কোমরে রাখা, দৃষ্টি বিভিন্ন দিকে ফেরোনো ইত্যাদি। তবে যতক্ষণ ফটোগ্রাফার ‘পারফেক্ট’ না বলছে ততক্ষণ পোজটা কাজে লাগছে না।
৮. চোখের পোজ: ফটো শ্যুটের এটা অনেক বেশি জরুরী একটা বিষয়। চোখের অবস্থান এবং ভাষা হতে হবে পরিষ্কার। চোখ উদ্দেশ্যবিহীনভাবে চারদিকে ঘোরালে হবে না। চোখ থাকবে স্থির-সেটা কোন বস্তুই হোক আর ক্যামেরার লেন্সের দিকেই হোক।
৯. বসে পোজ: বসে ফটো তোলার সময় মূর্তির মতো চুপচাপ হয়ে থাকলে চলবে না। দুটি জানুর উপর না বসে একটার পেছন দিকে ভর দিয়ে বসলে ফটো প্রাণবন্ত হয় আর অনেক স্লিম লাগে দেখতে।
১০. অভিব্যক্তি: মানুষের জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতির প্রতিটিতেই আলাদা ধরনের অভিব্যক্তির সৃষ্টি হয়। আনন্দ, বেদনা, একাকীত্ব, কল্পনায় ভেসে যাওয়া, ভালবাসা, যৌনতাসহ বিভিন্ন অনভূতি প্রকাশ পায় প্রতিটি মানুষের চেহারায়। পোজের জন্য বিষয় ভিত্তিক মুখমন্ডলের অভিব্যক্তিও প্রকাশও পোজের ধরনকে নির্ধারণ করে দেয়।