গরম তেলে ত্বক পুড়লে যা করবেন

রান্নার সময় হাতে তেলের ছিটে লাগাটা খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। আরও স্বাভাবিক হচ্ছে গরম তেল ত্বকের কোথাও পড়ার সাথে সাথেই দৌড়ে ফ্রিজের কাছে যাওয়া আর বরফের টুকরো বের করে সেখানটায় লাগানো। কিন্তু আপনি কি জানেন, বরফ রক্তের প্রবাহকে রোধ করে এবং ত্বককে সংকুচিত করে। অর্থাৎ ভালো তো নয়ই, আরো অনেক বেশি খারাপ অবস্থা করে দেয় আপনার জ্বলে যাওয়া স্থানটির? তাহলে কী লাগাবেন, হ্যাঁ এই সমস্যার ঘরোয়া কিছু সমাধান।
১। মিন্ট টুথপেস্ট রান্নাঘরে হাতের কাছেই রাখুন একটি মিন্ট ফ্লেভারের টুথপেস্ট। জ্বলে যাওয়া আর পুড়ে যাওয়া চামড়ার জন্যে এটি প্রচন্ড কাজের। ত্বকে কোন রকমের জ্বালা-পোড়া হলেই প্রথমে সেখানে ঠান্ডা পানি ঢালুন এবং এরপর খানিকটা মিন্ট ফ্লেভারের টুথপেস্ট লাগিয়ে নিন। আরাম পাবেন। ত্বকও সুরক্ষিত থাকবে।
২। অ্যালোভেরা পুড়ে যাওয়া স্থানের নিরাময়ে অ্যালোভেরার চাইতে ভালো আর কোন কিছু হতে পারেনা। এটি খুব দ্রুত ব্যথা আর সংকোচন কমিয়েই দেয় না, সেই সাথে পুড়ে যাওয়া স্থানটিকে সুরক্ষিত করে আর দ্রুত ত্বকের বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। রিডার্স ডাইজেস্টের মতে অল্প কিছুদিনের ভেতরেই আপনার পুড়ে যাওয়া ত্বককে ঠিক আগের মতন করে দিতে পারে অ্যালোভেরা।
৩। টি ব্যাগ টি ব্যাগে ট্যানিক এ্যাসিড থাকে। আর এই ট্যানিক এ্যাসিড ত্বকের গরমকে নিজের ভেতরে শোষণ করে নিয়ে পুড়ে যাওয়া জায়গাটিকে ঠান্ডা করে তোলে। ফলে ব্যথা কমে যায় অনেকখানি। তেলের ছিটে লাগলে তাই সাথে সাথে দু-তিনটি ব্যবহৃত টি ব্যাগ ভিজিয়ে নিয়ে প্রয়োগ করুন আক্রান্ত স্থানে।
৪। ভ্যানিলা ছোটখাটো তেলে জ্বলে যাওয়া ত্বকের ক্ষেত্রে খানিকটা ভ্যানিলা কটন বাডে লাগিয়ে চামড়ায় প্রয়োগ করুন। ভ্যানিলার ভেতরে থাকা অ্যালকোহল আপনার ত্বকের জ্বলে যাওয়ার ব্যথাকে দুর করে দেবে। কষ্ট কম হবে।
৫। ভিনেগার ভিনেগারে থাকে অ্যাসিটিক এ্যাসিড, যেটা কিনা জ্বলে যাওয়া স্থানের চুলকানি, ব্যথা আর প্রদাহ দূর করে। এছাড়াও অ্যান্টিসেপটিক আর অ্যাসট্রিজেন্ট হিসেবেও এটি বেশ ভালো কাজ করে। সব ধরনের সংক্রমণ থেকে দূরে রাখে শরীরকে। জ্বলে যাওয়া কিংবা পুড়ে যাওয়া জায়গার তাপ কমাতেও বেশ সাহায্য করে ভিনেগার। আর তাই তেলের ছিটে লাগলে তুলোয় ভিনেগার মিশিয়ে জায়গাটিতে বুলিয়ে নিন।
৬। দুধ এবং মধু প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে মধুর কোন বিকল্প নেই। হাব পেজেস অনুসারে ক্ষতস্থানের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে দূর করা সহ ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে মধু। নিজের স্নেহ আর প্রোটিনের মাধ্যমে দুধও একই কাজ করে। আর তাই ক্ষতস্থানে মধু লাগিয়ে নিন। আর দুধ লাগালে সেটা রেখে দিন ১৫ মিনিট অব্দি।
৭। তেল তেলের ছিটে লাগা স্থানের জন্যে তেল বেশ উপকারী একটি জিনিস। বিশেষ করে সেটা যদি হয় নারকেল তেল। নারকেল তেলে রয়েছে ভিটামিন ই আর ফ্যাটি এ্যাসিড। যেটা কিনা ফাঙ্গাস আর ব্যাকটেরিয়া থেকে দূরে রাখে সংক্রমণস্থলকে। শুধু তাই নয়, ক্ষতস্থানে কোনরকম দাগ থেকে গেলে সেটাকে দূর করতেও নারকেলের জুড়ি নেই। সেজন্যে কেবল নারকেল তেলের সাথে খানিকটা লেবুর রস মিশিয়ে প্রতিদিন দাগের ওপরে লাগাতে হবে। তবে নারকেল তেল ছাড়াও ল্যাভেন্ডার তেল কিংবা চা গাছের তেলও এক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে।