ঋন ফেরত দ্বিগুণ সওয়াব
অনলাইন ডেস্ক

ঋণ দেয়া একটি নেক কাজ। কুরআন ও হাদিস মানুষকে ঋণ দিতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়েছে। শুধু উৎসাহ দিয়েই ক্ষান্ত হননি। ঋণ দেয়াকে অনেক সওয়াবের কাজ হিসাবে ঘোষণা দিয়েছে। একটি হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন, আমি যখন মেরাজে গিয়েছিলাম, তখন বেহেশতের দরজার ওপর লেখা দেখেছি, খয়রাতের সওয়াব ১০ গুণ, আর কর্জে হাসানার সওয়াব ১৮ গুণ।
দানের অর্থ ফেরত দিতে হয় না কিন্তু ঋণ বা কর্জে হাসানার অর্থ ফেরত দিতে হয়। কর্জে হাসানা ফেরত দেয়ার পরেও প্রায় দ্বিগুণ সওয়াবের কথা বলা হয়েছে। মূলত প্রতিটি মানুষ যেন স্বাবলম্বী হতে পারে এই করণে ইসলাম ঋণের ব্যবস্থাপত্র দিয়েছে।
আমাদের দেশে অনেকেই আছেন ব্যাংক থেকে বিরাট অঙ্কের ঋণ নিয়ে বেমালুম হজম করে ফেলেন। গত মঙ্গলবারে প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে তথ্য প্রকাশ করেছে, গত মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা। এ সময় পর্যন্ত ব্যাংকগুলো অবলোপন করেছে ৪১ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক খাতে গত মার্চ পর্যন্ত বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ ৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে। অবলোপন হওয়া ঋণকে হিসাবে ধরলে এর হার আরও বেশি হবে। যারা এই ধরণের ঋণখেলাপি করে তাদের বিষয়ে রাসূল (সা.) এর সতর্কবাণী রয়েছে।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশ (রা.) এর একটি দীর্ঘ হাদিস। রাসূল (সা.) ঋণ সম্পর্কে বলেন, সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, যদি কোনো ব্যক্তি জিহাদে শহীদ হয়ে যায়, জীবিত হয়ে (পুনরায়) শহীদ হয়ে যায় আবার জীবিত হয়ে (তৃতীয়বার) শহীদ হয়ে যায়, তার জিম্মায় কারও ঋণ প্রাপ্য থাকলে সে জান্নাতে যাবে না, যে পর্যন্ত তার ঋণ শোধ করা না হয়। (নাসায়ি, তিবরানি, হাকেম)
তবে রাসূলে পাক (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ঋণ গ্রহণ করে এবং তা পরিশোধ করার ইচ্ছা রাখে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তার পক্ষ থেকে তার ঋণ শোধ করে দেবেন। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ঋণ শোধ করার ইচ্ছা রাখে না এবং এ অবস্থায় মারা যায়, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে বলবেন, তুমি বোধ হয় মনে করেছিলে, আমি আমার বান্দার হক তোমার কাছ থেকে আদায় করব না।
এরপর ঋণ গ্রহীতার কিছু সৎকর্ম ঋণ দাতাকে দেয়া হবে। সে যদি কোনো সৎকর্ম না করে থাকে, তবে ঋণদাতার কিছু গুনাহ তার ওপর চাপিয়ে দেয়া হবে। (তিবরানি, হাকেম)।
আমাদের অনেক চাহিদা রয়েছে। এই চাহিদা মেটানোর জন্য নিজের কাছে অর্থ না থাকলে ঋণ করতে হয়। তাই যারা ঋণ গ্রহণ করেন তাদের উচিৎ সময় মত তা ফিরিয়ে দেয়া। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমীন। সূত্র- অনলাইন