জিকা ভাইরাস থেকে সতর্ক থাকার উপায়

বিশ্বে আলোচিত এক ভাইরাসের নাম ‘জিকা’। বর্তমানে বিস্ফোরক দ্রব্যের মতো ছড়িয়ে পড়ছে মশাবাহিত এই ভাইরাস। ভারত,পাকিস্তানসহ প্রায় ২০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে জিকা ভাইরাস। বাংলাদেশে এখনও জিকার বংশবিস্তার শুরু হয়নি। তবে অাসতে পারে তাই সতর্ক থাকতে হবে।
‘জিকা’ নামটি নেওয়া হয়েছে উগান্ডার জিকা বন থেকে। ১৯৪৭ সালে হলুদ জ্বর নিয়ে গবেষণার সময় বিজ্ঞানীরা জিকা বনে একটি খাঁচায় একটি বানর রাখে। পরে বানরটি জ্বরে পড়লে তার দেহে একটি সংক্রামক এজেন্টের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। ১৯৫২ সালে এর নাম দেয়া হয় জিকা ভাইরাস। এরপর ১৯৫৪ সালে নাইজেরিয়ায় এক মানুষের দেহে এই ভাইরাস পাওয়া যায়।
জ্বর, র্যাশ (চামড়ায় লাল ফুসকুড়ি), গোঁড়ালিতে ব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া – জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সাধারণত এ সব লক্ষণ দেখা দেয়। এছাড়া পেশী, মাথায়ও ব্যথা হতে পারে৷ জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রতি ৫ জনের মধ্যে একজনের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ২০১৫ সাল নাগাদ আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার কয়েকটি দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দুজন নাগরিকের শরীরেও এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
এডিস ইজিপ্টি নামের মশার কামড়ের মাধ্যমে এই ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। ফলে মশার কামড় থেকে বাঁচার যে উপায়গুলো আছে, সেগুলো মেনে চললেই এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচা যাবে। কারন এই রোগের চিকিৎসায় এখনও কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। ফলে সতর্ক থাকাটাই হবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ বলে চিকিৎসকরা মনে করেন। অবশ্য এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা বিরল।
তবে সম্প্রতি একটি বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছেন না গবেষকরা। তাদের কারও মত হচ্ছে, কয়েকটি দেশে শিশুদের ‘মাইক্রোসেফালি’ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণ জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত গর্ভবতী মা। এই রোগ হলে শিশুদের মস্তিষ্কের গঠন ঠিকমতো হয় না, ফলে শিশুর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়া, শারীরিক বৃদ্ধি অস্বাভাবিক বা বিলম্বিত হওয়া থেকে শুরু করে অকালে মারা যাওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়। বৈজ্ঞানিকভাবে অবশ্য এটি এখনও প্রমাণ করা যায়নি।