English Version
আপডেট : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৪:০৭

টিনএজদের অপরাধপ্রবণ করে তুলছে ডেটিং এ্যাপ ‘টিন্ডার’

অনলাইন ডেস্ক
টিনএজদের অপরাধপ্রবণ করে তুলছে ডেটিং এ্যাপ ‘টিন্ডার’

 

যৌন ফ্যান্টাসি এখন শুধু মনে নয়, স্থান করে নিয়েছে ভার্চুয়াল জগতে। আপনি নারী বা পুরুষ যাই হোন না কেন  নিজেকে আড়ালে রেখে চালিয়ে যেতে পারের আপনার যৌন ফ্যান্টাসি। কিন্তু এই ক্ষতিকর চিন্তাধারার পেছনে কলকাঠি নাড়ছে কে? কোন সন্দেহ নেই যে টিন্ডারের মত এডাল্ট ডেটিং এ্যাপগুলি মানুষের সম্পর্ক, যৌনতা এবং সম্পর্কবিষয়ক চিন্তাধারাকে বদলে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, টিন্ডার আমাদের শেখাচ্ছে যে কোন কিছুই সমস্যা নয় যদি আপনি সেটাকে সমস্যা না ভাবেন। আমেরিকান লেখিকা আলিসা এলার এবং ইভ পেসার তাদের ‘টিন্ডারাইজেশন অব ফিলিং’ নামক গবেষণাপত্রে লিখেছেন টিন্ডার মানুষকে আবেগ থেকে দায়মুক্তি দিচ্ছে।

তারা বলেছেন টিন্ডার শুধু একটি ডেটিং এ্যাপ নয়, বরং মানবীয় আবেগ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্যও এটি দায়ী। টিন্ডার মানুষকে রোবটে পরিণত করছে। তারা উদাহারন দিয়ে বলেছেন, এধরনের এডাল্ট এ্যাপ যারা ব্যাবহার করছে তারা খুব সহজেই প্রতারণা করছেন এবং প্রতারণার শিকারও হচ্ছেন। প্রতিদিন নতুন নতুন বন্ধু জুটে যাচ্ছে, আর আগের দিন যার সাথে বন্ধুত্ব পাতানো হয়েছিল তাকে ব্লক করে দেয়া হচ্ছে। এটা একটি বিশ্রী খেলা। যার কারনে কেউ হয়তো পাশবিক আনন্দ পাচ্ছে আবার কেউ ভুগছে যন্ত্রণায়। মানুষ বাস্তবতা ভুলে গিয়ে টিন্ডারের তৈরি করে দেয়া একটি নোংরা জগতে বসবাস করছে।

টিন্ডারকে মানুষের জন্য একটি ‘ফাঁদ’ হিসেবে উল্লেখ করে লেখকদ্বয় বলেন, টিন্ডার ঠিক করে দিচ্ছে আপনি কি করবেন। যেখানে ন্যায়-অন্যায়ের কোন বিষয় নেই। কারন আপনার পরিচয় এখানে গোপন থাকছে। আপনি যার সাথে বন্ধুত্ব করছেন বা সেক্স চ্যাট করছেন তার পরিচয়ও গোপন থাকছে। কিন্তু এই দু্জনের মধ্য কেউ একজন হয়তো সম্পর্কের ক্ষেত্র সিরিয়াস হয়ে যেতে পারে। কিন্তু যখন অপরজন তাকে কোন কারনছাড়াই ত্যাগ করছে তখন ডিপ্রেশনে ভোগা স্বাভাবিক।

উপভোগ একটি মানবিক বিষয়। কিন্তু টিন্ডার সহ এডাল্ট ডেটিং এ্যাপগুলি মানুষকে ভোগবাদিতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সেখানে বলা হচ্ছে’ যতক্ষণ ইচ্ছে যৌনতাকে ভোগ কর, শখ মিটে গেলেই অপরজনকে ছুঁড়ে ফেলে দাও! এই ভোগবাদীতা তরুন-তরুণীদের অপরাধপ্রবণ করে তুলছে বলে মন্তব্য করেছেন লেখকদ্বয়। কারন গভীর জীবনবোধের তোয়াক্কা না করে কারও সঙ্গে প্রতারণা করাও একটা মারাত্মক অপরাধ।

তাহলে এর থেকে মুক্তির উপায় কি? লেখকদ্বয় বলেছেন, মানুষকে আবেগহীন, বাস্তবতাহীন ভার্চুয়াল বন্ধুত্বের জগত থেকে প্রতিদিনের বাস্তব জগতে ফেরাতে হবে। এজন্য মানবিক সম্পর্কগুলি সম্পর্কে তাদেরকে বোঝাতে হবে।যখন কারও সাথে আপনি সম্পর্কে জড়াবেন তখন সে আপনার জীবনের একটি অংশ হয়ে যায়। তাকে হঠাৎ করে জীবন থেকে বাতিল করে দেয়া একটা অন্যায়। আপনি নিজেও কোন একদিন এই অন্যায়ের শিকার হবেন না এমন কোন গ্যারান্টি নেই। কারন মানুষ হিসেবে আপনারও হয়তো কারও প্রতি দুর্বলতা আছে কিংবা কোন একদিন জন্মাবে। তারা বলেছেন, বন্ধুকে, বন্ধুত্বকে আপনার হৃদয়ে স্থান দিন। দেখবেন বুক ভরে যাবে। আপনি অনেক সুখী হবেন। অন্যকে সুখী করার মাঝেও নিজের সুখ খুঁজে পাওয়া যায়। যারা এই সুখের খোঁজ পায়না তারা বড়ই দুর্ভাগা।