ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী একেএম জসিম উদ্দিন

একেএম জসিম উদ্দিন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শিক্ষানুরাগী। রাজনীতি করছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণীত হয়ে। ১৯৬৬ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়স থেকে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন। এক সময় বৃহত্তম গুলশান থানার আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে রাজধানীর বনানী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী তিনি। সম্প্রতি তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা হয় -এর সাথে। পাঠকদের জন্য তারই চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।
আপনি কেন মনোনয়ন চাচ্ছেন?
একেএম জসিম উদ্দিন: পার্লামেন্ট মেম্বার হওয়ার আশা আকাঙ্খা প্রত্যেক রাজনীতিবিদের মধ্যেই থাকে। আমার মধ্যেও রয়েছে। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মী হিসেবে মাঠে ময়দানে আছি। মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার কাজে সম্পৃক্ত আছি। আমার দদাবি থাকতেই পারে পার্লামেন্টে যাওয়ার। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার কাছে নিজেকে আরো অগ্রণী ভূমিকায় রাখতে পার্লামেন্টে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি।
মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আপনি কতোটুকু আশাবাদী?
একেএম জসিম উদ্দিন: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যে ক্রাইটেরিয়ায় এবার মনোনয়ন দেবেন, আমি আমার কর্মকাণ্ড দিয়ে সেই ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে পড়ি। মোটামুটিভাবে জোর দিয়ে বলতে পারি, যদি সেই ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী মনোনয়ন দেওয়া হয়, তাহলে ইনশাআল্লাহ আমি মনোনয়ন পেতে পারি।
যে ক্রাইটেরিয়ার কথা বলছেন, তা কী কী?
একেএম জসিম উদ্দিন: মনোনয়নের জন্য যে ক্রাইটেরিয়ার কথা বলা হচ্ছে তা হলো-প্রথমেই স্থানীয় হতে তবে। তারপরেই থাকতে হবে ত্যাগ। অর্থাৎ ত্যাগী হতে হবে। সত্যিকার অর্থে পিওর, আস্থাভাজন আওয়ামী লীগা কর্মী খুঁজছেন শেখ হাসিনা। এটার মধ্যে আমার কোনো অভাব নাই। উনি চাঁদাবাজকে নমিনেশন দেবেন না। যারা রাজনীতির নামে সমাজকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছেন, নিজের আখের গোছাচ্ছেন, নিজেকে ধনি থেকে আরো ধনি করার চেষ্টা করছেন, তাদের কাউকে তিনি নমিনেশন দেবেন না। তৃণমূলের সাথে যাদের সম্পর্ক রয়েছে তাদেরই তিনি নমিনেশন দেবেন। আমি তৃণমূলের সাথে রাজনীতি করি। ১৯৬৬ সাল থেকে মিছিল-মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করছি। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আওয়ামী লীগের এমন কোনো কর্মসূচি নাই, যে কর্মসূচিতে আমি অংশগ্রহণ করি নাই। আমি চেষ্টা করেছি বঙ্গবন্ধুর স্বচ্ছ একজন কর্মী হিসেবে সমাজের কাছে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে। কোনো চাঁদাবাজির সাথে আমার সম্পর্ক নাই। কোনো ধান্দাবাজির সাথে আমার সম্পর্ক নাই। আমার নিজস্ব কোনো বাহিনী নাই এবং আমার অঞ্চলে কেউ বলতে পারবে না আমি রাজনীতির নামে কোনো অফিস-আদালতে কোথাও চাঁদার ব্যবসা করেছি। এমন কোনো নজির নাই। তাই আমি দাবি করতে পারি, আওয়ামী লীগের স্বচ্ছ এবং নিঃস্বার্থ কর্মী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি। আমার জনসমর্থন রয়েছে। জনগণ আমাকে ভালো জানে। আমি মনোনয়ন পেলে জনগণ অবশ্যই আমাকে নির্বাচিত করবে। আর সভানেত্রী যদি আমার বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখেন, তাহলে আমি আশা রাখি নমিনেশন পাবো।
জাতির জনকের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য আপনি কী কী করতে চান?
একেএম জসিম উদ্দিন: বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলা। এদেশের প্রতিটি মানুষ চিকিৎসা পাবে, অন্য পাবে, বাসস্থান পাবে, শিক্ষা পাবে, চাকরি পাবে, সুন্দর সুখি-সমৃদ্ধ মানুষ হিসেবে পৃথীবিতে বিচরণ করবে এটাই ছিলো বঙ্গবন্ধুর কামনা। বঙ্গবন্ধুর উত্তরসুরী, তাঁর সুযোগ্য কন্যা, আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটাকে যে পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন, আর এক-দুইটা টার্ম আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ উন্নয়নের চরম পর্যায়ে, উচ্চ শিখড়ে পৌঁছাবে এতে কোনো সন্দেহ নাই
জনপ্রতিনিধি হলে শিক্ষা বিস্তারের জন্য কী কী করবেন?
একেএম জসিম উদ্দিন: বর্তমান সরকারকে শিক্ষা বান্ধব সরকার বলা যায়, নারী বান্ধব সরকার বলা যায়। এ সরকারকে উন্নয়ন বান্ধব সরকার বলা যায়। সমাজের সার্বিক উন্নয়ন বাস্তবায়ন বান্ধব সরকার বলা যায়। আমি রাজনীতির পাশাপাশি আমার এলাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত। প্রতিষ্ঠানটির নাম আইপিএস স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বনানী থানায় ২টা বস্তি এলাকা রয়েছে। একটা কড়াইল বস্তি অন্যটা সাততালা বস্তি। সাততালা বস্তির কাছাকাছিই আইপিএস স্কুল অ্যান্ড কলেজ অবস্থিত। এই প্রতিষ্ঠানে নিন্ম আয়ের অর্থাৎ গরীব-দুঃখী মানুষের ছেলে-মেয়েরা লেখা-পড়া করে। গত ৫ বছর আমি এই স্কুলে বিভিন্নভাবে লেখা-পড়ার মান উন্নয়নের পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ করেছি। এই স্কুলকে সিসি ক্যামেরা ও বায়োমেট্রিকের আওতায় আনা হয়েছে। সরকারের সহযোগিতায় দুইটা প্রজেক্ট পেয়েছি। সুন্দর মাঠ, সুন্দর বাউন্ডারি ওয়াল এবং শিক্ষায় গত প্রত্যেকটি এসএসসি পরীক্ষায় ৫টা, ৭টা, ১০টা জিপিএ ফাইভসহ ৮৮ শতাংশ থেকে ৯৯ শতাংশ পাসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকে নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে এসেছি। গত ৫ বছরে আমুল পরিবর্তন হয়েছে। সরকারের সহযোগিতায় স্কুলটি উন্নয়নের মডেল হিসেবে রূপ নিয়েছে। আগামীতে আরো সুন্দর হবে।যদি সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পাই, তাহলে প্রতিটি স্কুলের সুশিক্ষা নিশ্চিতের জন্য শিক্ষা বাণিজ্য, কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করে আমি এলাকার প্রতিটি স্কুলকে শিক্ষাবান্ধব স্কুল হিসেবে পরিণত করবো ইনশাআল্লাহ।
মাদক নির্মূলে নির্বাচিত হলে আপনি কী কী পদক্ষেপ নিবেন?
একেএম জসিম উদ্দিন: মাদক নির্মূলে সরকারের প্রশাসনকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করছি। আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন, আমাদের সাততলা বস্তিতে শিমার মাদকের আখড়া ছিলো। সেখান থেকে মাদক নির্মূল করে ডে কেয়ার সেন্টার হিসেবে পরিণত করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। সেখানে আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা ছিলো। তাছাড়া আমি ব্যক্তিগতভাবে মাদকবিরোধী প্রতিটি কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেছি। মাদক, জঙ্গি এবং সমাজের যতো বাজে কাজ আছে সমস্ত কিছু থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন দূরে থাকে এবং সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি নির্মূলের জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা তা করবো। বিগত দিনে যেমন করেছি, ভবিষ্যতেও ইনশাআল্লাহ তাই করবো।