English Version
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:৫৮

খোদ ভারতেই হেনস্তার শিকার ময়ুখ-শুভেন্দু

নিজস্ব প্রতিবেদক
খোদ ভারতেই হেনস্তার শিকার ময়ুখ-শুভেন্দু

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই যে কয়েকজন সরাসরি ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন, তাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রিপাবলিক টিভির সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ এবং বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।

৫ আগস্টের পর থেকে এ দুজন বাংলাদেশ নিয়ে ক্রমাগত মিথ্যাচার ও ভয়াবহ কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে গেছেন।

গণ-আন্দোলনের মুখে পলাতক পতিত হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের মাটিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য উগ্র হিন্দুত্ববাদী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকারের ষড়যন্ত্রের মুখপাত্র হয়ে ওঠেন ময়ূখ ও শুভেন্দু।

এমনকি তাদের মিথ্যা ও হাস্যকর কার্যক্রমের জন্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণও ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন, যা এখনো চলমান।

এসব কারণেই বাংলাদেশে ভারতীয় পেঁয়াজ ও আলু রফতানি বন্ধ হয়ে যায় এবং এতে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।

আর এ ঘটনার জেরেই খোদ নিজ দেশে কৃষকদের তোপের মুখে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ।

ভারতীয় স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা গেছে, ২২ ডিসেম্বর (রোববার) বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য রফতানি বন্ধের জেরে ময়ূখ রঞ্জনের বাড়ি ঘেরাও করেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা।

ওইসব ভারতীয় সংবাদে জানানো হয়, বাংলাদেশে চাহিদা না থাকায় মাত্র আড়াই থেকে তিন টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা, যা উৎপাদন খরচের তুলনায় অত্যন্ত কম।

কৃষকরা অভিযোগ করছেন, রফতানির সুযোগ বন্ধ করে তাদের দুর্দশার দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে।

এসময় এক কৃষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের কষ্টার্জিত ফসলের ন্যায্য মূল্য নেই। এখন এই পেঁয়াজ শুভেন্দু অধিকারী আর রিপাবলিক টেলিভিশনের ময়ূখ রঞ্জনকেই কিনতে হবে।

তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে ময়ূখ সংকট আরও জটিল করে তুলেছেন।

পেঁয়াজ ও আলুর দাম নিয়ে বর্তমানে ভারতের বাংলাভাষী রাজ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। রাস্তায় ফসল ফেলে কৃষকরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

তারা অভিযোগ করেন, তিন টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে, অথচ বাজারে এই পেঁয়াজই ২০ টাকার নিচে পাওয়া যায় না। আমাদের এই কষ্ট কেউ বুঝতে চায় না।

এ সময় আরেক কৃষক বলেন, আমরা শুনছি, বাংলাদেশ আমাদের থেকে পেঁয়াজ নিতে চাইছে না।

অথচ ময়ূখ বলছে, তারা নাকি আমাদের পেঁয়াজ টাকার জন্য কিনতে পারছে না; এসব বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য ময়ূখকে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের দায়ভার নিতে হবে।

বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচীতে উপস্থিত উত্তেজিত কৃষকরা ময়ূখের বাড়ি ভেঙে পাবলিক টয়লেট বানানোর দাবি করেন।  

শুধু ময়ূখ নয়, রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন কৃষকরা। তাদের হুঁশিয়ারি, এই বিপর্যয়ের সমাধান না হলে রাজ্যে বিজেপির রাজনৈতিক ভবিষ্যতের পাশাপাশি কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থা অন্ধকারে পতিত হবে।

অন্যদিকে, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে নিয়ে বিধানসভায় কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে জনরোষের শিকার হয়েছেন শুভেন্দু।

দলীয় প্রধানকে নিয়ে নোংরা মন্তব্যের জেরে ক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা কলকাতার পাশ্ববর্তী নন্দীগ্রামের এক জনসভায় শুভেন্দুকে মারধর করেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় ভারতীয় কয়েকটি গণমাধ্যম।

এ সময় তৃণমূল কর্মীরা তার দিকে জুতা ছুড়ে মারেন। পরে অবশ্য পুলিশের সাহায্যে ওই স্থান ত্যাগ করেন শুভেন্দু।