English Version
আপডেট : ১২ জুলাই, ২০২১ ১২:০৩

কেন ইমরান খানদের অবিশ্বাস করছে আফগানিস্তান?

অনলাইন ডেস্ক
কেন ইমরান খানদের অবিশ্বাস করছে আফগানিস্তান?

আফগানিস্তানের বর্তমান অস্থিরতার জন্য দেশটির সংবাদমাধ্যম ও রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশ দায়ী করছে প্রতিবেশী পাকিস্তানকে। তাদের মতে, পাকিস্তানের প্রচ্ছন্ন তালিবান সমর্থন মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আবহে অস্থিরতাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে।

অবশ্য এই অভিযোগ নতুন নয়। আফগান সরকারের পক্ষেও শোনা গিয়েছে এই অভিযোগ যে পাকিস্তান তালিবান গোষ্ঠীদের আশ্রয় ও সামরিক সমর্থন দিয়ে এসেছে। দীর্ঘ দুই দশক পর মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে বিষয়টি।

আবদুল সাত্তার হুসেইনি নামে এক আফগান রাজনীতিক সম্প্রতি একটি টিভি শোতে বলেন, “আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে আমরা পাকিস্তানের হাতে আক্রান্ত। আমরা শুধু তালিবানের বিরুদ্ধে লড়ছি না, আমরা পাকিস্তানের সঙ্গেও এই মেকি যুদ্ধেও জড়িত। তালিবানদের আফগানিস্তানের জন্য কোনও পরিকল্পনা নেই, আর আমরাও পাকিস্তানের উদ্দেশ্য মেনে নিতে নারাজ।”অস্বস্তির সম্পর্ক

পাকিস্তান এই সব অভিযোগকে সাধারণত উড়িয়ে দিয়ে থাকে, যদিও তা আফগানরা সহজভাবে নেন না। গত মাসে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি একটি আফগান টিভি শোতে উপস্থিত হন এই অস্বস্তির সম্পর্কে কিছুটা স্বস্তি আনতে। অনুষ্ঠানের উপস্থাপক সেখানে প্রশ্ন করেন পাকিস্তানে কিছু তালিবান নেতাদের অবস্থান করা প্রসঙ্গে। এ সময় তিনি জানান যে তিনি এ বিষয়ে অবগত নন।

মন্ত্রী বারবার উপস্থাপককে বোঝাতে চেষ্টা করেন যে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন, কিন্তু উপস্থাপকের সব প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি তিনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের অনুষ্ঠানে প্রায়ই পাকিস্তানের একটি নেতিবাচক রূপ তুলে ধরা হয়।

কাবুলের সাংবাদিক শারিফ হাসানিয়ার ডয়চে ভেলেকে বলেন, “আফগানিস্তান-পাকিস্তান সম্পর্ক চার দশকেরও বেশি সময় ধরেই এমন। বেশিরভাগ আফগানরাই পাকিস্তানকে নেতিবাচকভাবে দেখে কারণ নব্বইয়ের দশকে ইসলামাবাদ তালিবান ও মুজাহিদিনকে সমর্থন করেছিল।”

কিন্তু সাবেক প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাজিবুল্লাহ আজাদ মনে করেন যে আফগানদের ধারণা সত্যের ওপর ভিত্তি করেই গড়া। তিনি বলেন, “পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ আফগান বিশেষজ্ঞদের কিছু অভিযোগ স্বীকার করেছে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন- তারা তালিবানকে সমর্থন করে। ২০১৫ সালে ইমরান খান বলেন যে তার হাসপাতালে এক আহত তালিবান যোদ্ধার চিকিৎসা হয়েছিল। সম্প্রতি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রাশিদ বলেন- তালিবান সদস্যদের পরিবার পাকিস্তানে রয়েছে।”

উন্নত সম্পর্কের সম্ভাবনা

যেহেতু এই দুই দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যার প্রভাব দুই দেশের মধ্যে বড় ভূমিকা রাখে, সেক্ষেত্রে মার্কিন সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের ফলাফলও এখানে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। হাসানিয়ার এ বিষয়ে বলেন, “সুশীল সমাজের সদস্যরা ও সাংবাদিকরা যতই চেষ্টা করুন না কেন দুই দেশের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে, এই কাজ আসলে সরকারের। গত কয়েক মাসে উচ্চপদস্থ আফগান কর্তারা পাকিস্তানে গিয়েছেন, কিন্তু পর্যায়ে পরিস্থিতি কিছুই বদলায়নি। যদি এই অবস্থা বদলাতে হয় তাহলে পাকিস্তানকে সশস্ত্র গোষ্ঠীদের মদত দেওয়া বন্ধ করতে হবে।”

এদিকে পাকিস্তানে কর্মকর্তাদের মত, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নতি করতে হলে কাবুলকে এই ধরনের অভিযোগ আনা বন্ধ করতে হবে।