English Version
আপডেট : ১০ জুলাই, ২০২১ ১৩:৪৩

ভারতে মুসলিম নারীদের ‘বিক্রির’ অ্যাপ

অনলাইন ডেস্ক
ভারতে মুসলিম নারীদের ‘বিক্রির’ অ্যাপ

গত সপ্তাহে ভারতের অর্ধশত মুসলিম নারী জানতে পারেন অনলাইনে বিক্রির জন্য পণ্য হিসেবে তাদের ছবি প্রকাশ করে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের হয়রানির নতুন ও বিস্ময়কর এ পন্থার খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি। বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘সালি ডিলস’ নামের একটি অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে বিভিন্ন নারীর ছবিসহ প্রোফাইল তৈরি ও প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে নারীদের বিশেষায়িত করা হয়েছে ‘ডিলস অফ দ্য ডে’ বলে। ‘সালি ডিলস’ নামের অ্যাপে ব্যবহারকারীদের ‘সালি’ কেনার যে সুযোগ দেয়ার কথা বলা হয়েছে, তা মূলত প্রতীকী। সত্যিকারের কোনো কেনাবেচা নেই অ্যাপটিতে। মুসলিম নারীদের অসম্মান ও অপদস্থ করাই অ্যাপটির উদ্দেশ্য। ভারতে কট্টর হিন্দুরা মুসলিম নারীদের প্রতি অসম্মানসূচক ও তাচ্ছিল্যপূর্ণ শব্দ হিসেবে ‘সালি’ শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন।

পেশায় বাণিজ্যিক বিমানচালক হানা খান নামের এক নারী এই অ্যাপে তার নাম ওঠার কথা জানতে পারেন এক বন্ধুর মাধ্যমে। ওই বন্ধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারের একটি পোস্ট পাঠান হানা খানকে। টুইটে ক্লিক করে হানা যে লিংকে প্রবেশ করেন, সেখানে অপরিচিত এক নারীর ছবি দেখতে পান তিনি। পরের দুই পেইজে নিজের বান্ধবীদের ছবি দেখে চমকে ওঠেন। এর পরের পেইজে গিয়েই নিজের ছবি দেখে হতবাক হয়ে পড়েন হানা। বিবিসিকে তিনি জানান, ‘আমি ৮৩টা নাম গুণেছি। আরও অনেক থাকতে পারে। তারা টুইটার থেকে আমার ছবি ও ইউজার নেইম নিয়েছে। ২০ দিন ধরে অ্যাপটি চলছে আর আমরা কিছু জানতেও পারিনি। বিষয়টা প্রথম যখন বুঝতে পারি, গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল আমার।’

ওপেন সোর্স অ্যাপটি চলছিল ওয়েব প্ল্যাটফর্ম গিটহাবের মাধ্যমে। অভিযোগ পেয়েই দ্রুত সালি ডিলস বন্ধ করে দিয়েছে গিটহাব। বিবৃতিতে গিটহাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি আমরা। আমাদের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছি।’

অপমানজনক এই অভিজ্ঞতা গেঁড়ে বসেছে ভুক্তভোগী নারীদের মনে। অনেকেই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছেন। অনেকে ভবিষ্যতে এমন আরও হয়রানির শিকার হতে পারেন বলে উদ্বিগ্ন। অ্যাপটিতে যেসব নারীকে ‘বিক্রি’র তালিকায় তোলা হয়েছিল, তারা সবাই মুসলিম এবং অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার। এদের প্রায় সবাই পেশায় সাংবাদিক, অধিকারকর্মী, শিল্পী বা গবেষক।

এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানালেও অ্যাপটির সঙ্গে জড়িতদের সম্পর্কে তথ্য প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়েছে পুলিশ। ভুয়া পরিচয়ে অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।