সেনা অভ্যুত্থানের পর রাজধানী নেপিদোতে নিজ বাড়িতে গৃহবন্দি মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির ৭৬তম জন্মদিনে চুলে ফুল গুঁজে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তার সমর্থকরা। শনিবার (১৯ জুন) মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদো, প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনসহ কয়েকটি শহরে হয়েছে এমন মিছিল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, মিয়ানমারে জান্তা শাসনের বিরুদ্ধে দশকের পর দশক ধরে চুলে ফুল পরে প্রতীকী প্রতিবাদ করেছিলেন এনএলডি নেত্রী সু চি। নেত্রীর এই প্রতীকী প্রতিবাদকে স্মরণে রেখে তার জন্মদিনে সমর্থকরা শনিবার শনিবার মাথায় ফুল পরে বিক্ষোভে অংশ নেন।

সম্পর্কিত খবরসু চির বিচার শুরু, জাতিসংঘের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান জান্তারসু চির ১৪ বছরের জেল হতে পারে সেনা অভ্যুত্থানের পর প্রথমবারের মতো আদালতে সু চিবিক্ষোভে অংশ নেওয়া থেট সউই উইন নামে এক ব্যক্তি জানান, জান্তা সরকারের পর সু চির দল ক্ষমতায় গেলে তার শাসনামলে মানবাধিকার সংক্রান্ত নানা বিষয়ে তিনি সোচ্চার ছিলেন। তবে এখন তিনি অং সান সু চিসহ সব মানুষের স্বাধীনতা দাবি করছেন। একজন মানুষ হিসেবে সু চির অধিকার এবং রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে মনে করেন উইন।

এদিকে, ক্ষমতায় থাকাকালে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য পাচার, ঘুষ গ্রহণ, অবৈধ ওয়াকিটকি রাখাসহ মোট ৫ অভিযোগে গত ১৪ জুন থেকে সু চির বিচার শুরু হয়েছে নেইপিদোর একটি আদালতে। দেশটির আইন ও বিচারবিভাগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জান্তার উত্থাপিত অভিযোগুলোর মধ্যে অন্তত ২ টি অভিযোগ বেশ স্পর্ষকাতর। এগুলো সত্য বলে প্রমাণিত হলে বাকি জীবন কারাগারেই কাটাতে হবে সু চিকে। গত সোমবার এ বিষয়ে প্রথমবারের মতো শুনানি হয়েছে আদালতে। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী সোমবার।

গত বছরের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে চলতি বছরের গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক জান্তা। বন্দি করা হয় সু চিসহ তার সরকারের একাধিক মন্ত্রী এবং সু চির দলের নেতাকর্মীদের। এই ঘটনার পর থেকে মিয়ানমারে প্রতিদিনই গণবিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভের কারণে দেশটিরত কার্যত অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন শহরে প্রায় প্রতিদিনই পুলিশের গুলি প্রাণ যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত অন্তত ৮৭০ জন বিক্ষোভকারী পুলিশ ও সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন।