English Version
আপডেট : ২৬ জুন, ২০১৬ ০৪:৩৩

ইইউ থেকে ব্রিটেনের বের হওয়ায় বাংলাদেশের লাভ-ক্ষতি

অনলাইন ডেস্ক
ইইউ থেকে ব্রিটেনের বের হওয়ায় বাংলাদেশের লাভ-ক্ষতি

ঐতিহাসিক গণভোটের মধ্য দিয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বের হয়ে গেলো ব্রিটেন। ইইউ থেকে ব্রিটেনের এই এক্সিটে; যেটি ব্রেক্সিট নামে পরিচিতি পাচ্ছে, বাংলাদেশের কোনো লাভ-ক্ষতি আছে কি না, এই নিয়ে গত দুইদিন ধরে বেশ আলোচনা চলছে।

আসলে ব্রেক্সিটের কারণে বাংলাদেশের লাভ-ক্ষতি কতোটুকু তা বেশ আলোচনা সাপেক্ষ। আপাত দৃষ্টিতে ব্রেক্সিটে বাংলাদেশের লাভ-ক্ষতি প্রায় সমান সমান। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে খুব বেশি একটা প্রভাব হয়তো পড়বে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারপরও সরকারিভাবে বাংলাদেশের অবস্থান রিমেইনের পক্ষেই ছিলো। ব্রিটেনে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেনো বেশি সংখ্যায় ভোটে অংশগ্রহণ করেন এবং ইইউতে থাকার পক্ষে রায় দেন সেজন্য তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে বাংলাদেশের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী পর্যন্ত লন্ডনে গিয়েছিলেন।

ব্রেক্সিটে বাংলাদেশের কতোটুকু লাভ? সাধারণত ব্রিটেনের রেস্তোরাঁ ব্যবসার একটি বড় অংশ বাংলাদেশিদের দখলে। এসব রেস্তোরাঁর মালিকরা কর্মচারী হিসেবে বাংলাদেশিদেরকেই বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু ব্রিটেনের বর্তমান সরকারের কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে এসব রেঁস্তোরায় জনবলসংকট চলছে।

ব্রিটেনের রাজনীতিকদের দেয়া সমাধান অনুযায়ী ইইউর সদস্য দেশ রোমানিয়া অন্যদের তুলনায় একটু গরিব বলে রোমানীয়দের দিয়েই জনবলসংকট কাটিয়ে ওঠার পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু গত কয়েক বছরে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ব্রিটেনে বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিনটি রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এটা হয়েছে জনবলসংকট এবং বিদেশিদের দিয়ে কাজ চালিয়ে নেয়ার ব্যর্থতার কারণে।

এখন অনেকে ধারণা করছেন, ব্রেক্সিটের কারণে ইউরোপের সাথে ব্রিটেনের সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়ায় দক্ষিণ এশীয় অর্থাৎ ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশীদের জন্য ব্রিটেনের পথ সুগম হবে। তবে কার্যত এমনটা হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। একে তো বর্তমান ব্রিটেন সরকারের কঠোর অভিবাসন নীতি এবং ব্রিটেনের বিভিন্ন খাতে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের আধিপত্য বাংলাদেশীদের কপাল খুলবে কি না তা একটি বিরাট প্রশ্ন।

ব্রেক্সিটের ফলে আগামী কয়েক বছর ব্রিটেনের ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগে কার্যত কিছুটা অস্থিরতা বিরাজ করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতি ও আইনে চলমান ব্যবসা-বাণিজ্যের রীতিনীতি আবার নতুন করে ঠিক করতে হবে। এই অস্থিরতা এবং ব্যবসার মন্দার ভাব যে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ওপর পড়বে না, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। আর বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মন্দায় পড়লে ব্রিটেন থেকে দেশে আসা রেমিট্যান্সে কী রকম প্রভাব পড়বে তা চিন্তা করে এখনই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের।