English Version
আপডেট : ২২ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৩:৩৬

জঙ্গীদের হাতে মৃত্যুর আগে পৃথিবীকে কী বলতে চেয়েছিলেন লীলা আলাউই?

অনলাইন ডেস্ক
জঙ্গীদের হাতে মৃত্যুর আগে পৃথিবীকে কী বলতে চেয়েছিলেন লীলা আলাউই?

 

ইসলামী জঙ্গীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হলেন আরও একজন তরুণ শিল্পী। তিনি ফরাসী বংশোদ্ভূত মরক্কোর ফটোগ্রাফার এবং মানবাধিকারকর্মী লীলা আলাউই। এ্যামিন্যাস্টি ইন্টারন্যাশনালের মানবাধিকার বিষয়ক একটি প্রজেক্টে তিনি আফ্রিকা সফর করছিলেন।

আফ্রিকান দেশ বুর্কিনা ফ্যাসোর রাজধানী ওয়াগাডুগুর ক্যাপুচিনো ক্যাফেতে ইসলামী জঙ্গী সংগঠন আল-কায়েদার হামলায় নিহত ১৮ দেশের ২৮ জন নাগরিকের মাঝে তিনি একজন। লীলার মৃত্যু গোটা বিশ্বকে হতবাক, বিস্মিত ও বিমূঢ় করে দিয়েছে। লীলা আলাউই এর শেষকৃত্যে কমপক্ষে একহাজার নারী উপস্থিত হয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন পৃথিবীব্যাপী চলমান জঙ্গী সহিংসতার বিরুদ্ধে লীলা তার ক্যামেরাটি নিয়ে লড়াই করতেন। তুলে আনতেন এমন সব ছবি যা মানুষের হৃদয়কে নাড়িয়ে দেয়।

লীলা আলাউই ফ্রান্সে জন্মগ্রহন করেন। তারপর পরিবারের সাথে মরক্কো পাড়ি জমান। সেখানেই তার বেড়ে উঠা। তারপর নিউইয়র্কে তার ফটোগ্রাফিতে হাতখড়ি। তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, লীলা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বিভিন্ন দেশে যেতেন এবং সেখানকার মানুষদের ধর্মীয় হানাহানি, লিঙ্গবিভেদ এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে উদ্বুগ্ধ করতেন। ৩৩ বছর বয়সী লীলার জীবনপ্রদীপ নিভে গেল সেই ধর্মীয় উগ্রবাদীদের হাতেই। আল কায়েদার হাতে নিহত হবার সময় তিনি আফ্রিকায় এ্যমিন্যাস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টে কাজ করছিলেন। গোটা বিশ্বের মত আফ্রিকায় তার কর্মস্থলের মানুষও শোকাহত হয়েছেন তাদের এই তরুণ বন্ধুর অকালপ্রায়াণে।

জঙ্গীরা তার দেহে দুটি গুলি করে। একটি গুলি তার পায়ে এবং অন্যটি তার বুকে লাগে। বুকে গুলি লাগার কারনেই লীলার মৃত্যু ত্বরান্বিত হয়। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সার্জারির মাধ্যমে গুলি বের করা হয়। কিন্তু গুলি তার হার্টে আঘাত করায় একসময় তিনি হার্টএ্যাটাকে মারা যান। জানা যায়, সার্জারির পর তিনি কিছু কথা বলেছিলেন তার পরিবারকে। তিনি মানবতার স্বার্থে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন তার ক্যামেরা নিয়ে। এবং জঙ্গি হামলার শিকার হওয়াকে তিনি অবশ্যম্ভাবী বলেই ধরে নিয়েছিলেন। তবে শত চেষ্ঠার পরও তাকে আর বাঁচানো যায়নি। এই বিশ্ব একদিন সন্ত্রাসমুক্ত হবে, ধর্মীয় হানাহানি বন্ধ হবে এটাই ছিল লীলার স্বপ্ন।