জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সিঙ্গাপুরে গ্রেপ্তার হওয়া ২৭ বাংলাদেশি যেকোনো সময় সিঙ্গাপুরে হামলা করতে পারতেন বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে শানমুগাম।  বুধবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের এক পোস্টে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। গত মঙ্গলবার এক ভাষণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এ মুহূর্তে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সন্ত্রাসবাদের উর্বর ভূমিতে পরিণত হয়েছে।

বুধবারের ঐ ফেসবুক পোস্টে মন্ত্রী বলেন, তারা স্থানীয় একটি মসজিদে নিয়মিতভাবে বৈঠক করত। তাদের কাছে জিহাদি প্রচারণার ভিডিওচিত্র ছিল। এ ছাড়া নীরবে হত্যাকাণ্ডের পদ্ধতি সম্পর্কিত বেশ কিছু ছবি ও তথ্য ছিল তাদের কাছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যথাসময়ে এই ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে। আমি গতকালই বলেছিলাম যে, এ অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদের হুমকি রয়েছে। সে কথা বাস্তবে প্রমাণিত হলো।

বাংলাদেশের ডেইলি স্টার ও নিউ এজ পত্রিকার বরাত দিয়ে চ্যানেল নিউজ এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়,  সিঙ্গাপুরের মুস্তাফা সেন্টারের কাছের আঙ্গুলিয়া মসজিদে বৈঠক করতেন গ্রেফতার হওয়া ২৭ বাংলাদেশি জঙ্গী।

গ্রেপ্তার হওয়া ২৭ বাংলাদেশিকে সিঙ্গাপুরের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি শিন লুং। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, আমরা আমাদের দেশের নিরাপত্তা জোরদার করছি। সেইসঙ্গে আমাদের জাতিগত ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে সিঙ্গাপুরে ঘাঁটি গাড়তে দেওয়া হবে না।

সিঙ্গাপুরের মুসলমানবিষয়কমন্ত্রী ইয়াকুব ইব্রাহিমও ফেসবুকে এই বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, আমাদের চারপাশে আদর্শবিরোধী কোনো সন্দেহজনক কার্যক্রম দেখলে সে বিষয়ে আরো সতর্ক হতে হবে।

সিঙ্গাপুরের উন্নয়নের সঙ্গে বিদেশি শ্রমিকরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত জানিয়ে দেশটির শ্রমিক নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রধান চ্যান চুন সিং বলেন, এ ধরনের মৌলবাদী মনোভাব যেন প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে জন্ম নিতে না পারে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। 

 জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে সিঙ্গাপুরে ২৭ বাংলাদেশিকে আটক করা হযেছে। গত বছরের বিভিন্ন সময় তাঁদের আটক করা হয়। এর মধ্যে ২৬ জনকে বাংলাদেশে ফেরতও পাঠানো হয়েছে। গতকাল বুধবার সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য প্রকাশ করে।ওই বাংলাদেশিরা নগর রাষ্ট্রটির নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। গত ১৬ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁদের আটক করা হয়। জঙ্গীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া নথিপত্র দেখে সিঙ্গাপুরের পুলিশ জানতে পারে যে বাংলাদেশ এমনকি সিঙ্গাপুরেও তাদের হামলার পরিকল্পনা ছিল। বাংলাদেশে অবস্থানরত জঙ্গীদের তারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছিল।