English Version
আপডেট : ৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১১:৫৪

ভারতে পরমাণু হামলার টার্গেট ছিল পাকিস্তানের?

অনলাইন ডেস্ক
ভারতে পরমাণু হামলার টার্গেট ছিল পাকিস্তানের?

পরমাণু হামলার লক্ষ্য হয়েছিল ভারত! পাকিস্তান তাদের পরমাণু অস্ত্র নিয়ে ভারতে আঘাত হানার প্রস্তুতি নিয়েও ফেলেছিল।   

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার  প্রকাশিত প্রবন্ধে এমনই এক চাঞ্চল্য তথ্য উঠে এসেছে।

হোয়াইট হা‌উজের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের তৎকালীন সদস্য তথা সিআইএ অ্যানালিস্ট ব্রুস রিডেল লিখেছেন,১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধে হার নিশ্চিত জেনে পরমাণু হামলার চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান।

১৯৯৯ সালে কার্গিলের উঁচু পাহাড়ে গোপনে ঘাঁটি গেড়ে কাশ্মীর উপত্যকায় পাকিস্তান বিধ্বংসী আঘাত হানা শুরু করে। অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকার তখন আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের মুখাপেক্ষী হয়নি। পাল্টা আঘাত হানার সিদ্ধান্ত নেয়। পাহাড়ের আড়াল থেকে হামলা চালাতে থাকা পাক সেনার মোকাবিলা করতে গিয়ে শুরুতে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, ভারতীয় সেনা অচিরেই গুঁড়িয়ে দেয় পাকিস্তানের বাঙ্কারগুলি।

ধীরে ধীরে পিছু হঠতে থাকে পাক সেনাবাহিনী। কার্গিল, দ্রাস, বাটালিক যখন দখলমুক্ত, তখন পাকিস্তান আশঙ্কা করেছিল,ভারতীয় বাহিনী এ বার ঢুকে পড়বে পাকিস্তানের ভিতরে। সেখান থেকেই  পরিবর্তন হয় পাকিস্তান সরকারের সিদ্ধান্তে।

নওয়াজ শরিফ তখন ছুটে গিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের কাছে যেন ভারতকে যুদ্ধ থামানোর চাপ দেয় আমেরিকা।

কিন্তু,ততক্ষণে সিআইএ-র চূড়ান্ত গোপনীয় নোট পৌঁছে গিয়েছে ক্লিন্টনের ওভাল অফিসে।তাতে লেখা ছিল,পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র নিয়ে ভারতে আঘাত হানার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর ফল মারাত্মক হতে পারে। তৎকালীন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্যান্ডি বার্গার ক্লিন্টনকে পাকিস্তানের পক্ষে না দাঁড়ানোর পরামর্শ দেন।

ক্লিন্টন ভারত-পাক সমঝোতার পক্ষে থাকলেও, বার্গার বলেছিলেন, পাকিস্তান এই যুদ্ধ শুরু করেছে। সুতরাং  কোনও শর্ত ছাড়া আগে পাকিস্তানকে মাথা নোয়াতে হবে। সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। তার আগে যুদ্ধবিরতির জন্য ভারতকে চাপ দেবে না আমেরিকা।বার্গারের পরামর্শ মেনে ক্লিন্টন নওয়াজ শরিফকে সেই বার্তাই পৌঁছে দেয়।

রিডেলের দাবি শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরে পরমাণু হামলার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠে সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিতে বাধ্য হন নওয়াজ।

স্যান্ডি বার্গার দিনকয়েক আগে প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর স্মৃতিতে লেখা এক নিবন্ধে, ব্রুস রিডেল সেই অশান্ত সময়ের বর্ণনা দিয়েছে।

ক্লিন্টন-শরিফ বৈঠকে রিডেল উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকের আগে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে প্রেসিডেন্টের পরামর্শের প্রক্রিয়ারও অন্যতম অংশীদার সিআইএ-র এই প্রাক্তন কর্তা।

রিডেলের বক্তব্যের সার কথা হল, বার্গারের ঘোর পাকিস্তান বিরোধী অবস্থানের জেরেই ক্লিন্টন শরিফকে চাপে ফেলার পথে হেঁটেছিলেন। তার জেরেই যুদ্ধ থেকে এক তরফা পিছু হঠে পাকিস্তান। ভারত ভয়ঙ্কর পরমাণু হামলার হাত থেকে রক্ষা পায়।

বিডিটাইমস৩৬৫ডটকম/আরআর/