গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি মিলবে যেভাবে!

গ্রাস্ট্রিক এমন একটি সমস্যা যে এমন কোন মানুষ খুজে পাওয়া খুব কঠিন হবে যার গ্যাস্টিক। কম কিংবা বেশি সবাইকেই এই সমস্যায় পড়তে হয়। খাবারে সামান্য একটু অনিয়ম হলেই শুরু হয়ে যায় গ্যাস্ট্রিকের মারাত্মক ব্যথা। অনেক সময় অতিরিক্ত অনিয়মে এই সাধারণ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাই সৃষ্টি করে আলসার। বেশ কিছু নিয়ম মেনে চললে গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। যেমন:
১. সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে হাফ লিটার পানি পান করুন, বা ইসভগুলের সরবত (এসভ্গুল + পানি+ চিনি/মিশরী) খেলে পেট ভালো থাকে.... প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন।
২. তৈলাক্ত ও বেশি মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করুন।
৩. কাঁচা পেপের তরকারী পেট ভালো রাখতে সাহায্য করে, সেটা খেয়ে দেখতে পারেন।
৪. বেল বা পাকা পেপের শরবত গ্যাস্ট্রিক এর প্রবলেম দূর করতে সাহায্য করে।
৪. বাসী খাবার খেলেও গ্যাস্ট্রিক হতে পারে, তাই বাসী খাবার খাবেন না।
৫. বেশি রাত জেগে থাকবেন না এইগুলো মেনে চললে নিজেকে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে দুরে রাখতে পারবেন আশা করি।
উপরের উপায়গুলো যদি কাজে না আসে তবে আপনার ওষুধ খাওয়া লাগতে পারে এক্ষেত্রে ডাক্তার এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
প্রাকৃতিক কিছু উপায়েও পেতে পারেন গ্যাস্টিক নামক এই যন্ত্রনার হাত থেকে মুক্তি। জেনে রাখুন গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তির কিছু ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি....
১. দারুচিনি দারুচিনি হজমশক্তির জন্য অনেক ভাল একটি মশলা। এটি প্রাকৃতিক এনটাসিড হিসাবে কাজ করে থাকে এবং পেটের গ্যাস দূর করতে সাহায্য করে। এক কাপ পানিতে আধা চাচামচ দারুদিনি গুঁড়া মেশান। কয়েক মিনিট সেটি সিদ্ধ করুন। এটি দিনে ২/৩ বার পান করতে পারেন। আপনি চাইলে স্যুপ বা সালাদের সাথেও দারুচিনির গুঁড়া মিশিয়ে খেতে পারেন।
২. বেকিং সোডা বেকিং সোডা পেটের অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে তাৎক্ষণিক রেহাই পেতে সাহায্য করে। ১ গ্লাস পানিতে ১/৪ চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে পান করুন। ভালো ফলাফল পাবেন।
৩. রসুন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য রসুন খুবই কার্যকরী উপাদান। রসুন, কালো মরিচ বীজ, ধনে বীজ এবং জিরা বীজ একসাথে মিশ্রিত করে কয়েক মিনিট উত্তাপে ফুটিয়ে সিদ্ধ করতে হবে , সিদ্ধ করার পর এই মিশ্রন থেকে যে নির্যাস বের হবে সেটা ছেঁকে আলাদা করতে হবে। তারপর সাধারণ তাপমাত্রায় এই নির্যাস ঠান্ডা করে দৈনিক দুই বার পান করতে হবে।
৪. প্রচুর পরিমাণে পানি পান প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। এটি শুধু আপনার গ্যাস্টিকের সমস্যা কমাবে না আরো অনেক রোগের হাত থেকে মুক্তি দেবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন।
৫. পুদিনা পাতা পুদিনা পাতা আপনার অম্লতা, গ্যাস ও বমি বমি ভাব থেকে সাথে সাথে মুক্তি দেবে। গ্যাস্টিকের ব্যথা যখন অল্প তখন থেকে অল্প কিছু পুদিনা পাতা মুখে নিয়ে ভাল করে চিবুতে থাকুন। দেখবেন কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার ব্যাথা অনেকটা কমে গেছে। এছাড়া এক কাপ পানিতে কয়েকটি পুদিনা পাতা দিয়ে সিদ্ধ করুন। এটি দিনে ২/৩ বার পান করতে পারেন। স্বাদ বাড়াতে এতে মধু যোগ করতে পারেন তবে দুধ দিবেন না।
৬. আলু আলু গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে থাকে। খাবার আগে তিন বেলা আলু থেকে রস বের করে খেতে হবে এবং এতে খুব দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায়।
৭. আদা পেটে গ্যাসের সমস্যা দূর করার জন্য একটি অনন্য এবং সহজ উপাদান হিসেবে ‘আদা’ অত্যন্ত কার্যকরী। এটি বদ হজমও দূর করে থাকে। প্রতিদিন খাবার পর এক টুকরা আদা চিবিয়ে খেলে পেটে আর গ্যাসের সম্যসা করবে না। এছাড়া আদা চা,আদা পানি পান ও গ্যাসের সমস্যা দূর করে থাকে।
৮. পেয়ারা পাতা ২ কাপ পানিতে পেয়ারা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে নিন। পানি ১ কাপ পরিমাণে হলে ছেঁকে পান করুন। এতেও বেশ ভালো উপকার হবে।
৯. লবঙ্গ লবঙ্গ অম্লতা উপশম এবং গ্যাস দূর করতে সাহায্য করে। কয়েকটি লবঙ্গ এবং দারুচিনি গুঁড়া করে মিশিয়ে নিন। এটি আপনি আপনার প্রতিদিনের খাবারের সাথে খেতে পারেন। লবঙ্গ গ্যাসের সমস্যা দূর করার সাথে সাথে আপনার নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধও দুর করে থাকে।
১০. হলুদের পাতা হলুদের পাতা কুচি করে কেটে প্রতিদিন দুধের সাথে মিশিয়ে পান করে নিন। এতে করে পেটে ব্যথা এবং গ্যাসের সমস্যার সমাধান হবে।
১১. ভেষজ চা পুদিনা পাতা,ক্যামোমিল,রাসবেরি এবং ব্ল্যাকবেরি একসাথে মিশিয়ে তৈরী ভেষজ চা হজম প্রক্রিয়া অনেক সাহায্য করে। আর হজম প্রক্রিয়া ঠিক থাকলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকাংশে কমে যায়।
১২. আপেল সাইডার ভিনেগার
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে তাৎক্ষণিক রেহাই পেতে এর জুড়ি নেই। ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ২ টেবিল চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করে ফেলুন।